দাবি আদায়ে রাস্তায় শিক্ষকরা
আজ সকাল থেকে রাজধানীর প্রেসক্লাবের সামনের দৃশ্যটা ছিল অন্যরকম। হাতে প্ল্যাকার্ড, গলায় স্লোগান ‘বাড়ি ভাড়া চাই, চিকিৎসা ভাতা চাই, উৎসব ভাতা চাই’-এই দাবিতে জড়ো হয়েছেন দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-কর্মচারীরা। ছবি: মাহবুব আলম
-
শিক্ষা উপদেষ্টা ঘোষিত ২০ শতাংশ বাড়ি ভাতা, ১,৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা এবং ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতার প্রজ্ঞাপন জারির দাবিতে তারা প্রেসক্লাবের সামনে দুই পাশের রাস্তা অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন।
-
একজন কলেজ শিক্ষক বলছিলেন, ‘প্রতিদিন আমরা ছাত্রদের ন্যায়বিচার, অধিকার আর দায়িত্ব শেখাই। কিন্তু আজ নিজেরাই ন্যায্য প্রাপ্যের জন্য রাস্তায় বসেছি। এটা আমাদের গর্ব নয়, কষ্ট।’
-
আরেকজন শিক্ষক বললেন, ‘বাড়ি ভাড়া আর চিকিৎসা খরচ এখন এমন জায়গায় পৌঁছেছে যে মাসের শেষভাগে পরিবার চালানোই দুঃসহ হয়ে যায়। সরকার যে ঘোষণা দিয়েছে, তা বাস্তবায়ন না হলে এই অবস্থা থেকে বের হওয়া সম্ভব নয়।’
-
দেশের শিক্ষকদের দাবি অনেক পুরনো-ন্যায্য বেতন কাঠামো, চিকিৎসা সুবিধা, উৎসব ভাতা ইত্যাদি।
-
শিক্ষা উপদেষ্টার ঘোষণায় কিছুটা আশার আলো দেখা দিলেও বাস্তবায়নে দীর্ঘসূত্রিতা হতাশ করেছে সবাইকে।
-
আজকের এই অবস্থান কেবল বাড়ি ভাতা বা চিকিৎসা খরচের জন্য নয়-এটা শিক্ষকদের মর্যাদার প্রশ্নও।
-
একজন সিনিয়র শিক্ষক বলেন, ‘আমরা শুধু টাকাপয়সা চাই না, চাই সম্মান। আমাদের কাজই যদি রাষ্ট্রের মূলভিত্তি গড়ে দেয়, তাহলে প্রাপ্য সুবিধাগুলো নিয়ে এত দৌড়ঝাঁপ কেন করতে হবে?’
-
অবস্থান কর্মসূচির মাঝেও অনেক শিক্ষককে দেখা গেছে মোবাইল ফোনে অনলাইন ক্লাস নিচ্ছেন। কেউ ছাত্রদের পরীক্ষার খাতা যাচাই করছেন ব্যানারের আড়ালে বসে। এ যেন এক বাস্তব প্রতিচ্ছবি-বাংলাদেশের শিক্ষকরা দায়িত্বের জায়গায় আপসহীন, কিন্তু নিজের অধিকারের জায়গায় বারবার উপেক্ষিত।
-
শিক্ষা উপদেষ্টার ঘোষণার পর শিক্ষক সমাজে আশার সঞ্চার হয়েছিল। কিন্তু প্রজ্ঞাপন জারি না হওয়ায় সেই আশাই এখন ক্ষোভে পরিণত হচ্ছে। তাদের বক্তব্য, ‘ঘোষণা নয়, এখন দরকার কাগজে-কলমে সিদ্ধান্ত।’
-
শিক্ষা একটি জাতির মেরুদণ্ড-এ কথা আমরা সবাই জানি। কিন্তু সেই মেরুদণ্ডের ভার যেন বারবার সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। শিক্ষক সমাজের এই অবস্থান কেবল ক্ষোভ নয়, একটি রাষ্ট্রীয় বার্তা, ‘আমাদের প্রাপ্য দাও, আমরা দায়িত্ব পালন করব আরও নিষ্ঠায়।’