কারাগারে এক বছর

খাদিজার মামলা নিয়ে যা বললেন আইনমন্ত্রী

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ১১:৪৮ পিএম, ২৯ আগস্ট ২০২৩
খাদিজাতুল কুবরা

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় এক বছর ধরে কারাবন্দি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) ছাত্রী খাদিজাতুল কুবরাকে কিছু আইনি পরামর্শ দিয়েছেন আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক।

মঙ্গলবার (২৯ আগস্ট) বিকেলে সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে খাদিজার দীর্ঘদিন জামিন না হওয়ার বিষয়টি সামনে আনেন সাংবাদিকরা।

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় খাদিজাতুল কুবরাকে ২০২২ সালের ২৭ আগস্ট গ্রেফতার করা হয়। তখন তিনি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। গত এক বছরে তার জামিন হয়নি। তার অপরাধ ছিল- একটি ফেসবুক ওয়েবিনার হোস্ট করা, যেখানে একজন অতিথি বক্তা বিতর্কিত মন্তব্য করেছিলেন।

আরও পড়ুন: কারাগারে সাড়ে ১১ মাস, অনিশ্চিত শিক্ষাজীবন খাদিজার

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল খাদিজার জামিন কিংবা মুক্তি দাবি করেছে। যদিও খাদিজার জামিন আবেদন স্ট্যান্ডওভার রেখেছে উচ্চ আদালত। সরকারপক্ষ চেম্বার আদালতে গিয়েছিল। অ্যামনেস্টির বক্তব্য নিয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে আইনমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, আপনারা যখনই কোনো মামলা নিয়ে আমাকে প্রশ্ন করেছেন, সেটি যদি চলছে এমন হয়, আমি সবসময় বলেছি, সাব-জুডিস (বিচারাধীন) মামলা সম্পর্কে আমি মন্তব্য করবো না। দুঃখের হলেও সত্য, অনেকেই বিচারাধীন মামলা সম্পর্কে বক্তব্য দেন এবং তাদের স্বার্থে বিচার বিভাগকেও কটাক্ষ করতে বাঁধে না।

খাদিজা একজন শিক্ষার্থী, সরকার পক্ষ কেন তার জামিনের বিরোধিতা করেছে। এ বিষয়ে আপনার কাছ থেকে কোনো মতামত নেওয়া হয়েছে কি না- এমন প্রশ্নে আনিসুল হক বলেন, না, আমার কাছ থেকে কোনো মতামত নেওয়া হয়নি। যেহেতু মামলাটি এখনো বিচারাধীন, তাই এ নিয়ে আমি কথা বলবো না। তবে খাদিজার চিকিৎসার ব্যবস্থা আমি করেছি। আর আজ আমি পরিষ্কার করে দিয়েছি, সরকারের অবস্থান থাকবে, যখন স্ট্যান্ডওভার থেকে জামিনের আবেদন আবার শুনানির জন্য যাবে, সেই ব্যাপারে। আমার মনে হয় না, আজ কোনো বক্তব্য দেওয়া উচিত হবে।

আরও পড়ুনইউটিউব, ফেসবুক লাইভে বক্তব্যের দায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিতে হবে 

এ বিষয়ে মন্ত্রী আরও বলেন, সর্বোচ্চ আদালত তার জামিন স্ট্যান্ডওভার করে রেখেছে। এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই। একজন আইনজীবী হিসেবে, আমি তাকে (খাদিজাকে) পরামর্শ দেব, সাইবার নিরাপত্তা আইনে যখন আমরা মানহানির সাজা কারাদণ্ড বাতিল করে দিয়েছি, সে কারণে মামলাটি যখন আপিল বিভাগে উঠবে, তখন তিনি যেন বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনে এ পরিবর্তন আনা হয়েছে, আপনারা সে বিবেচনায় ব্যবস্থা নিন।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা। পরিবারের দুই বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তিনি দ্বিতীয়। তার বাবা কুয়েত প্রবাসী। অনলাইনে সরকারবিরোধী বক্তব্য প্রচারসহ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্নের অভিযোগে ২০২০ সালের অক্টোবরে খাদিজা ও অবসরপ্রাপ্ত মেজর দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে পৃথক দুটি মামলা করে পুলিশ। একটি রাজধানীর কলাবাগান থানায়, অন্যটি নিউমার্কেট থানায়। ওই দুই মামলায় গত বছরের ২৮ আগস্ট খাদিজাকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

এরপর সাইবার ট্রাইব্যুনালে কয়েকবার জামিন চেয়েও না পাওয়ায় উচ্চ আদালতে আপিল করেন খাদিজার আইনজীবী। উচ্চ আদালত ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর দুই মামলায় আপিল আবেদন গ্রহণ করেন।

আরও পড়ুন: খাদিজার জামিন বিষয়ে শুনানি মুলতবি 

এরপর গত ১৬ ফেব্রুয়ারি আপিল মঞ্জুর করে খাদিজাকে জামিন দেন হাইকোর্ট। তবে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করলে হাইকোর্টের জামিন আদেশ স্থগিত হয়। আপিল বিভাগে খাদিজার জামিন বিষয়ে সবশেষ শুনানি হয় গত ১০ জুলাই। আপিল বিভাগ তার জামিন প্রশ্নে শুনানি আরও চার মাস মুলতবি রেখেছেন।

আরএমএম/এমকেআর

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।