রিকশা গাউনে আলো ছড়ালেন আকলিমা
বিশ্বসুন্দরীর মঞ্চে যেন এক টুকরো বাংলাদেশ! মিস ওয়ার্ল্ড ২০২৫–এর উদ্বোধনী আয়োজনে নজর কাড়লেন বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্বকারী আকলিমা আতিকা কনিকা। তিনি হাজির হয়েছিলেন এক অভিনব রিকশা গাউনে, যার ডিজাইন ও উপকরণ সম্পূর্ণই বাস্তব রিকশা ম্যাটেরিয়াল থেকে তৈরি, এমনকি গাউনে সংযুক্ত ছিল রিকশার হুডও। ছবি: ফেসবুক থেকে
-
এই ব্যতিক্রমী আউটফিটটির পেছনে রয়েছেন বাংলাদেশের তরুণ ফ্যাশন ডিজাইনার রাইসা আমিন। তিনি শৈলী শান্ত-মারিয়াম ইউনিভার্সিটি অব ক্রিয়েটিভ টেকনোলজির শিক্ষার্থী।
-
২০২৪ সালের আগস্ট মাস। ঢাকার ধানমন্ডিতে যানজটে বসে থেকেই রিকশার বর্ণিল পেছনের নকশা দেখে অনুপ্রাণিত হন রাইসা। সেই ভাবনা থেকেই জন্ম নেয় এক নতুন কনসেপ্ট ‘রিকশা গাউন’। রিকশার হুড, গায়ে আঁকা রঙ, এমনকি পেছনে লেখা ‘মা-বাবার দোয়া’ সব মিলিয়ে তিনি তৈরি করেন একদম নিজস্ব ঘরানার এক ফ্যাশন পিস, যা তুলে ধরে বাংলা সংস্কৃতির এক চেনা গৌরবময় প্রতিচ্ছবি।
-
রাইসার ডিজাইনে তৈরি রিকশা গাউনে আকলিমা যখন উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে হাঁটলেন, তখন ১১০টি দেশের প্রতিযোগীদের মাঝে তিনি হয়ে উঠলেন ব্যতিক্রমের প্রতীক। গাউনের অনন্যতা যেমন চোখে পড়েছে, তেমনি আকলিমার আত্মবিশ্বাসী দৃষ্টিভঙ্গি ও সাবলীল হাঁটাও প্রশংসা কুড়িয়েছে দর্শক ও আয়োজকদের।
-
আকলিমার এটিই প্রথম আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্ম নয়। এর আগে তিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় আয়োজিত ‘ফেস অব এশিয়া ২০২৪’–এ অংশ নিয়ে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। সেখানেও তার ক্যারিশমা ছিল চোখে পড়ার মতো। তাই আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করার জন্য তিনি নিঃসন্দেহে একজন প্রস্তুত প্রতিযোগী।
-
আকলিমার এই সাফল্যের পেছনে রয়েছে সুসংগঠিত প্রস্তুতি ও সঠিক দিকনির্দেশনা। মিস ওয়ার্ল্ড বাংলাদেশ ২০২৫-এর লাইসেন্সধারী ও সুপরিচিত মডেল-উদ্যোক্তা আজরা মাহমুদের নেতৃত্বে গঠিত আজরা মাহমুদ ট্যালেন্ট ক্যাম্প তরুণদের আন্তর্জাতিক মানের প্রস্তুতি দিতে কাজ করে চলেছে। সৌন্দর্য, ব্যক্তিত্ব, নেতৃত্ব ও মানবিক চেতনার সমন্বয়ে আকলিমার মতো নতুন প্রজন্ম গড়ে তোলা এই প্ল্যাটফর্মের অন্যতম উদ্দেশ্য।
-
এমন অভিনব গাউন শুধু চোখ ধাঁধানো ফ্যাশন নয়, বরং এটি এক সাংস্কৃতিক স্টেটমেন্ট। রিকশা বাংলাদেশের শহুরে জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। সেটিকে আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য মঞ্চে এমনভাবে উপস্থাপন নিঃসন্দেহে সাহসী ও সৃজনশীল এক প্রয়াস। বিশেষ করে গাউনের হুড ও নকশায় প্রতীয়মান বাংলা চেতনা এই ডিজাইনকে দিয়েছে একটি ব্যতিক্রমী তাৎপর্য।