ছবিতে তুরাগের ঢেউয়ে ভেসে থাকা জীবনের গল্প
আব্দুল্লাহপুরের তুরাগ নদীর পাড়ে নৌকায় গড়ে উঠেছে এক ভাসমান জীবন। একসময় এখানে বসবাস করত বেদে সম্প্রদায়, এখন সেই জায়গা দখল করে নিয়েছে নানান পেশার মানুষ। কারও নৌকা তাদের বাড়ি, কারও আবার কর্মক্ষেত্র। ছবি: মাহবুব আলম
-
নদীর জলেই তাদের সকাল, সূর্যাস্ত আর রাতের বিশ্রাম।
-
নৌকাতেই রান্না হয়, নদীতেই গোসল, আর নৌকার কাঠের তলায়ই চলে জীবনের সব হিসাব।
-
শহরের ভিড় থেকে দূরে, তুরাগের ঢেউয়ের সঙ্গে মিশে আছে এক অন্যরকম জীবনের গল্প নিঃশব্দ অথচ গভীর।
-
একসময় এই নদীপাড় ছিল বেদেদের বসতি। তারা নদীর সঙ্গে, নৌকার সঙ্গে, জলের সঙ্গে ছিল একাত্ম। কিন্তু এখন সময় বদলেছে। সেই জায়গায় এখন এসেছে নানা পেশার মানুষ রিকশাচালক, হকার, রাজমিস্ত্রি, এমনকি দিনমজুর।
-
শহরের ব্যয়বহুল জীবনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে না পেরে তারা বেছে নিয়েছেন এই ভাসমান আশ্রয়। কারণ নদীর পাড়ে থাকা মানে, অন্তত মাথার উপর একটা ছাদ তো আছে যদিও সেটা কাঠের, টিনের আর প্লাস্টিকের মিশ্রণে তৈরি ভাসমান ঘর।
-
তুরাগ নদীর এই অংশে দিনের শুরু হয় ঢেউয়ের শব্দে। সকালে অনেকেই নৌকা থেকেই নেমে নদীতে মুখ ধোয়, কেউ গোসল করে, কেউ আবার নদীর পানি দিয়েই রান্না শুরু করে। শিশুদের হাসি, বয়স্কদের ক্লান্ত মুখ সবকিছুতেই যেন জড়িয়ে আছে নদীর গন্ধ।
-
এই জীবনের কষ্টও কম নয়। বর্ষায় যখন নদী ফুলে ওঠে, তখন ভাসমান ঘরগুলোও ভাসে ভয়ের মধ্যে। মাঝে মাঝে ঝড়ের রাতে নৌকা ভেসে যায়, কারো জীবনও হারিয়ে যায় সেই জলে।
-
তুরাগ নদীর পাড়ে দাঁড়িয়ে যদি কেউ এক মুহূর্ত তাকায়, সে বুঝবে এখানেই ঢাকার আরেকটা রূপ আছে। বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্ট থেকে কয়েক কিলোমিটার দূরে এমন মানুষও আছে, যারা নদীর ঢেউ গুনে দিন কাটায়।