পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে দুর্গাপূজার প্রস্তুতি
প্রতিবছর এ সময়ে পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে যেন প্রাণ ফিরে আসে। দুর্গা পূজার আগমন শুরু হলে এখানকার সাধারণ রাস্তাঘাট, দোকানপাট, বাজারের মুখরতা সবকিছু যেন উৎসবের আনন্দে ভরে যায়। ছবি: মাহবুব আলম
-
সকাল থেকেই পুরান ঢাকার এই ঐতিহ্যবাহী বাজারে ভিড় দেখা যায়।
-
বাজার ঘুরে যাওয়া যেকেউ সহজেই বুঝতে পারেন, শাখারি বাজার শুধু কেনাকাটার স্থান নয়, এটি যেন একটি সংস্কৃতির মেলা, যেখানে প্রতিটি দোকান, প্রতিটি রঙ আর প্রতিটি সামগ্রী যেন উৎসবের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
-
দুর্গা উৎসবকে কেন্দ্র করে বাজারের সবচেয়ে ভিড় থাকে পূজা পার্বণের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র পাওয়া যায় এমন সব দোকানে।
-
সনাতন ধর্মাবলম্বীরা এখানে পোশাক, শাখা, সিঁদুর, ঠাকুরের পোশাকসহ নানান পূজার সামগ্রী সংগ্রহ করতে আসেন।
-
শিশু থেকে বৃদ্ধ, প্রায় সবাই যেন উৎসবের প্রস্তুতির অংশ হয়ে ওঠেন।
-
বাজারের ছোট ছোট দোকানগুলো সাজানো থাকে রঙিন আলোকসজ্জা ও নানা ধরনের পূজার সামগ্রী দিয়ে।
-
শাঁখারীবাজারে ঘুরে দেখলে দেখা যায়, দোকানের মালিকরা তাদের পণ্যগুলোর বিশেষত্ব বোঝাতে খোলাখুলি আলাপ করেন। কখনও তা পণ্যসংক্রান্ত তথ্য, কখনও তা সামান্য গল্প-যাতে ক্রেতাদের মন জয় করা যায়। আর ক্রেতারা মন দিয়ে জিনিসপত্র বাছাই করেন, কখনও হালকা হাসি আর কখনও কখনও উৎসবের উত্তেজনায় মুখর।
-
পুরান ঢাকার এই বাজারের অন্যতম আকর্ষণ হলো এর ঐতিহ্যবাহী পরিবেশ।
-
প্রতিটি দোকান যেন সৃষ্টিশীলতার এক ছোট অংশ।
-
পোশাকের রঙ, শাখার আকার, সিঁদুরের প্যাকেট, ঠাকুরের সাজ-সবকিছুই যেন একটি ছবি হিসেবে সাজানো।
-
ভিড়ে দাঁড়িয়ে লক্ষ্য করলে বোঝা যায়, শুধু কেনাকাটা নয়, এটি এক ধরনের সামাজিক মিলনকেন্দ্র। এখানে লোকজন শুধু সামগ্রী কিনে না, তারা একে অপরের সঙ্গে গল্প, অভিজ্ঞতা এবং উৎসবের আনন্দ ভাগাভাগি করেন।
-
ছবি তোলার জন্য ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটি ক্রেতা তার মুখে উদ্দীপনা আর চোখে আনন্দ নিয়ে বাজারে ঘুরছেন। বিশেষ করে শিশুদের চোখে রঙিন পোশাক ও সাজানো শাখার প্রতি কৌতূহল প্রতিফলিত হয়।
-
শাঁখারীবাজারে দুর্গা পূজার এই প্রস্তুতির দৃশ্য প্রমাণ করে যে, উৎসব কেবল ধর্মীয় কায়দা নয়, এটি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক বন্ধনের প্রতীক।
-
পুরান ঢাকার শাঁখারীবাজারে ভিড়, আনন্দ, রঙ ও সংস্কৃতি-সব মিলিয়ে দুর্গাপূজা যেন এক জীবন্ত চিত্রকলা।