৭ খুন মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ১০ মার্চ
নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুন মামলার পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণ ১০ মার্চ ধার্য করেছে আদালত। নূর হোসেন, তারেক সাঈদ এবং রানার পক্ষের আইনজীবী স্বাক্ষীকে জেরা করার জন্য আদালতের কাছে সময়ের আবেদন করলে আদালত ১০ মার্চ পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা চল্লিশ মিনিটে নারায়ণগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে মামলার বাদী ও নিহত নজরুল ইসলামের স্ত্রী সেলিনা ইসলাম বিউটির সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
এদিকে, সাক্ষ্য গ্রহণে দীর্ঘ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী বাদীকে নানা বিষয় নিয়ে জেরা করেন এবং বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি আইনজীবীদের জেরার জবাব দেন। এছাড়া আসামিদের পক্ষে সাফাই গেয়ে আইনজীবীরা যুক্তিতর্কে নূর হোসেন, তারেক সাঈদসহ অন্যান্য আসামিদের হত্যাকাণ্ডে নির্দোষ প্রমাণ করতে চেয়েছিলেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নারাণগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে বিউটির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।
সাক্ষ্যগ্রহণে ৩৫ জন আসামির মধ্যে ৩২ জনের জেরা সম্পন্ন হয়। আর নূর হোসেন, তারেক সাঈদ ও এমএম রানার পক্ষে সময় আবেদন করা হয়। পরে আদালত সাক্ষ্যগ্রহণে জেরা করার জন্য সময় আবেদন মঞ্জুর করেন। তবে এর আগে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত রাখার জন্য আদালতে আবেদন করলে তা নাখোশ করা হয়।
অন্যদিকে, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি একটি মামলার বাদী বিজয় কুমার পালের সাক্ষ্যগ্রহণে আসামি পক্ষের আইনজীবীদের আবেদনের পেক্ষিতে আগামী ৭ মার্চ বিজয় পালকে জেরা করার জন্য সময় নির্ধারণ করেন।
নারায়ণগঞ্জ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাড. এম ওয়াজেদ আলী খোকন সাংবাদিকদের জানান, পূর্ব নির্ধারিত সাত খুনের ঘটনায় দায়েরকৃত একটি মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটিকে আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে। আদালত বাদীর সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন। পলাতক ১২ জনসহ ৩২ আসামিপক্ষের আইনজীবী বাদীকে জেরা করেন।
বাকি তিন আসামির পক্ষের আইনজীবী উচ্চ আদালতের কাগজপত্র দেখিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য সময় আবেদন করেন। আদালতে নূর হোসেন, তারেক সাঈদ ও এমএম রানার আইনজীবী আগামী ১০ মার্চ সাক্ষ্যগ্রহণের জেরা করার জন্য দিন ধার্য করে আদালত।
বাদিপক্ষের আইনজীবী অ্যাড. সাখাওয়াত হোসেন খান সাংবাদিকদের জানান, সাত খুনের ঘটনায় একটি মামলার বাদী সেলিনা ইসলাম বিউটি আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। ৩২ জন আসামির পক্ষের আইনজীবী বাদিকে জেরা করেছেন। আর তিনজন আসামি উচ্চ আদালতে পিটিশন দায়ের করেছেন তাদের আইনজীবী সময় আবেদন করলে আদালতে তাদের জেরা করার জন্য আগামী ১০ মার্চ তারিখ ধার্য করেছেন।
তিনি আরো বলেন, মামলাটি ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করতে সাক্ষ্যগ্রহণে জেরার জন্য সময় আবেদন করেন। কোনো অজুহাতে বিচার কার্য যাতে বিলম্ব না হয় তা আদালতের কাছে আহ্বান জানানো হয়।
সাক্ষ্য প্রদান শেষে সেলিনা ইসলাম বিউটি সাংবাদিকদের জানান, আমি আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছি। এজাহারে আমি যা যা লিখেছি তার বর্ণনা দিয়েছি। আমি খুনিদের ফাঁসি চাই। আমার স্বামী নজরুল ইসলাম বঙ্গবন্ধুর আদর্শের সৈনিক ছিলেন। তিনি জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদকও ছিলেন। আর নূর হোসেন বিএনপি সমর্থন করেন।
নূর হোসেন ও তার লোকজন চাঁদাবাাজি, সন্ত্রাসী, টেন্ডারবাজি, মাদক বিক্রিসহ নানা অপকর্ম করতো। নূর হোসেনের সকল অপকর্মের বিরোধীতা করতে গিয়ে আমার স্বামীর সঙ্গে বিরোধ সৃষ্টি হয়। আর সেই বিরোধের জেরে পরিকল্পিতভাবে আমার স্বামীসহ সাতজনকে হত্যা করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের বের করে দিয়ে নারায়ণগঞ্জের আলোচিত ৭ খুন মামলার প্রথম সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়। সাক্ষী শুনানিতে আদালতের এজলাসে আইনজীবীদের সঙ্গে বসা সাংবাদিকদের বের করে দেন নূর হোসেনের আইনজীবী খোকন সাহা ও আদালতের পিপি ওয়াজেদ আলী খোকন।
শাহাদাত হোসেন/এসএস/এআরএ/আরআইপি