হজের নামে প্রতারণা

মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি

জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: ০৯:০৩ এএম, ২১ মে ২০২৪

চলতি বছর হজে পাঠানোর নামে ৭৫ জন হজযাত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করেছেন মোহাম্মদ আলী নামের এক ব্যক্তি।

এ ব্যক্তির বিরুদ্ধে জরুরিভিত্তিতে ব্যবস্থা নিতে সোমবার (২০ মে) স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিবের কাছে চিঠি পাঠিয়েছে ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এর আগে হজযাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা করায় দিয়া ইন্টারন্যাশনাল নামের হজ এজেন্সির চেয়ারম্যান মো. কামরুল ইসলাম ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোহাম্মদ আলী বাবুর এবং আল রিসান ট্রাভেলস এজেন্সি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আব্দুস সালাম মিয়ার দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা ও তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নিতে জননিরাপত্তা বিভাগে চিঠি পাঠিয়েছে ধর্ম মন্ত্রণালয়।

সোমবার জননিরাপত্তা বিভাগে পাঠানো চিঠিতে ধর্ম মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, জনৈক মোহাম্মদ আলী (পিতা-আবুল হোসেন, গদাধর, মীরবাগ, কাউনিয়া, রংপুর, জাতীয় পরিচয়পত্র নং-৮৫১৪২৪০২৪৫৪৮৭, পাসপোর্ট নং-A13456857) হজযাত্রীদের কাছে নিজেকে হজ এজেন্সির ম্যানেজিং পার্টনার পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে আসছে। ২০২৪ সালের হজে তিনি দিয়া ইন্টারন্যাশনাল হজ এজেন্সির নাম ব্যবহার করে ইসলামী ব্যাংকের রংপুরের ধাপ শাখায় সাধারণ মানুষের বিশ্বাস অর্জনের জন্য দিয়া ইন্টারন্যাশনাল শিরোনামে একটি হিসাব খুলে সাধারণ হজযাত্রীদের হজের টাকা সংগ্রহ করেন। ওই ব্যক্তি এবারের হজে ৭৫ জন হজযাত্রীর প্রাক-নিবন্ধন করেন। পরবর্তী সময়ে প্রাক-নিবন্ধিত ব্যক্তিদের চট্টগ্রামের আল ইমাম হজ কাফেলা ট্রাভেলস অ্যান্ড ট্যুরসের কাছে চুক্তির মাধ্যমে হস্তান্তর করেন। চুক্তি অনুসারে হজযাত্রীদের কাছ থেকে সংগ্রহ করা অর্থ ওই এজেন্সির ব্যাংক হিসাবে দেওয়ার কথা থাকলেও মোহাম্মদ আলী আল ইমাম হজ কাফেলাকে ৫৪ লাখ ৪৪ হাজার ২০০ টাকা না দেওয়ায় হজযাত্রীদের জন্য মক্কা-মদিনায় বাড়িভাড়া, ভিসা ও বিমান টিকিট সংগ্রহ করতে পারেনি। ভিসা করার জন্য সৌদি সরকারের দেওয়া সময়সীমা পার হওয়ার পরও হজযাত্রীদের ভিসা সম্পন্ন না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট হজযাত্রী ও ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়কে অনিশ্চয়তা মধ্যে পড়তে হয়।

এতে বলা হয়, মোহাম্মদ আলী প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে খোলা ব্যাংক হিসাবে জমাকৃত অর্থ হজের কাজে ব্যবহার না করে তুলে নিয়েছেন। মোহাম্মদ আলী আল ইমাম হজ কাফেলায় স্থানান্তর করা ৭৫ জন হজযাত্রীর মধ্যে ২৫ জনের মক্কা-মদিনায় হোটেল ভাড়ার দায়িত্ব নিজে রাখার পরও তাদের হোটেল ভাড়া করেনি। একই সঙ্গে তিনি এস এম আতিকুর রহমান ও মো. মোনতাসির ইসলামকে প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে হজে নেওয়ার জন্য দিয়া ইন্টারন্যাশনাল শিরোনামের হিসাবে ৪ কিস্তিতে মোট ১৪ লাখ টাকা গ্রহণ করে; যা সম্পূর্ণ বেআইনি। টাকা গ্রহণ করলেও তিনি আতিকুর রহমান ও মোনতাসির ইসলামকে প্রতিস্থাপন করে হজে যাওয়ার ব্যবস্থা করেনি।

‘মোহাম্মদ আলী এলাকার নিরীহ হজযাত্রীদের কাছে নিজেকে হজ এজেন্সির ম্যানেজিং পার্টনার পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে থাকে। দিয়া ইন্টারন্যাশনাল নামে তার কোনো হজ এজেন্সি বা কোনো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান না থাকার পরও তিনি একটি হজ এজেন্সির নাম ব্যবহার করে ওই নামে ট্রেড লাইসেন্স দিয়ে ব্যাংক হিসাব খুলে হজযাত্রীদের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে থাকে। হজের আগে ব্যাংক হিসাবে জমা করা অর্থ উত্তোলনের বিধান না থাকলেও তিনি উল্লিখিত হিসাবে টাকা তুলে নিয়েছেন। ওই ব্যক্তির নিজের এজেন্সি না থাকায় আল ইমাম হজ কাফেলায় হজযাত্রীদের চূড়ান্ত নিবন্ধন করেও খরচের সম্পূর্ণ টাকা বুঝিয়ে দেননি। এভাবে উক্ত ব্যক্তি একের পর প্রতারণা করে চলছেন।’

এ অবস্থায় মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে জরুরিভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য এবং ভবিষ্যতে তিনি যাতে কোনো হজযাত্রী বা ওমরাহযাত্রীর সঙ্গে প্রতারণা করতে না পারেন সে বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানায় ধর্ম মন্ত্রণালয়।

আরএমএম/এমএইচআর/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।