খুলে দেওয়া হলো ইমাম শাফী (রাহঃ)’র সমাধি

আফছার হোসাইন
আফছার হোসাইন আফছার হোসাইন কায়রো-মিশর থেকে
প্রকাশিত: ১০:৪২ এএম, ২৬ জুলাই ২০২৩

বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতার দেশ মিশরের রাজধানী কায়রোর মৃত্যুপুরীতে (ডেড সিটি) শত শত সাহাবা, নবী মোহাম্মদ (সাঃ) এর পরিবারের সদস্য, অলি আওলিয়া ও বুজুর্গদের সঙ্গে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন ইমাম শাফেয়ী (রহঃ)।

গত দুই বছরের বেশি সময় করোনা মহামারির কারণে জিয়ারত বন্ধ থাকা ঈমামের মাকাবা বা সমাধিটি পূর্ণ সংস্কার করে উন্মুক্ত করে দেওয়া হলো মুসলিম জিয়ারতকারীদের জন্য।

বিজ্ঞাপন

কে সেই ইমাম শাফী (রাঃ)?

যে মহা মনীষীরা ইসলামের বিধি-বিধান সম্পর্কে গবেষণা ও চিন্তা করে অন্য মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন ইমাম শাফেয়ী (রহ.)। কুরআন হাদিস গবেষণা তথা ইজতিহাদের ক্ষেত্রে তার অবদান অনস্বীকার্য। তাকে সমকালীন যুগে ফফিহদের সর্দার বলা হতো।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

এছাড়া তিনি ইরাকের কুফা নগরীর মুফতি হিসেবেও পরিচিত ছিলেন। ইলমি ময়দানে তার অবদান অনস্বীকার্য। তিনি শাফেয়ী মাজহাবের প্রবর্তক।

আবু আবদুল্লাহ মুহাম্মাদ ইবন ইদ্রিস আল-শাফেয়ী (أبـو عـبـد الله مـحـمـد ابـن إدريـس الـشـافـعيّ‎‎) ইসলামের প্রধান চারটি মাজহাবের একটি শাফেয়ীকে শায়েখ আল-ইসলাম হিসাবেও সম্বোধন করা হয়।

বিজ্ঞাপন

বিজ্ঞাপন

যে বছর ইমাম আবু হানীফা (রাহঃ) ইন্তেকাল করেন সে বছর অর্থাৎ হিজরি ১৫০ সালে তৎকালীন মিশরের (বর্তমানে ফিলিস্তিন) আসকালনা প্রদেশের গাজা অঞ্চলে ইমাম শাফেয়ী জন্মগ্রহণ করেন।

তার পিতার নাম ইদ্রিস, দাদার নাম ওসমান, পর দাদার নাম শাফেয়ী। পর দাদার নামানুসারে তাকে শাফেয়ী বলা হয়। গাজা তার পিতৃভূমি ছিল না বরং তার পিতা ইদ্রিস একটা বিশেষ প্রয়োজনে সপরিবারে গাজায় যান। সেখানেই তার ছেলে মুহাম্মদের জন্ম হয় এবং তিনি ইন্তেকাল করেন।

বিজ্ঞাপন

দু’বছর বয়সে বাবার মৃত্যুর পর তার মা তাকে নিয়ে মক্কায় চলে আসেন এবং সেখানে তিনি লালিত-পালিত হন। ইমাম শাফেয়ী মক্কাতে বড় হয়েছেন। উচ্চ বংশীয় মর্যাদা নিয়ে তিনি বেড়ে উঠেছেন। কিন্তু তাকে জীবন যাপন করতে হয়েছে এতিম ও গরিবদের মতো।

তিনি দশ বছর বয়সে পবিত্র কুরআন ও মুয়াত্তা মুখস্ত করেন। পরবর্তীকালে মদিনায় গিয়ে ইমাম মালেক (রহঃ)-এর নিকট ইলমুল ফিক্হ ও মুয়াত্তা শিক্ষা করেন। সেখান থেকে তিনি ইয়েমেন চলে যান। তখন তার বয়স হয়েছিল ৩০ বছর। এখান থেকে তিনি ইরাক চলে এলে সেখানে প্রখ্যাত হানাফি ফকিহ ইমাম মুহাম্মদ ইবনে হাসান (রহঃ)’র সাক্ষাত পান এবং তার সাথে শরীয়তের বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় হয়। ১৯৮ হিজরী সালে তিনি মিশর ফিরে আসেন।

বিজ্ঞাপন

ঈমাম শাফেয়ী (রহঃ) অধ্যাপনার মাধ্যমে তার কর্মজীবনের সূচনা করেন। বাদশা হারুন আল-রশীদের খিলাফতকালে তিনি নাজরান প্রদেশের গভর্নর নিযুক্ত হন। কিন্তু সেখানে বেশি দিন চাকরি করতে পারেননি।

জাগোনিউজের খবর পেতে ফলো করুন

ইমাম শাফেয়ী (রহ) একজন মুহাদ্দিস, যুগশ্রেষ্ঠ ফিক্হবিদ ও কবি ছিলেন, হানাফি ও মালেকি ফিকহেও তিনি বিশেষ দক্ষ ছিলেন। ২০৪ হিজরীর রজব মাসের প্রথম দিন জুম্মার রাত্রিতে ৫২ বছর বয়সে, এই মহান ব্যক্তিত্ব আল্লাহ রাব্বুল আল-আমিন এর ডাকে সাড়া দিয়ে চির বিদায় নিয়ে ইহজগত ত্যাগ করলে, ইসলামী কায়রোর ডেড সিটিতে দাফন করা হয়।

এমআরএম/এএসএম

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - jagofeature@gmail.com