ছবিতে রাস উৎসব
গঙ্গাস্নান বা পুণ্যস্নানের মধ্য দিয়ে পটুয়াখালীর কুয়াকাটায় শেষ হয়েছে রাস উৎসবের মূল আনুষ্ঠানিকতা। ভোর ৬টায় জাগতিক সব পাপ মোচনের আশায় সৈকতের নোনা জলে গাঁ ভাসিয়ে এ গঙ্গাস্নান সম্পন্ন করেন হিন্দুধর্মাবলম্বীরা। আগামী মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে তাদের এই তিথি। ছবি: আসাদুজ্জামান মিরাজ
-
স্নানের আগে সৈকতে মোমবাতি, আগরবাতি, বেল পাতা, ফুল, ধান, দূর্বা, হরিতকী, ডাব, কলা, তেল ও সিঁদুর সমুদ্রে জলে অর্পণ করে সনাতনী নারীরা। এসময় উলুধ্বনি ও মন্ত্রপাঠে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো সৈকত।
-
এছাড়া মাথান্যাড়াসহ প্রায়শ্চিত্ত ও পিণ্ডদান করেন অনেক মানতকারীরা। এর আগে রাতভর কুয়াকাটা শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দিরে পূজার্চনা, সঙ্গীতানুষ্ঠান ও মহানাম কীর্তনে মেতে ওঠে সনাতনীরা।
-
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় অধিবাসের মধ্য দিয়ে এ উৎসব শুরু, যার সমাপ্তি ঘটবে বৃহস্পতিবার সকালে সমুদ্র স্নানের মধ্য দিয়ে।
-
রাশ পূজায় অংশ নিতে পুণ্যার্থীদের ভিড়ের পাশাপাশি পর্যটকদের পদচারণা ছিল চোখে পড়ার মতো। এই উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে ছিলো কঠোর নজরদারি।
-
রাস পূজা আয়োজক কমিটির সমন্বয়ক ও কুয়াকাটা সৈকতে শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সভাপতি কাজল বরণ দাস বলেন, সৈকতের পাড়ে প্রদীপ জ্বালিয়ে প্রার্থনায় বসবেন তারা, পূন্যার্থীরা সাগরকে সামনে রেখে নির্জনে কৃষ্ণপূজার সঙ্গে দেবতার নীল কমল আর গঙ্গাদেবীর আরাধনায় মগ্ন হয়েছে তারা।
-
কুয়াকাটা সৈকতে শ্রী শ্রী রাধাকৃষ্ণ মন্দির তীর্থযাত্রী সেবাশ্রমের সহ-সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র হাওলাদার বলেন, বাংলাদেশ একটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ। এই দেশে সবাই মিলে একটি সুন্দর লোকজ সাংস্কৃতিক পরিবেশ গড়ে তুলেছে, যা আমাদের হাজার বছরের ঐতিহ্য। আমাদের এই মন্দিরের পাশেই একটি মসজিদও রয়েছে, আমাদের মধ্যে বেশ সু-সম্পর্ক।
-
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও কুয়াকাটা বীচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব মো. কাউসার হামিদ বলেন, রাস উপলক্ষে আমরা বিভিন্ন আয়োজন হাতে নিয়েছি, বরাবরের থেকে একটু আলাদা বিনোদন দিতেই আমরা, মার্কেটের প্রসার বাড়ানো, আলাদাভাবে মোবাইল টয়লেট, চেইঞ্জিং রুমসহ নানা আয়োজন যে কারণে এবারের আয়োজন সবাই নিরবিচ্ছিন্ন ভাবে আয়োজন উদযাপন করেছে। আমরা পুরোপুরি এই আয়োজন শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরা মাঠে আছি।
-
টুরিস্ট পুলিশ কুয়াকাটা রিজিয়নের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে নিরাপত্তায় কঠোর ছিলাম আমরা। আমাদের প্রায় চারশতাধিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য নিয়োজিত ছিল। কাল সকালে রাসমেলার আনুষ্ঠানিকতা শেষ হলেও আমরা সন্ধ্যা পর্যন্ত নিরাপত্তা বহাল রাখবো।