আলো, প্রার্থনা আর শান্তির আহ্বানে শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা
বাংলাদেশের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের অন্যতম বৃহৎ ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা আজ। সারাদেশের মতো রাজধানীতেও দিনটি পালিত হচ্ছে গভীর শ্রদ্ধা ও উৎসবমুখর আবহে। এই দিনটি শুধু ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ নয়-এটি শান্তি, সহমর্মিতা ও আত্মসংযমের এক মহা-অনুশাসন, যা বৌদ্ধ দর্শনের প্রাণকেন্দ্রকে ছুঁয়ে যায়। ছবি: মাহবুব আলম
-
রাজধানীর মেরুল বাড্ডায় বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফেডারেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হচ্ছে দিনব্যাপী বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠান।
-
আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহার চত্বর সকাল থেকেই ভরে উঠেছে ধর্মপ্রাণ ভিক্ষু, উপাসক-উপাসিকা ও সাধারণ মানুষের পদচারণায়।
-
সূর্যের প্রথম আলোর সাথে সাথে শুরু হয় ত্রিপিটক পাঠ-বুদ্ধের বাণী উচ্চারিত হতে থাকে শান্ত কণ্ঠে, আর সেই সুরে ভেসে যায় পুরো বিহার প্রাঙ্গণ।
-
এরপর অনুষ্ঠিত হয় বৌদ্ধপূজা ও প্রদীপ প্রজ্জ্বলন। শত শত প্রদীপের আলো যেন অন্ধকারের প্রতীকী অবসান ঘটিয়ে এনে দেয় আলোকিত মানবতার বার্তা।
-
প্রবারণা পূর্ণিমা, যা অনেকের কাছে ‘বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎসব’, মূলত তিন মাসব্যাপী বর্ষাবাসের সমাপ্তি নির্দেশ করে। এই সময়ে ভিক্ষুরা একত্রে ধর্মচর্চা ও আত্মসংযমে নিমগ্ন থাকেন।
-
বর্ষাবাস শেষে তারা পরস্পরের প্রতি অপরাধ বা ভুল স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন-এই প্রক্রিয়াকেই বলা হয় ‘প্রবারণা’।
-
দিনের প্রথম প্রহরে বৌদ্ধ সংঘের প্রাতরাশের মধ্য দিয়ে আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয়। পরবর্তীতে ধর্মীয় আলোচনা, দান ও সম্মিলিত প্রার্থনার আয়োজনও থাকে।
-
বিহারের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় প্রদীপ, ফুল ও রঙিন পতাকায় সজ্জিত করা হয়েছে পুরো এলাকা।
-
হাসি, প্রার্থনা আর শুভেচ্ছা বিনিময়ের মাধ্যমে ভরে উঠেছে উৎসবের পরিবেশ।
-
প্রবারণা পূর্ণিমা শুধু একটি উৎসব নয়-এটি মানবিকতার অনুশীলন। অহিংসা, দয়া, সংযম ও সত্যের পথে চলার শিক্ষা এই দিনটিকে অন্য মাত্রা দেয়।
-
সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও পারস্পরিক সৌহার্দ্য বৃদ্ধির প্রত্যয়ই এই উৎসবের মূল বার্তা।
-
মেরুল বাড্ডার আন্তর্জাতিক বৌদ্ধবিহারের শান্ত পরিবেশে একদিকে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্য, অন্যদিকে মানুষের আন্তরিক অংশগ্রহণ-সব মিলিয়ে প্রবারণার এই পূর্ণিমা হয়ে উঠেছে এক অনন্য মিলনমেলা।