গরল

চাইলেই মমকে ভুলতে পারি না!

শায়লা জাবীন
শায়লা জাবীন শায়লা জাবীন
প্রকাশিত: ১২:৩৮ পিএম, ১০ জুন ২০২৩
ছবি: সংগৃহীত

ওই দিনের ঠিক তিনদিন পর সামিরা ফোন করে জানালেন, সে মনোচিকিৎসকের কাছে এসেছিলেন শুনে শামীম খুবই অবাক হয়েছে এবং শামীম নিজেও আসতে রাজি হয়েছে তবে একা কথা বলতে চান পারিজাত রহমানের সাথে, সামিরার সামনে না। আগামী বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার বিকেল ৪টা...

পারিজাত রহমানের সামনে একজন মাঝারি গড়নের ভদ্রলোক বসা, শামীম আহসান। বয়স ৪৪, চাকরি করেন একটা আইটি কোম্পানির এইচআর এ।
হাসিখুশি প্রাণবন্ত চেহারা...

পারিজাত রহমান জিজ্ঞাসা করলেন,
কেমন আছেন?

এই তো চলে যাচ্ছে, আপনি কেমন আছেন?

পারিজাত রহমান বললেন, আমি ভালো আছি...
মনে মনে ভাবলেন তাকে কেউ সহসা জিজ্ঞাসা করে না কেমন আছেন, ভদ্রলোক নিশ্চয় জানেন এখানে কেন এসেছেন, তাও কুশলাদি জিজ্ঞাসা করেছেন, তার মানে উনি বেশ মিশুক, এজন্যই বন্ধুমহলে জনপ্রিয়।
মুখে বললেন, বলুন আপনাকে আমি কীভাবে সাহায্য করতে পারি?

জি আমি একটা ঝামেলায় আছি অনেকদিন যাবৎ, কিন্তু কখনো মাথায় আসেনি এ রকম কোনো মেন্টাল হেলথ কাউন্সেলিং এর সাপোর্ট নেওয়া যায়। ক’দিন আগে শুনলাম সামিরা এসেছিলো আপনার এখানে, শুনে একটু অবাকই হয়েছিলাম, কারণ আমার সমস্যা আসলে তাকে নিয়েই, হঠাৎ মনে হলো এটা একটা ভালো উদ্যোগ, ব্যথা মনে পুষে না রেখে একজন নিরপেক্ষ তৃতীয় পক্ষকে শেয়ার করা।

আচ্ছা বলুন...

সামিরা, আমার ওয়াইফ... অতিরিক্ত সন্দেহপ্রবণ এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভোগা একটা মেয়ে যার দরুন অতিমাত্রায় বৈষয়িক। একই সাথে সে বেশ চালাক যা আমার খুবই অপছন্দ।
আমি তাকে মানসিকভাবে অসুস্থ বলবো না, শুনতে খারাপ দেখায়, কিন্তু সে পুরোপুরি সুস্থ না।

যেমন...

শুনেছেন নিশ্চয়ই তার আগের হাসব্যান্ড তাকে মারতো এজন্য সে ডিভোর্স দিয়েছে, একদম ঠিক কাজ করেছে সে, এমন ছেলের সাথে কেন সংসার করতে হবে? এখানে তো তার কোনো দোষ ছিলো না। এজন্য তার সাথে আমার যখন প্রথম দেখা হয়, তখন শুনে খুবই মায়া লেগেছিলো এটা শুনে, সে প্রায়ই সেই কথা বলতো, মনমরা হয়ে থাকতো, তাকে কে বিয়ে করবে ইত্যাদি বলতো, আমি তাকে বুঝাতাম যেকোনো কারণে যে কারো ডিভোর্স হতে পারে, এটাকে এতো বড় ইস্যু বানানোর কি আছে?
কিছুদিন মন খারাপ থাকবেই, তবে সব বিচ্ছেদ কষ্টের না, কিছু বিচ্ছেদ শান্তির। তবুও সে একই কথাই বলতো।

আচ্ছা, তারপর...

তখন আমার সাথে অন্য একটা মেয়ের প্রেম ছিলো, মম। মম বেশ দূরে থাকতো, আমার সাথে তেমন দেখা সাক্ষাৎ হতো না কিন্তু দুজনেই দুজনকে খুব পছন্দ করতাম, ফোনে কথা হতো। খুবই মিস করতাম মমকে, দেখতে ইচ্ছে করতো কিন্তু ওর বাসা খুবই কড়াকড়ি ছিলো, তাই ফোনই ভরসা। হঠাৎ করে একদিন শুনি মম’র বাসায় তার বিয়ে ঠিক করে ফেলেছে, ছেলে বিদেশে সেটেল্ড, ডাক্তার। আমার মাথা খারাপ হয়ে গেলো, আমরা ঠিক করি নিজেরা কোট ম্যারেজ করবো। কিন্ত যেদিন ওর আসার কথা, সে আর আসতে পারে না। মমর বাড়ি থেকে মমকে আটকে দেয়, বলতে পারেন জোর করেই আটকে রেখেই ওর বিয়ে দিয়ে দেয়। সে আমার এক বছরের ছোট ছিলো। বেশ মুষড়ে গিয়েছিলাম তখন...

আমার কাছের বন্ধু বান্ধবীরা আমাকে অনেক বুঝিয়েছে, অনেকদিন কথা বলেছে, ফোনে, রেস্টুরেন্টে যে যেখানে পেরেছে যেন আমি হতাশায় ডুবে না যাই। লিমা আর তানিয়া সবচেয়ে বেশি হেল্প করেছে, বন্ধু শিমুলও।

ওই সময় সামিরার সঙ্গে পরিচয়, দেখতাম সে সবসময়েই মনমরা হয়ে থাকতো, একটা বন্ধুর বিয়ের অনুষ্ঠানে সবাই আমরা গিয়েছি, দেখি সেখানেও সামিরা এক কোনায় বসা, মুখ কালো করে। এভাবেই এক বছর গেলো, অনেক বন্ধু বান্ধবের বিয়ে হয়ে গেলো, আমার বাসা থেকে আমাকেও বলে, বিয়ের জন্য। ছবি দেখায় বা আমার কোনো পছন্দ আছে কিনা জিজ্ঞাসা করে...

আমি কিছুই বুঝে উঠতে পারি না, অনেক বান্ধবী ছিলো আমার, এখনো আছে, কিন্তু তারা তো বন্ধু, অন্যকিছু না, দুই একজনের সাথে কথা বলে কফি ডেটে গিয়ে দেখেছি, কাউকেই তেমন মনে ধরে না।
এভাবেই আরো দুই বছর গেলো।

এক বন্ধুর মেয়ের প্রথম জন্মদিনের দাওয়াত, সবাই বেশ খুশি মনে গিয়েছি, সামিরাও গিয়েছে, খাবার শেষ করে সিগারেট খাওয়ার জন্য বাইরে এসে দাঁড়াতেই দেখি সামিরা চলে যাচ্ছে, চোখে পানি। কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করতেই আরো কেঁদে বললো, জন্মদিনের অনুষ্ঠানে কোনো এক মেয়ে নাকি তাকে বলেছে তোমার এখনো বিয়ে হয়নি? তোমার আগের হাসব্যান্ড কি সত্যি মারতো নাকি তোমার কোনো সমস্যা আছে?

আমার খুব খারাপ লাগলো, আমি সামিরাকে তার বাসায় নামিয়ে দিয়ে আমার বাসায় ফিরলাম, সারারাত চিন্তা করলাম, তেমন তো কাউকে মনে ধরে না মম ছাড়া, তাহলে সামিরাকেই বিয়ে করি, মেয়েটার জীবনে একটা গতি হলো। সকালে বাবা মাকে বললাম সামিরাকে বিয়ে করতে চাই, বাসায় সবাই খুবই অবাক, কেউ রাজি না, আমার বড় ভাবি তো মুখ বেকিয়ে বললো এইটা তোমার কেমন পছন্দ, কত মেয়ে তোমার পেছনে লাইন দিয়ে আছে...

আব্বু আম্মুর মুখ কালো, বিকেলে বড় বোন এসে হাজির, বললো, আমার মাথা গেছে, আত্মীয়দের কী বলবে?

আমি বুঝলাম, এখানে মেয়েটার কী দোষ?
এটা তো যে কারো সাথে হতে পারে, আপা যদি তোমার ভাগে পড়তো এমন মাইর দেওয়া নেশাখোর জামাই, তুমি সংসার করতে? ডিভোর্স দিয়ে আর বিয়ে করতে না?
যেই দোষ তোমার না, সেই দোষের বোঝা কেন তুমি টেনে বেড়াবে?

তবু কেউ রাজি না।
বলে অন্য যেকোনো মেয়ে দিয়ে বিয়ে দেবে কিন্তু সামিরা না।

তখন আমি বললাম, মমকে খুঁজে এনে দাও, নয়তো বিয়ে করার দরকার নাই, এমন ভালো আছি।

এরপর আমার বড়ভাই সবাইকে বুঝিয়ে রাজি করলো, আমাদের বিয়ে হয়ে গেলো। মজার ব্যাপার হলো আমার কিছু বন্ধু বান্ধব ও আমার ওপর বিরক্ত হয়েছিল কেন সামিরাকে বিয়ে করছি, বন্ধু অপু তো বলেই বসলো, সামিরা মেয়ে হয়তো ভালো, কিন্তু তোর সাথে ঠিক ম্যাচ করে না। আবার অনেকে খুশি...

আমার আগেই অস্ট্রেলিয়া আবেদন করা ছিলো, বিয়ের পর সামিরার নাম ইনক্লুড করে দিয়েছিলাম। এক বছরের মাথায় আমার পি আর হয়ে যায়, আমরা অস্ট্রেলিয়া চলে আসি। এই এক বছরে সামিরা চেষ্টা করেছে আমাদের বাসায় মানিয়ে নিতে। আমার বড় ভাবি সুযোগ পেলেই বাঁকা কথা বলতো, আমার বোন কিছু বলতো না, কিন্তু আমার আম্মু একটু মনমড়া থাকতো, আব্বু চুপচাপ।

‘আচ্ছা, তার মানে আপনি সামিরাকে সামাজিক যন্ত্রণা থেকে বাঁচাতে বিয়ে করেছেন, ভালোবেসে না?’

হয়তো, ভালোলাগা কিছুটা ছিলো, তবে ভালোবাসা আসলেই ছিলো না, মম সবটা নিয়ে চলে গেছে।

‘এখন আপনারা কেমন আছেন?’

এটাই সমস্যা, আমার অনেক বন্ধুবান্ধব, ছেলে মেয়ে দুটোই, বন্ধু তো বন্ধু, তার আবার ছেলে মেয়ে কি?

কিন্তু সামিরা আমার মেয়ে বন্ধুদের সহজভাবে নিতে পারে না, সারাক্ষণ সন্দেহ, বাথরুমে গেলে বা ঘুমিয়ে গেলে মোবাইল ঘাঁটাঘাঁটি করে। উল্টাপাল্টা যা মনে আসে বলে, মাঝে মাঝেই মাথা গরম হয়ে যায়।

হাসব্যান্ড ওয়াইফ সম্পর্কে যদি বিশ্বাস না থাকে, তখন তা খুবই যন্ত্রণা, সারাক্ষণ আপনাকে কেউ সন্দেহ করছে, বিভিন্নভাবে বাজিয়ে দেখছে, সে যদি ঘরের মানুষ হয় তাহলে কী কিছু ভালো লাগে?

ওনার যদি অনেক ছেলেবন্ধু থাকে, প্রায়ই ফোনে কথা বলেন, বিষয়টা আপনি মেনে নেবেন?

না মানার কি আছে? বন্ধু তো বন্ধু। সমস্যা নেই তো।
অন্যকিছু হলে সমস্যা...

প্রথম পর্ব পড়ুন

তার মানে আপনি বলতে চাইছেন যেসব মেয়েদের সাথে আপনি কথা বলেন, তারা সবাই আপনার বন্ধু? প্রেমিকা না কেউ...

অবশ্যই বন্ধু, কিন্তু প্রেমিকা হতেও হয়তো বেশি সময় লাগবে না, সম্পর্ক যেভাবে গড়াচ্ছে...

যেমন?

ধরুণ, রোদেলা ঝলমলে ছুটির দিন, সামিরাকে বললাম চলো বিচে যাই, কিন্তু সামিরা বলবে না, শুধু শুধু বিচে না গিয়ে চলো শপিংয়ে যাই, আচ্ছা শপিং তো অন্যদিন ও যাওয়া যায়, তাই না?

অথবা সামনে ইস্টার ছুটি, বললাম, চলো নিউজিল্যান্ড যাই, ঘুরে আসি, সামিরা সাথে সাথে বলবে এতো টাকা শুধু খরচ না করে ওই টাকা দিয়ে বাসার কোনো ফার্নিচার কিনি। অথবা সে কয়েকটা ফ্যামিলির সঙ্গে ঘুরতে যাবে, তাতে খরচ কম, কিন্তু আমি চাই আমি আর সে যেতে, সে যাবে না।

সবকিছুই এমন করে, গেলোবার দেশে গিয়ে সব বন্ধুদের দাওয়াত দিয়ে রেস্টুরেন্ট এ খাওয়ালাম, সামিরা বাসায় এসে ভীষণ ঝগড়া, আমি নাকি খালি খালি টাকা নষ্ট করি, বন্ধুদের উচিত আমাকে খাওয়ানো।

এখানে কারো বাসায় দাওয়াতে গেলেও বিশ ডলারের বেশি কিছু কিনতে দেবে না, কিনলেই ঝগড়া।

আমার একটা বাড়ি আছে এখানে, এখন সে আরও একটা বাড়ি কিনতে বলে, দেশের সম্পত্তির ভাগ নিয়ে আসতে বলে, কেউ যদি বেড়ানো, খাওয়া, জীবন উপভোগ করা বাদ দিয়ে এই মাত্রার বৈষয়িক হয়ে যায় তাহলে কীভাবে কতদিন তার প্রতি মন থাকবে?
আপনি বলেন....
আমি তো তার মতো না।

আচ্ছা, এর মানে আপনাদের মাঝে পারস্পরিক বোঝাপোড়া নেই...

জি, আমরা হাসব্যান্ড ওয়াইফ, এক বিছানায় ঘুমাই, মানুষ মাত্রই সমস্যা না থাকলে শারীরিক চাহিদা থাকবে, সুতরাং সেটা হয়তো হয় মাঝে মধ্যে কিন্তু সামিরার সঙ্গে তো মানসিক সংযোগ করা যাচ্ছে না। সে আর আমি ভিন্ন মেরুর, এরপরেও আমি অনেক চেষ্টা করেছি, এজন্য বাচ্চা নিতে চাইনি, কিন্তু সে তার মা বোনের কথা শুনে পাগল হয়ে গেলো, তখন বললাম সারাদিন একই প্যাচাল শোনার চেয়ে ঠিক আছে বাচ্চা নাও। বাচ্চা হওয়ার পরে আরো ঝামেলা বাড়ছে, এখন কথায় কথায় বাচ্চার দোহাই দেয়...
আপনি বলেন, এটা কি ঠিক?

বাচ্চার বয়স চার মাত্র, এগুলো কি হীনমন্যতা বা ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল না?

এভাবে চলতে থাকলে তো আমার মন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, ধৈর্য্যশক্তি লোপ পাচ্ছে। মানুষের তো মানসিক শান্তির একটা জায়গা লাগে, জীবন তো শরীর সর্বস্য বা বাড়িগাড়ি সর্বস্য নয়...

এখন যদি আমার অন্য কাউকে ভালো লাগতে শুরু করে, বা কথা বলতে ভালো লাগে সেটা কি অস্বাভাবিক কিছু? মনের ওপরে তো কারো নিয়ন্ত্রণ নেই, আমি তো চাইলেই মমকে ভুলে যেতে পারি না, কিন্তু সামিরার সাথে তো খারাপ ব্যবহার বা অযথা সন্দেহ করি না।

আচ্ছা আপনি বলুন হাসব্যান্ড ওয়াইফের মাঝে ভালোবাসা, বিশ্বাস, সম্মান থাকলে কি কখনো তৃতীয়পক্ষ ঢুকতে পারে? এগুলো না থাকলেই অন্যকেউ ঢোকে।

সেই ঢোকাটা কি দোষের? একতরফা? কোনটাই না। একটা মানুষ একা হয়ে দিনের পর দিন শেষ হয়ে যাচ্ছে, তার মনের তো একটা জানালা দরকার, যেখানে সে অক্সিজেন নেবে, কার্বনডাই অক্সাইড বের করে দেবে।
কিন্তু যদি সারাক্ষণ কার্বন ডাই অক্সাইড ঢোকে তাহলে কি হৃদয় গরল হয়ে গেলো না?

‘তার মানে আপনার মন উঠে গেছে সামিরার ওপর থেকে, এখন শুধু দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এটা যদি উনি বুঝতে পেরে আলাদা হয়ে যেতে চান?

গেলে যাবে, কেউ যেতে চাইলে তাকে আটকানো ঠিক না, সামিরারও এমন ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করা ঠিক না। জীবন একটাই, কারো ক্ষতি না করে নিজের ইচ্ছেকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত।

আপনি কি মমর খোঁজ পেয়েছেন?

নাহ,
হয়তো একদিন খুঁজে পাবো, অথবা না...
কিন্তু মমকে আমি ভালোবাসি, সারাজীবন ভালো বাসবো, চাইলেই তো কাউকে হৃদয় থেকে বের করে দেওয়া যায় না
আবার মন না চাইলে, কাউকে জোর করে মনের ভেতরে রাখাও যায় না।

আচ্ছা আজ তাহলে উঠি, ভালো থাকবেন, সময় নিয়ে আমার কথা শোনার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

পারিজাত রহমান চুপচাপ শামীম আহসানের চলে যাওয়া দেখলেন।

এমআরএম/এএসএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]