সাতদিনের মধ্যে এটিএম আজহারকে মুক্তি দিতে হবে: সেলিম উদ্দিন
আগামী সাতদিনের মধ্যে জামায়াত নেতা এটিএম আজহারুল ইসলামের মুক্তির দাবি জানিয়েছেন দলটির কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর ঈদগাহ ময়দানে শেরেবাংলা নগর উত্তর থানা জামায়াত আয়োজিত থানার এক সহযোগী সদস্য সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এই দাবি জানান।
সেলিম উদ্দিন বলেন, কোনো অপরাধ ছাড়াই শুধু জামায়াত করার কারণে তখনকার (২০১১) ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম আজহারুল ইসলামকে আটক করে সাজানো মামলায় প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত করে দীর্ঘদিন ধরে কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আগামী সাতদিনের মধ্যেই মজলুম জননেতা এটিএম আজহারকে মুক্তি দেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি জোর দাবি জানাই। অন্যথায় দুর্বার গণআন্দোলনের মাধ্যমে জনগণের নেতাকে জনগণই মুক্ত করে ছাড়বে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, আগস্ট বিপ্লবে দলমত, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র, শ্রেণি ও পেশা নির্বিশেষে সবাই আন্দোলনে নামলেও নিষিদ্ধ করা হয়েছিল শুধু জামায়াতকে। আর আন্দোলনকারীদের রাজাকার বলার সঙ্গে সঙ্গেই চলমান আন্দোলন অগ্নিগর্ভ হয়ে উঠেছিল। জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই আওয়ামী-বাকশালীদের তখতে তাউসের পতন এবং তাদের খুনি নেত্রীসহ সব মন্ত্রী-এমপিরা দেশ ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিলেন।
আরও পড়ুন
এই জামায়ত নেতা বলেন, মূলত, যারাই জামায়াত নির্মূল করার ষড়যন্ত্র করেছে তারাই ইতিহাসের পাতা থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। আর জামায়াতের ওপর রয়েছে আল্লাহর রহমত। জামায়াতে ইসলামী আল্লাহভীরু লোকদের পার্লামেন্টে পাঠিয়ে দেশকে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করতে চায়। তিনি সেই স্বপ্নের পার্লামেন্ট গঠনের জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান।
সেলিম উদ্দিন আরও বলেন, মানুষের তৈরি আইন দিয়ে মানুষের কল্যাণ সম্ভব নয়। আগামী দিনে যারা সে বৃত্তে আটকে থাকবে জনগণ তাদের আর কোনোভাবেই গ্রহণ করবে না। যারা ধর্মনিরপেক্ষতার প্রবক্তা তাদের দিনও শেষ হয়ে গেছে। এ দেশের সিংহভাগ মানুষ মুসলমান। তাই এ দেশে রাজনীতি করতে হলে কোরআন, সুন্নাহ ও ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতেই রাজনীতি করতে হবে। যারা দুর্নীতি, লুটপাট, অবক্ষয়ের বৃত্তে থাকবে এবং যৌনতা ও পৌত্তলিকতাকে উৎসাহিত করবে তাদের জনগণ কোনোভাবেই ভোট দেবে না।
তিনি বলেন, মূলত এ দেশে রাজনীতি করতে হলে সুদভিত্তিক অর্থনীতির পরিবর্তে ইসলামী অর্থনীতি চালুর অঙ্গীকার করতে হবে। তিনি চারদলীয় জোট সরকারে জামায়াতের মন্ত্রীদের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, আমাদের দুজন মন্ত্রী তিনটি মন্ত্রণালয় চালিয়ে দুই টাকার দুর্নীতিও করেননি। মন্ত্রিসভার সব সদস্য জামায়াতের মন্ত্রীদের মত আদর্শবান হলে দেশও আদর্শে রাষ্ট্রে পরিণত করা সম্ভব। তিনি দেশকে একটি ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও বেকারত্বমুক্ত আদর্শ রাষ্ট্রে পরিণত করতে আদর্শবান লোকদের নির্বাচিত করার আহ্বান জানান। তাহলেই দেশকে অপশাসন-দুঃশাসন মুক্ত করা সম্ভব।
শেরেবাংলা নগর উত্তর থানার আমির মুহাম্মদ আব্দুল আউয়াল আজমের সভাপতিত্বে ও থানা সেক্রেটারি মঞ্জুরুল ইসলামের সঞ্চালনায় সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতে ইসলামী কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ মোবারক হোসেন, ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমির আব্দুর রহমান মুসা, ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারি ড. মুহাম্মদ রেজাউল করিম। সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য ডা. শফিউর রহমান, মশিউর রহমান, থানা নায়েবে আমির শাহ আজিজুর রহমান তরুণ, অর্থ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আব্দুল হালিম, অফিস সম্পাদক তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।
এএএম/ইএ
