ইট-পাথরের শহরে আত্মার কথা বলছে ‘জুলাই স্মৃতি তোড়ন’
রাজধানী ঢাকার মেরুল বাড্ডা এলাকায় গড়ে উঠছে একটি ব্যতিক্রমী স্থাপত্য নিদর্শন ‘জুলাই স্মৃতি তোড়ন’। ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) এই উদ্যোগ শুধু একটি নির্মাণ প্রকল্প নয়, এটি হয়ে উঠছে একটি আন্দোলনের সাক্ষ্য, একটি প্রজন্মের প্রতিবাদের প্রতিচ্ছবি। ছবি: মাহবুব আলম
-
বৌদ্ধ মন্দিরসংলগ্ন এলাকায় দাঁড়িয়ে থাকা এই তোড়নটি যেন স্তব্ধ শহরের বুক চিরে উচ্চারণ করছে এক সাহসী সময়ের গল্প। প্রতিবাদ, গণদাবি ও গণতান্ত্রিক চেতনার এক অনন্য অধ্যায় জুলাই আন্দোলন যা এই তোড়নের মূল প্রেরণা।
-
এই তোড়নটি নির্মাণ করা হচ্ছে মুগ্ধের পানির ওপর। বুক চিরে দাঁড়িয়ে থাকা স্মৃতি-স্মারকটি যেন বোঝাতে চায় এই আন্দোলনের আবেগ কতটা গভীর, কতটা প্রবহমান।
-
ঢাকার প্রকৌশল বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের তত্ত্বাবধানে গড়ে উঠা এই নির্মাণটি এরইমধ্যে স্থানীয়দের কৌতূহল জাগিয়েছে।
-
তোড়নের গায়ে খোদাই করে লেখা হয়েছে জুলাই আন্দোলনের সময়কার স্লোগানগুলো। প্রতিবাদের ভাষা, মিছিলের জ্বালাময়ী আহ্বান এবং হাজারো কণ্ঠের চিৎকার সবকিছুই যেন এখানে ফিরে এসেছে স্থায়ী রূপ নিয়ে।
-
বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে জুলাই আন্দোলন ছিল একটি টার্নিং পয়েন্ট। এটি ছিল তরুণ প্রজন্মের প্রতিবাদ, রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর সাহসী প্রয়াস। নানা সামাজিক ও রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে এই আন্দোলন জন্ম দিয়েছিল এক নতুন চেতনার।
-
আজ যখন সেই আন্দোলনের স্মৃতি অনেকের কাছে ধূসর হতে চলেছে, তখন এই তোড়নটি যেন দায়িত্ব নিয়েছে ইতিহাসকে ধরে রাখার। তরুণদের জন্য এটি হতে পারে শেকড়ের খোঁজে ফেরার একটি সুযোগ।
-
ঢাকা শহরে অনেক স্মারক নির্মাণ হয়েছে জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকে শহীদ মিনার। কিন্তু জুলাই স্মৃতি তোড়ন এক অন্যরকম ভাবনা। এটি শুধু শহীদদের স্মরণ নয়, বরং প্রতিবাদের সংস্কৃতিকে লালন করার এক প্রয়াস। মেরুল বাড্ডার এই তোড়ন নগরবাসীকে প্রতিদিন মনে করিয়ে দেবে যে শহর শুধু ইট-কাঠের নয়, এই শহরে মানুষের স্বপ্ন, লড়াই, আর ইতিহাসও বাস করে।