মেঘ-বৃষ্টি ভুলে নৌকাবাইচে মাতলো সুনামগঞ্জবাসী
গ্রামীণ ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে সুনামগঞ্জের দুর্গম এলাকায় অনুষ্ঠিত হয়েছে দিনব্যাপী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা। ছবি: লিপসন আহমেদ
-
৮ আগস্ট সকালে জেলার দিরাইয়ের শ্যামারচর বাজারের পাশে মৃতপ্রায় সুরমা নদীতে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়।
-
এতে সুরমা নদীর ঢেউ, ঢাকের তালে, আর লাখো দর্শকের উচ্ছ্বাসে মুখরিত হয়ে ওঠে দুর্গম অঞ্চলের জনপদ।
-
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী শিশির মনিরের উদ্যোগে দীর্ঘ ২২ বছর পর হাওরের এ এলাকায় এমন আয়োজন পেয়ে উচ্ছ্বসতি স্থানীয়রা।
-
প্রতিযোগিতা দেখতে সকাল থেকে প্রচণ্ড বৃষ্টির মধ্যে সুরমার দুই পাড়ে জড়ো হতে থাকেন নারী-শিশুসহ সব সব বয়সী মানুষ। সোনার তরী, গরিবের তরী, বীর দর্পণ, বীর পবন নামে নৌকা এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয়।
-
আয়োজনে যেন মরা নদীর বুকজুড়ে রঙিন স্বপ্নের মেলা। নীরব, নিস্তব্ধত নদীটি যেন উত্তাল হয়ে উঠেছে।
-
শিস ঢাক-ঢোল আর বাঁশির সুরের পাশাপাশি নৌকার মাঝিদের তাল মিলিয়ে বৈঠা চালানো দর্শকের হাততালিতে নদী যেন নতুনভাবে প্রাণ ফিরে পেয়েছে।
-
প্রতিযোগিতা দেখতে আসা দর্শকরা জানান, অসাধারণ একটি দিন কেটেছ। ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ যেন প্রতিবছর আয়োজন করা হয় আয়োজকদের কাছে সেই অনুরোধ করেন তারা।
-
দর্শক আলাউদ্দিন মিয়া বলেন, দুর্গম এলাকায় এরকম নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা দেখতে পারব কল্পনাও করিনি। আয়োজকদের অনুরোধ জানাবো প্রতিবছর যেন এমন আয়োজন করা হয়।
-
আর প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া নৌকার মাঝি তোফায়েল বলেন, মূলত দর্শকদের আনন্দ দিতে আমরা বিভিন্ন জায়গায় নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি। খেলায় জয় পরাজয় থাকতেই পারে এখানে হতাশ হওয়ার কিছু নেই।
-
আয়োজক আইনজীবী শিশির মনির বলেন, এটা শুধু খেলা না, এটা গ্রামীণ সংস্কৃতি ও আমাদের গর্ব।
-
নৌকাবাইচ মানে মানুষের মিলন, আনন্দ আর সম্প্রীতির উৎসব। প্রতিবছর এই উৎসবের আয়োজন করা হবে এমনটা জানান তিনি।