দুর্গোৎসবের রঙে ভাসছে নিমতলী মন্দির এলাকা
বাংলার সংস্কৃতির এক অনন্য অংশ দুর্গোৎসব। এ উৎসব কেবল পূজা-অর্চনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং তা ছড়িয়ে পড়ে জনজীবনের প্রতিটি কোণায়। ঢাকার মেরুল বাড্ডার নিমতলী মন্দির এলাকা এখন যেন মেলার শহরে পরিণত হয়েছে। পূজার আলোয় ভেসে যাচ্ছে আশেপাশের রাস্তাঘাট, আর উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে। ছবি: মাহবুব আলম
-
দুর্গাপূজাকে ঘিরে প্রতিদিনই জমছে মানুষের ভিড়। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মন্দির ঘিরে থাকছে নারী-পুরুষ, শিশু-কিশোর ও প্রবীণদের পদচারণা।
-
ভক্তরা দেবী দুর্গার আরাধনায় অংশ নিতে আসলেও আশেপাশের সড়কগুলোতে গড়ে ওঠা দোকানপাট মেলাকে আরও বর্ণিল করে তুলেছে।
-
মন্দিরের সামনে বসেছে নানান ধরনের অস্থায়ী দোকান। মিষ্টির দোকানে ছড়িয়ে পড়ছে গরম জিলাপির সুগন্ধ, নারকেলের নাড়ুর মিষ্টি স্বাদ, ছানার সন্দেশ কিংবা লাড্ডুর ঘ্রাণ।
-
মুড়ি আর মুড়কির দোকানে ভিড় জমাচ্ছে কিশোর-যুবক থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত।
-
শিশুদের আকর্ষণ কাড়ছে খেলনার দোকানগুলো।
-
রঙিন বেলুন, বাঁশির সুর, ছোট্ট গাড়ি আর পুতুলের ঝলকানি চারপাশের আনন্দকে দ্বিগুণ করে তুলছে।
-
উৎসবের আরেক অনুষঙ্গ হলো গয়নার দোকান। অস্থায়ী কাঠামোর এই দোকানগুলোতে কাচের চুড়ি, নেকলেস, টিকলি কিংবা রঙিন কানের দুলে সাজছেন তরুণীরা। এসব দোকান যেন শুধু বেচাকেনার জায়গা নয়, বরং উৎসবের রঙ ছড়িয়ে দেওয়ার আরেক কেন্দ্রবিন্দু।
-
দুর্গোৎসব মানেই মিলনমেলা। নিমতলী মন্দিরের সামনে সেই দৃশ্য আরও স্পষ্ট। আশেপাশের বাসিন্দারা ছাড়াও দূরদূরান্ত থেকে মানুষ আসছে দেবী দর্শনে।
-
পূজা দেখতে এসে কেউ মিষ্টি খাচ্ছেন, কেউ কিনছেন খেলনা, আবার কেউ শুধু ভিড়ের আনন্দ উপভোগ করছেন।
-
এক জায়গায় ধর্মীয় অনুভূতি আর সামাজিক মিলনমেলা মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে।
-
রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আলোকসজ্জায় ঝলমল করে উঠছে এলাকা। বৈদ্যুতিক বাতির ঝলকানি, ঢাক-ঢোলের শব্দ আর মানুষের কণ্ঠ মিলিয়ে যেন আনন্দের ঢেউ ছড়িয়ে দিচ্ছে পুরো মহল্লায়। ছোটদের হাসি, বড়দের ব্যস্ততা আর ভক্তদের প্রার্থনা মিলিয়ে নিমতলী মন্দির এলাকায় এখন প্রাণবন্ত।
-
দুর্গোৎসব শুধু ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, এটি হয়ে উঠেছে সামাজিক উৎসবও। নিমতলী মন্দির ঘিরে রঙিন দোকানপাট, ভক্তদের ভিড়, শিশুদের কোলাহল ও আলোকসজ্জায় সৃষ্টি হয়েছে অপূর্ব আবহ। এই দৃশ্য প্রমাণ করে বাংলার উৎসব মানেই মিলন, আনন্দ আর সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির রঙিন ছোঁয়া।