পোল্ট্রি খাতে সহজ শর্তে ঋণ দিন


প্রকাশিত: ০৩:৪৯ এএম, ১৯ মে ২০১৫

১ জুন থেকে শুরু হচ্ছে বাজেট অধিবেশন। এই অধিবেশনেই পাশ হবে ২০১৫-২০১৬ এর জাতীয় বাজেট। কেমন হবে সেই বাজেট? কেমন বরাদ্দ থাকবে কৃষিখাতে? কেমন প্রত্যাশা দেশের প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের? এনিয়ে ‘কৃষি বাজেট, কৃষকের বাজেট’ প্রস্তাবনায় উঠে এসেছে কৃষকদের প্রস্তাব, দাবি ও চাহিদার কথা। এসব নিয়েই জাগো নিউজে লিখেছেন গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব শাইখ সিরাজ। সাত পর্বের ধারাবাহিক লেখায় আজ থাকছে ষষ্ঠ পর্ব।

(পূর্ব প্রকাশের পর)

প্রাণিসম্পদ খাত : পোল্ট্রি

১. পোল্ট্রি খাতের জন্য কর অবকাশ সুবিধা চলতি ২০১৪-১৫ অর্থবছরে শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু নানা কারণেই খামারিরা তাদের সংকট থেকে বের হয়ে আসতে পারেনি। এমনকি একদিনের বাচ্চাসহ সকল উপকরণের অনিয়ন্ত্রিত মূল্যবৃদ্ধি ও বহুজাতিক কোম্পানির সঙ্গে প্রতিযোগিতার ভেতর টিকে থাকা কঠিন হয়ে পড়েছে। বহু খামারি ক্ষতির শিকার হতে হতে এখন নিঃস্বও হয়ে গেছে। এই শিল্প রক্ষার তাগিদেই খামারিদের দাবি কর অবকাশ সুবিধা আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্ত বাড়ানো হোক।

২. পোল্ট্রির এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জা পরীক্ষার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট উপকরণ এবং এভিয়ান ইনফ্লুয়েঞ্জার ভ্যাকসিন আমদানিতে বিশেষ সুবিধা প্রদানের দিকে দৃষ্টি দেবার অনুরোধ করছি।

৩. বিশেষ কমিশন গঠন করে পোল্ট্রি শিল্প বাঁচানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

৪. কয়েকটি বহুজাতিক কোম্পানি ওষুধ ও খাদ্য বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে এদেশে প্রবেশ করলেও বর্তমানে তারা বৃহৎ পোল্ট্রি খামার গড়ে তুলেছে। তারা ডিম ও মাংসের বাজারের ৩০ ভাগ তাদের দখলে নিয়ে নিয়েছে। প্রাণী সম্পদ মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন ছাড়াই শুধু বিনিয়োগ বোর্ডের অনুমোদন নিয়েই তারা অবৈধভাবে এই বাণিজ্যের জাল বিস্তার করে এদেশের ক্রমবিকাশমান শিল্পকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। এ অবস্থা থেকে পোল্ট্রি শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের কঠোর হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

৫. অভ্যন্তরীণভাবে এক দিনের বাচ্চার উৎপাদন বৃদ্ধি করতে হবে। একদিনের বাচ্চার দাম কমাতে হবে।

৬. পোল্ট্রি খাতের জন্য কৃষি খাতের মতোই উপকরণ সহায়তা কার্ড প্রদান করতে হবে।
 
৭. পোল্ট্রি শিল্পে কৃষি উপকরণগুলোর ন্যায় খাদ্য, একদিনের বাচ্চা ও ওষুধে বিশেষ ভর্তুকি দিতে হবে।

৮. পোল্ট্রি খাতের জন্য সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা চালু করতে হবে। ঝুঁকিপূর্ণ খাত বিবেচনা করে পোল্ট্রি খাতে ঋণ দেয়া হয় না। এই অবস্থাকে খামারিরা বৈষম্য হিসেবে মনে করে। এক্ষেত্রে পোল্ট্রি খাতকে বীমার আওতায় আনতে হবে।

৯. যেসব উপকরণ সহায়তায় পোল্ট্রি ফিড প্রস্তুত করা হয়, তার সব উপাদানের দামই কমেছে কিন্তু পোল্ট্রি ফিডের দাম কমেনি। পোল্ট্রি ফিডের দাম কমানোর জন্য সরকারকে সরাসরি উদ্যোগ নিতে হবে।
 
১০. পোল্ট্রির প্রচলিত রোগগুলোর ভ্যাকসিন দেশেই উৎপাদনের উদ্যোগ নিতে হবে। এক্ষেত্রে দেশের কৃষি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিশেষজ্ঞদের গবেষণাকে গুরুত্ব দিতে হবে। কৃষি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পোল্ট্রি বিষয়ক গবেষণার প্রসার ঘটাতে হবে।
 
১১. বার্ড ফ্লু শনাক্তকরণ ও বার্ড ফ্লু সম্পর্কে জনসচেতনতার ক্ষেত্রে সরকারি বিশেষ উদ্যোগ নিতে হবে। বার্ড ফ্লু প্রতিরোধ ভ্যাকসিন ও পোল্ট্রি রোগ পরীক্ষার জন্য উচ্চ পর্যায়ের ল্যাবরেটরি স্থাপনে সরকারিভাবে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

১২. জরুরি ভিত্তিতে পোল্ট্রি ও হ্যাচারি নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। হ্যাচারি মালিকদের অনিয়মতান্ত্রিকভাবে একদিনের বাচ্চার মূল্য বৃদ্ধির তৎপরতা বন্ধ করতে হবে। চলবে....

এইচআর/এআরএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।