বন্ধ হওয়ার পথে সিলেটের টাউনবাস


প্রকাশিত: ১১:০৬ এএম, ১৩ মার্চ ২০১৬

সিলেট নগরীর উপকণ্ঠের যাত্রীদের সেবা দেয়ার লক্ষে ২০০৭ সালে চালু করা হয় টাউনবাস সার্ভিস। শুরুতে নগরবাসী ও শহরতলির মানুষজনের মন জয় করলেও বর্তমানে টাউনবাস কাঙ্ক্ষিত সেবা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।

যাত্রীদের ব্যাপক চাহিদা থাকা সত্ত্বেও কর্তৃপক্ষ এই বাস সার্ভিসের মান বাড়ানোর দিকে নজর দিচ্ছেন না। উল্টো দিনের পর দিন টাউনবাস সার্ভিসের মান হ্রাসের পাশাপাশি সংখ্যাও কমছে। বিভিন্ন রুটে টাউনবাসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

কিন্তু এসব রুটে যাত্রীদের তুলনায় বাসের সংখ্যা কম। চারটি রুটে ইতোমধ্যে টাউনবাসের চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। সার্ভিস শুরুর সময় যত বাস ছিল, সেই সংখ্যা বর্তমানে প্রায় অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে। জাগো নিউজের সঙ্গে আলাপকালে যাত্রীরা টাউনবাস সার্ভিসের মান ও সংখ্যা আরোও বাড়ানোর দাবি জানিয়েছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আট বছর আগে ৩৫টি বাস নিয়ে যাত্রা শুরু করে সিলেট টাউনবাস সার্ভিস। পরবর্তী সময়ে টাউন বাসের সংখ্যা বৃদ্ধি করার কথা থাকলেও তা আর করা হয়নি তবে বাসের সংখ্যা কমেছে। ৩৫টি বাসের সংখ্যা এসে ঠেকেছে ১৪টিতে।

যাত্রার শুরুতে ছয়টি রুটে চলাচল করলেও বর্তমানে মাত্র দুইটি রুটে চলাচল করছে টাউনবাস সার্ভিস। তাছাড়া মহিলা ও প্রতিবন্ধীদের জন্যে আলাদা সিটের ব্যবস্থা থাকলেও তারা তা ব্যবহারের সুবিধা পাচ্ছেন না। বাসে বৈদ্যুতিক পাখার ব্যবস্থা থাকলেও তা অনেক আগেই নষ্ট হয়ে গেছে।

এর ফলে টাউনবাসে যাত্রীসেবার মান দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে। অন্যান্য লোকাল বাসের তুলনায় দিন দিন নিম্নমুখী হচ্ছে টাউনবাস সার্ভিসের মান। আর এসব কারণেই কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না যাত্রীরা। এতে যাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।

বর্তমানে মাত্র ১৪টি বাস রয়েছে। যা নগরীর কোর্ট পয়েন্ট থেকে হেতিমগঞ্জ ও হাজীগঞ্জে চলাচল করছে। অথচ যাত্রার শুরুতে টুকের বাজার, মোগলাবাজার, হেতিমগঞ্জ, হাজীগঞ্জ, দক্ষিণ সুরমা, বটেশ্বর এলাকায় একযোগে চালু হয়েছিল। টাউনবাস সার্ভিস দ্রুতই জনসাধারণের প্রিয় বাহনে পরিণত হয়ে ওঠে।

বর্তমানে বাসের স্বল্পতার কারণে কোর্ট পয়েন্টে বাসের জন্য দীর্ঘসময় অপেক্ষা করতে হয় যাত্রীদের। এতে নানা দুর্ভোগ ও হয়রানির শিকার হয়ে থাকেন মহিলা, শিশু ও বৃদ্ধ যাত্রীরা। টাউনবাস সার্ভিস চালু হওয়ায় সরকারি-বেসরকারি স্বল্প বেতনভোগী কর্মচারী, মধ্যবিত্ত, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, শ্রমজীবী ও নিম্ন আয়ের লোকজন মনে করে ছিলেন। কম ভাড়ায় তারা টাউন বাসে যাতায়াত করবেন। কিন্তু তাদের ধারণা পাল্টে গেছে। অন্যান্য যানবাহনের মতো টাউনবাসেও বেশি ভাড়া দিতে হচ্ছে।

টাউনবাস সেবার মান কমে যাওয়ার কারণ অতিরিক্ত সিএনজি অটোরিকশা, লেগুনা-টেম্পু থাকায় যাত্রীরা বাসের অপেক্ষায় বসে থাকেন না। তাই পর্যাপ্ত যাত্রী পায় না টাউনবাস সার্ভিস। এজন্য প্রায় প্রতিদিনই লোকসানের কবলে পড়তে হচ্ছে এ বাস সার্ভিসটির কর্তৃপক্ষের।

তবে টাউন সার্ভিস নিয়ে কোনো সু-খবর নেই। আগামীতে নতুন বাস নামানো হবে না বলে মালিক পক্ষ স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন। এ অবস্থায় জরাজীর্ণ যে কয়েকটি বাস চলাচল করছে, সেগুলো বন্ধ হয়ে গেলে নগরীতে টাউনবাস সার্ভিস পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যাবে।

সিলেট টাউনবাস মালিক কমিটির সভাপতি জিয়াউল কবির পলাশ বলেন, সেবার মান কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ পর্যাপ্ত পরিমাণ বাস নেই। মাত্র ১৪টি বাস রয়েছে। যা দিয়ে পুরো শহরে সার্ভিস দেয়া সম্ভব নয়। এছাড়া অর্থের অভাবে ও প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধার অভাবে আমাদের ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নতুন বাস নামাতে পারছি না।

এআরএ/পিআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।