চাকরি হারিয়ে দিশেহারা কাতার প্রবাসীরা

করোনাভাইরাসের কারণে চাকরিহারা প্রবাসীদের সহায়তায় আগামী বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছেন কাতার প্রবাসী বাংলাদেশি ও কমিউনিটি নেতারা। এদিকে দেশটিতে কোভিড আক্রান্ত হয়ে এখন পর্যন্ত ১১ বাংলাদেশিসহ মারা গেছেন ৩০ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ।
করোনা দুর্যোগে চাকরি হারিয়ে দিশেহারা কাতারসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রবাসীরা। আর তাই আসছে বাজেটে করোনায় কর্মহীন প্রবাসীদের জন্য বিশেষ বরাদ্দের দাবি বাংলাদেশি প্রবাসীদের।
কাতারে বসবাসরত এক প্রবাসী বলেন, ‘আগামী বাজেটে সরকার যেন প্রবাসীদের জন্য বাজেটে বরাদ্দ রাখে। প্রবাসীদের বর্তমান অবস্থা খুব একটা ভালো না। কড়াকড়ি থাকায় প্রবাসীরা বের হতে ভয় পাচ্ছে। দিশেহারা প্রবাসীরা সরকারের সহযোগিতা ছাড়া বিপদে পড়ে যাবে’।
আরেক প্রবাসী বাংলাদেশি বলেন, ‘কাজ কাম নেই। পরিবার নিয়ে কষ্টে আছি। এখনই বেহাল দশা। পরে যে কী হবে আল্লাহই ভালো জানে। বাংলাদেশ সরকারের কাছে অনুরোধ করব যেন আমাদের সহযোগিতা করে’।
বর্তমানে প্রবাসীদের জন্য দুই শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা করা হয়েছে। আর মারা গেলে ৩ লাখ টাকা অর্থ সহায়তা দেয়া হয়।
কাতার বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতা অধ্যাপক জসিম উদ্দিন বলেন, ‘করোনাভাইরাস হয়তো শেষ হয়ে যাবে। শেষ হয়ে যাওয়ার পরেই অনেক লোক চাকরি হারিয়ে দেশে ফিরবে তারা কিভাবে চলবে? এদের জন্য বাংলাদেশ সরকার যেন একটা বাজেট রাখে’।
কাতার বাংলাদেশ কমিউনিটি নেতা নুর মোহাম্মদ বলেন, ‘সরকার যেন প্রবাসীদের নিয়ে একটু চিন্তা করে সুনজর দেয় আমাদের উপর’। বাংলাদেশ দূতাবাসের তথ্য অনুযায়ী, কাতারে ৪ লাখ ১৬ হাজার বাংলাদেশি কর্মরত আছেন। দেশটি থেকে বছরে এক বিলিয়ন ডলারের বেশি রেমিট্য ন্স পাঠান প্রবাসীরা।
কাতারে এখন পর্যন্ত ২ লাখের বেশি মানুষের নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। ১৪ হাজারের বেশি মানুষ সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন বলে জানিয়েছে দেশটির স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়।
এর আগে, করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে অভিনব উদ্যোগ নেয় কাতার সরকার। ‘এহতেরাজ’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ চালু করা হয় দেশটিতে। অ্যাপে রেজিস্ট্রেশন না করে রাস্তায় বের হলে সর্বোচ্চ দুই লাখ রিয়াল জরিমানা ও তিন বছরের জেল হতে পারে।
এছাড়া মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার। নয়তোবা কঠোর শাস্তির বিধান শুরু করেছে দেশটি। মাস্ক না পরলে সেখানে তিন বছরের কারাদণ্ড ভোগ করতে হবে এবং একই সঙ্গে জরিমানাও দিতে হবে।
এখন পর্যন্ত কোনো দেশেই এমন শাস্তির ব্যবস্থা করা হয়নি। মাস্ক না পরার জন্য কাতারেই বিশ্বের সবচেয়ে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
গত ৩১ ডিসেম্বর চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরে প্রথম করোনার উপস্থিতি ধরা পড়ে। বর্তমানে বিশ্বের ২১৫টি দেশ ও অঞ্চলে করোনার প্রকোপ ছড়িয়ে পড়েছে। বিশ্বজুড়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়তেই আছে। মোট আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৪৭ লাখ। গোটা বিশ্বে ভাইরাসটি সংক্রমিত মৃত্যুর সংখ্যা ৩ লাখ ছাড়িয়েছে। সুস্থ হয়েছেন ১৬ লাখ ৪৮ হাজারেরও বেশি মানুষ।
এমআরএম/পিআর