বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই

সম্পাদকীয় ডেস্ক
সম্পাদকীয় ডেস্ক সম্পাদকীয় ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:১১ পিএম, ২৩ জুন ২০২১

প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান হেলাল

বাঙালি জীবনের সবচেয়ে বড় অর্জন মুক্তিযুদ্ধ। মুক্তিযুদ্ধকে ঘিরেই আমাদের পরিচয়, পরিধি, ঠিকানা—সবই। ফলে যিনি জাতি গঠন করেছেন, রাষ্ট্র গঠন করেছেন মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে; সেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে বাঙালি স্মরণ করবে এবং করতে হবে চিরকাল।

“আওয়ামী লীগ কী দিয়েছে?” এই প্রশ্ন আজকাল অনেককে করতে শুনি। বায়ু মণ্ডলে থেকে যেমন অক্সিজেন টের পাওয়া যায় না, তেমনি স্বাধীন স্বার্বভৌম দেশে স্বচ্ছলভাবে জীবন যাপন করলে “পরাধীনতা” বুঝতে বা অনুভব না করতে পারাই স্বাভাবিক।

আমার বাবা মরহুম আব্দুল মালেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর সাহচার্য পেয়েছেন। দেশের জন্য জীবন দিতে প্রস্তুত ছিলেন। আমরা তো বড়ই হয়েছি বঙ্গবন্ধুর আদর্শে, চিন্তায়, দর্শনে, বিশ্বাসে। বাবা আমাদের সেভাবে গড়ে তুলেছেন। বলেছেন যেন মানুষ হই আর মানুষের পাশে থাকি। সেই চেষ্টায় মাটি আর মানুষের পাশে আছি। আছি সরিষাবাড়ীর মানুষের পাশে, মানুষের সঙ্গে। বাবা যেমন করে থাকতে চেয়েছেন। কিন্তু কিছু মানুষ কেবল সুসময়ে থাকে। যিনি সত্যিকারের নেতা তিনি সব সময় থাকেন। তার বড় প্রমাণ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও শেখ হাসিনা। এদেশের মানুষের সুখে দুঃখে সকল কর্ম প্রেরণায় ছিলেন এবং আছেন।

বাংলাদেশের অন্যতম অর্জন, আমরা জাতির জনকের হত্যার বিচার করতে পেরেছি। অধিকাংশ খুনির শাস্তি কার্যকর করতে পেরেছি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে পেরেছি। এই অর্জন সম্ভব হয়েছে বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার জন্য। মনে রাখতে হবে যারা বঙ্গবন্ধু ও স্বাধীনতার সূর্য সন্তানদের হত্যা করেছে তারা ব্যক্তিকেই কেবল হত্যা করেনি, হত্যা করেছে জাতির দর্শন ও আদর্শকে।

বাংলাদেশ তবু মাথা নোয়ায়নি। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে শোককে শক্তিতে পরিণত করে এগিয়ে যাচ্ছে দুর্বার গতিতে। এই এগিয়ে যাওয়াকে রুখতেই হলি আর্টিজান, জঙ্গিবাদ, মৌলবাদ, খুন-হত্যা-গুম জ্বালাও- পোড়াও। কিন্তু লাভ হয়নি। লাভ হবেও না। কেননা সততা না থাকলে, মানুষের জন্য নিবেদিত না হলে সেই রাজনীতি বুমেরাং হয়ে ফিরে আসে। এ কথা অস্বীকার করবার কারও সুযোগ নেই। জিয়াউর রহমান, খালেদা, জিয়া, তারেক রহমান এদেশকে পিছিয়ে দিয়েছেন কয়েকশ’ বছর। পাকিস্তানের প্রেতাত্নাদের পুনর্বাসন করেছে। আর ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করেছেন নিজেদের সুবিধা আদায়ে। ভাবেননি মানুষের কথা, প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন কিন্তু পূরণ করেননি। প্রত্যাখ্যান করেছেন জনগণকে। বিনিময়ে জনগণও তাদের ফিরিয়ে দিয়েছে।

বাংলাদেশ আজ এগিয়ে যাওয়া দেশগুলোর অন্যতম। পতপত করে উড়ছে বিশ্বের বুকে বাংলাদেশের স্বাধীন পতাকা। গৌরবের এক উজ্জ্বলতম উদাহরণ হয়ে। যে মঙ্গা দারিদ্রের দেশ বলে পরিচিতি ছিল তা আজ নেই। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা এই গৌরবের সবটুকু দাবিদার। তাঁর মেধাবী পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয় দেশকে আজ ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে নিয়ে এসেছে। গড়ে তুলেছে ডিজিটাল বাংলাদেশ। আজ দেশ ব্যাপি যে অনলাইন মার্কেট, ই-কমার্স, আউট সোর্সিং তার অন্যতম অবদান সজীব ওয়াজেদ জয়েরই।

কাজ করতে গেলে সমালোচনা হয়, কাজ না করলে সমালোচনা তো দূরের কথা, আলোচনাও হয় না। অন্যায় অপরাধ সমাজে হচ্ছে না তা নয়, হচ্ছে। কিন্তু বিচারের আওতায় আনা হচ্ছে সে যে-ই হোক। দলীয় এমপি, মন্ত্রীরাও কেউ কেউ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়েছেন, শাস্তিও পেয়েছেন। এই স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার প্রশংসা করবেন না? বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সময় যত অনিয়ম দুর্নীতি হয়েছে তার কোনটির কী দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়েছে? এখানেই তো পার্থক্য আওয়ামী লীগ আর বিএনপির।

যে চক্রটি বাংলাদেশের বিরোধিতা করেছিল মুক্তিযুদ্ধে, তারা আর তাদের উত্তরসূরীরাই আজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মিথ্যা, ভুল, বানোয়াট, কিচ্ছা কাহিনি ছড়াতে সরব । সরব তারা বিভিন্ন ছদ্মবেশে। কখনো ধর্মের কথা বলে, কখনো মানবাধিকারের কথা বলে, কখনো গণতন্ত্রের কথা বলে তারা তাদের স্বার্থ হাসিলের রাজনীতি করে যাচ্ছে। এরা সরকার বিরোধই নয়, বাংলাদেশ বিরোধী। শুধু তাই নয়, এদের ফান্ড করা হচ্ছে দেশ-বিদেশ থেকে ব্যক্তি ও প্রাতিষ্ঠানিকভাবে।

আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এই দিনে, আসুন “তথাকথিত সুশীল” না হয়ে মানুষের পাশে থাকি, এয়ারটাইট রুম আর এসি গাড়িতে নিজেকে আটকে না রেখে, সমালোচনায় মুখর না হয়ে, আসুন কৃষকের মাঠে যাই, উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত হই। ইতিবাচকভাবে তুলে ধরি বাংলাদেশের অর্জন।

মনে রাখতে হবে, মুক্তিযুদ্ধ, স্বাধীনতা, গণতন্ত্রের প্রশ্নে বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের বিকল্প নেই।

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।