বিশেষ দিনে জানুন তামান্নার জীবনের জানা-অজানা
ক্যামেরার আলো, রূপের ঝলক আর রেড কার্পেটের হাসির আড়ালে তামান্না ভাটিয়ার জীবন শুধুই তারকাখ্যাতির গল্প নয়। ২১ ডিসেম্বর তার জন্মদিনে ফিরে তাকালে দেখা যায় এই পথচলা গড়ে উঠেছে নীরব পরিশ্রম, ভাঙা-গড়ার অভিজ্ঞতা আর নিজের মতো করে টিকে থাকার দৃঢ় সংকল্পে। পর্দায় তিনি কখনো রাজকীয়, কখনো আধুনিক, কখনো আবার একেবারে সাধারণ; কিন্তু পর্দার বাইরে তামান্না এক সংগ্রামী মানুষ, যিনি সময়ের সঙ্গে নিজেকে বারবার নতুনভাবে আবিষ্কার করেছেন। ছবি: অভিনেত্রীর ইনস্টাগ্রাম থেকে
-
মুম্বাইয়ে জন্ম নেওয়া তামান্নার স্বপ্নের বীজ বোনা হয়েছিল খুব অল্প বয়সেই। কিশোরী বয়সে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়ে তিনি বুঝেছিলেন এ পথ সহজ নয়। প্রথম দিকে ভাষাগত সীমাবদ্ধতা, চরিত্র বাছাইয়ের সংকীর্ণতা সব মিলিয়ে চ্যালেঞ্জ ছিল প্রতিনিয়ত। কিন্তু এখানেই তার আলাদা পরিচয়; প্রতিটি বাধাকে তিনি নিজের শেখার সিঁড়ি বানিয়েছেন।
-
তামান্নার ক্যারিয়ারের বড় মোড় আসে তেলুগু ও তামিল সিনেমায় ধারাবাহিক সাফল্যের মাধ্যমে। শুরুতে অনেকেই তাকে শুধুই ‘গ্ল্যামার ডল’ হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি ধীরে ধীরে প্রমাণ করেছেন নাচ, আবেগ, সংলাপ সবকিছুতেই তিনি সমান সাবলীল। বাণিজ্যিক ছবির পাশাপাশি চরিত্রনির্ভর কাজ বেছে নিয়ে নিজের অভিনয়-পরিসরকে বিস্তৃত করেছেন।
-
একটি চরিত্র কখনো কখনো শিল্পীর পরিচয় বদলে দেয়। তামান্নার ক্ষেত্রেও তেমনই। ঐতিহাসিক ও মহাকাব্যিক ধারার ছবিতে তার উপস্থিতি তাকে পৌঁছে দেয় আন্তর্জাতিক দর্শকের কাছে। শক্ত, সহমর্মী এবং মানবিক এক নারীর রূপায়ণ-এই কাজ প্রমাণ করে দেয়, বড় ক্যানভাসে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা তার আছে।
-
বলিউডে তামান্নার পথচলা ছিল ওঠানামায় ভরা। এখানে তিনি ঝুঁকেছেন বেছে নেওয়া চরিত্রের দিকে। কখনো কমেডি, কখনো থ্রিলার, কখনো আইটেম গানের চেনা ছক ভেঙে ভিন্ন কিছু। সময়ের সঙ্গে তিনি বুঝেছেন, বাজার নয় নিজের সময়ই শেষ কথা। এই আত্মবিশ্বাসই তাকে আলাদা করেছে।
-
তামান্না ভাটিয়ার সৌন্দর্য নিয়ে আলাদা করে কিছু বলার প্রয়োজন নেই। কিন্তু তার স্টাইলের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য হলো শালীনতা। রেড কার্পেট হোক বা ক্যাজুয়াল উপস্থিতি তার পোশাক নির্বাচনে থাকে ব্যক্তিত্বের ছাপ। ফ্যাশন তার কাছে কেবল বাহ্যিক নয়, নিজেকে প্রকাশের এক নীরব ভাষা।
-
অভিনয়ের বাইরে তামান্না পরিচিত তার শৃঙ্খলাপরায়ণ জীবনযাপনের জন্য। নিয়মিত যোগব্যায়াম, স্বাস্থ্যসচেতনতা আর মানসিক ভারসাম্য এসব নিয়ে তিনি খোলাখুলি কথা বলেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অতিরিক্ত উপস্থিতি নয়, বরং প্রয়োজনীয় কথাটুকুই তিনি বলতে পছন্দ করেন। এই সংযম আজকের ‘ভাইরাল’ সময়ে তাকে আরও আলাদা করে তোলে।
-
তামান্না কখনো উচ্চকণ্ঠে বিতর্কে জড়াননি, কিন্তু নিজের অবস্থান স্পষ্ট রেখেছেন। কাজের সুযোগ, পারিশ্রমিক, চরিত্রের গুরুত্ব এসব বিষয়ে তিনি আপস করেননি। নীরব দৃঢ়তাই যেন তার শক্তি।