প্রবাসীর স্বপ্ন ও বাস্তবতা

প্রবাস ডেস্ক
প্রবাস ডেস্ক প্রবাস ডেস্ক
প্রকাশিত: ১১:২৮ এএম, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২২

সুমন সিকদার, সিঙ্গাপুর

ভবঘুরে ছেলেটির লেখাপড়ার খরচ জোগাতে যখন পরিবারটি হিমশিম খায়। মায়ের গহনা, হালের গরু কিংবা এক টুকরো জমি বিক্রি করে তখন তার হাতে তুলে দেওয়া হয় বইয়ের বদলে একখানা পাসপোর্ট। লেখাপড়া করে অনেক বড় হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে বেড়ে উঠা ছেলেটি, একবুক দীর্ঘশ্বাস আর চাপা কান্না বুকে নিয়ে বসতে বাধ্য হয় বিমানের সিটে।

বিজ্ঞাপন

কি অবাক করা ব্যাপার! কলেজের বইয়ের জন্য মাত্র সামান্য কয়েক হাজার টাকার জোগাড় না হলেও, বিদেশ যাওয়ার জন্য কয়েক লাখ টাকার ব্যবস্থা হয়ে যায় নিমিশেই। ছাত্র জীবনকে বিদায় জানিয়ে নাম লেখায় কর্ম জীবনে, প্রবাসের মাটিতে বহু কষ্টের কাজ করলেও মুখ বুঝে সবই সয়ে যায়, বলা যায় না, বলা হয় না প্রিয় পরিবারকে। মনের মধ্যে তখন একটাই স্বপ্ন পরিবারের জন্য ভালো কিছু করার, সন্তানের জন্য ভালো কিছু রেখে যাওয়া।

সারাদিন কাজের পর ক্লান্ত দেহে প্লাউডের বিছানায় শুয়ে ছোট ছোট স্বপ্ন মনে বুনতে থাকে। মাথার ওপর থেকে ঋণের বোঝাটা সরে গেলেই, বাড়িতে সুন্দর একটি ঘর বানাবে, বিয়ে করবে, তারপর হাতে কিছু টাকা ক্যাশ হলেই প্রবাস জীবনকে বিদায় দিয়ে ফিরবে আপন দেশে।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

স্বপ্ন দেখতে বাধা না থাকলেও, স্বপ্ন পূরণের পথে শত সহস্র বাধা। অনেক সময় পারমিটটা রিনিউ না হলে ঋণ থাকতেই ফিরতে হয় দেশে। রিনিউ হলেও পরিবারের চাহিদা মেটাতে মেটাতে পার হয়ে যায় প্রায় যুগের কাছাকাছি।

সবাইকে বলা হয়, এইতো আর কয়েকটা দিন, তারপর একেবারে দেশে চলে আসবো। কিন্তু সেই কাঙ্ক্ষিত দিনটা আসে না সহজেই, খুব করে চাইলেও সহজে হয় না দেশে ফেরাটা।

অসংখ্য অগণিত স্বপ্নরা চাপা পড়ে যায় বাস্তবতার ধূলিঝড়ের নিচে। সেই ভাঙা স্বপ্নগুলো জোড়া লাগানোর বৃথা চেষ্টা করতে করতেই প্রবাসীদের জীবন যৌবনে ভাটা নেমে আসে। তবুও কি হয় স্বপ্ন পূরণ? মেলে কি সুখের দেখা? হয় কি সঠিক সময়ে দেশে ফেরা? হায়রে প্রবাস জীবন!

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এমআরএম/জেআইএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - jagofeature@gmail.com