শেখ হাসিনাতেই আস্থা


প্রকাশিত: ০৬:৪০ এএম, ০৮ এপ্রিল ২০১৭

শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন উন্নয়নের মহাসড়কে। বাংলাদেশের প্রতিটি এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। যোগাযোগ, শিক্ষা, বিদ্যুৎসহ যাবতীয় সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন হচ্ছে। জীবনযাত্রার মান উন্নত হয়েছে। মাথাপিছু আয় বেড়েছে। এসব কিছু সম্ভব হয়েছে  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ় নেতৃত্বের কারণে। তাই বিশ্বে শেখ হাসিনা এখন উন্নয়নের রোল মডেল।

সম্প্রতি তাঁর ভারত সফর নিয়ে শুরু হয়েছে নানান আলোচনা এবং গুঞ্জন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করছেন। তাঁর এই সফরে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা চুক্তি ও সমঝোতা সাক্ষর হতে পারে। এ চুক্তি এবং সমঝোতাকে সামনে রেখে দেশ এবং স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি হিসেবে পরিচিত বিএনপি জামায়াত জোট হঠাৎ করেই ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে বিভ্রান্তিকর কথা বলা শুরু করে দিয়েছে। বিএনপি জামায়াত হচ্ছে একাত্তরের পরাজিত পক্ষের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিক্রিয়াশীল জোট । এরা কখনো বাংলাদেশের অগ্রগতি চায়নি।

বিএনপি-জামায়াত জোট দাবি করছে এই চুক্তি নাকি বাংলাদেশের স্বাধীনতা এবং স্বার্বভৌমত্বের জন্যে হুমকি স্বরূপ। কিন্তু এই মাথা মোটার দল এটা চিন্তা করে না যে, যে ভারত আমাদের স্বাধীনতা এনে দেওয়ার জন্যে সব ধরনের সহযোগিতা করলো, কোটি কোটি মানুষকে আশ্রয় দিল, অস্ত্র দিল, প্রশিক্ষণ দিল, সেই ভারত কিভাবে আমাদের স্বাধীনতার জন্যে হুমকি হয়? বিএনপি-জামায়াত পক্ষ দাবি করছে এবার নাকি কোনো গোপন চুক্তি সম্পন্ন করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ভারত যাচ্ছেন!

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জনগণের দল, স্বাধীনতা যুদ্ধে নেতৃত্ব দানকারী দল। এ দল কোন গোপন চুক্তি করে না। গোপন চুক্তি তো করেছিল বিএনপি জামায়াত জোট। ২০০২ সালে চীনের সাথে যে সামরিক চুক্তি করা হয়েছিল যে চুক্তির আওতায় ক্ষুদ্র ও মাঝারি অস্ত্র থেকে শুরু করে ট্যাংক, যুদ্ধ বিমানসহ যাবতীয় যুদ্ধাস্ত্র আমদানী করা হয়েছিল। সে চুক্তিতে কি ছিল কেউ জানে? সুশীলরা কখনো জানতে চেয়েছিল সেই চুক্তি কীসের ভিত্তিতে হয়েছিল? 

প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট ভাবে জানিয়ে দিয়েছেন, কোনো গোপন চুক্তি হবে না। আর যে সব চুক্তি হবে সে গুলো দেশের মানুষ জানবে। বাংলাদেশের ইতিহাসে এই প্রথম কোনো রাষ্ট্রপ্রধানকে ভারতের রাষ্ট্রপতি ভবনে বিশেষ সম্মানের সাথে অতিথি করেছেন। পৃথিবীর অন্য কোন রাষ্ট্রপ্রধান এত বড় সম্মান পেয়েছেন কি না জানি না। অথচ, বিএনপি জামায়াত চক্র যারা বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ককে কখনো ভালভাবে নেয়নি, তারা বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যকার কোনো চুক্তিকে কখনই সাধুবাদ জানায়নি। বরং উল্টো জনমনে চুক্তিগুলো সম্পর্কে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। বিরোধিতা করেছে, যেমন পার্বত্য শান্তি চুক্তির সময় আমরা দেখেছি, গঙ্গার পানি চুক্তি কিংবা মুজিব ইন্দিরা চুক্তির সময়ও আমরা একই জিনিস দেখেছি। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো আওয়ামী লীগের করা এসব চুক্তির বিরোধিতা করলেও বিএনপি জোট ক্ষমতায় এসে কোন চুক্তিকেই বাতিল করেনি! এমনকি বহুল প্রত্যাশিত তিস্তার চুক্তি যদি বাস্তবায়ন হয়ে যায় সেটি নিয়েও এই স্বাধীনতা বিরোধী জোট অপপ্রচার চালাবে। কারণ, এরা বরাবরের মতই রাজনৈতিক ভাবে দৈন্য, আদর্শহীন এবং ক্ষমতালোভী।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে দিন রাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। যার ফলশ্রুতিতে সমুদ্র বিজয়ের মত একটু সুবিশাল অর্জন যোগ হয়েছে উন্নয়নের এই বিশাল জোয়ারে। বাংলাদেশ তার স্বার্থ রক্ষায় একচুলও ছাড় দিবে না তার অনন্য উদাহরণ সমুদ্র বিজয়। শেখ হাসিনার নিজস্ব তত্ত্বাবধানে এবং কূটনীতিক দূরদর্শিতায় বাংলাদেশের সীমানায় যুক্ত হল সাড়ে ঊনিশ হাজার বর্গ কিলোমিটার। নেদারল্যান্ডের হেগে ভারতের সাথে সমুদ্র সীমা মামলার রায়ে ২৫.৬০২ বর্গ কিলোমিটার এলাকার মধ্যে ১৯.৪৬৭ বর্গ কিলোমিটার পেলো বাংলাদেশ। ফলে বাংলাদেশের মোট সমুদ্রসীমা দাঁড়িয়েছে এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটার।

রায়ের ফলে বাংলাদেশ এই এক লাখ ১৮ হাজার ৮১৩ বর্গকিলোমিটারের বেশি টেরিটোরিয়াল সমুদ্র, ২০০ নটিক্যাল মাইল একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং চট্টগ্রাম উপকূল থেকে ৩৫৪ নটিক্যাল মাইল পর্যন্ত মহীসোপানের তলদেশে অবস্থিত সব ধরনের প্রাণিজ ও অপ্রাণিজ সম্পদের ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে। ছিটমহলের মত আরো নানাবিদ সমস্যার ত্বরিৎ সমাধান দিলেন জননেত্রী। দেশের স্বাধীনতা এবং স্বার্বভৌমত্বের কথা চিন্তা করে দেশের নৌবাহিনীতে প্রথমবারের মত যোগ করলেন সাবমেরিন জাহাজ। বিশ্বব্যাংকের ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে নিজস্ব অর্থায়নে গড়ে তুলছেন স্বপ্নের পদ্মাসেতু। তরুণ সমাজের জন্যে তৈরি করছেন নতুন নতুন কর্মক্ষেত্র। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে প্রতিটি এলাকায় তৈরি করে দিয়েছেন কমিউনিটি ক্লিনিক। প্রতিবছর বিনামূল্যে বই বিতরণের মাধ্যমে গড়েছেন অনন্য এক রেকর্ড।

শেখ হাসিনা বাঙালি জাতির কান্ডারী হিসেবে বিবেচিত হয়েছেন তার মেধা, সাহস ও সততার কারণে, বর্তমান বাংলাদেশের অস্তিত্বের প্রতীক বলা হয় তাকে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে শেখ হাসিনা তার সততা, আত্মত্যাগ, দূরদর্শিতা ও দেশপ্রেমের উজ্জ্বল স্বাক্ষর রেখেছেন–এটাই হচ্ছে তার সবচেয়ে বড় কৃতিত্ব।

লেখক : ডাইরেক্টর, রেডিও ঢোল, এফএম ৯৪.০ ফাউন্ডার, দ্যা লাভলি ফাউন্ডেশন।
[email protected]

এইচআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।