সময়
দিন দৌড়িয়ে যায় নিস্তরঙ্গতায়,
রাত্রি আসে শীতল উষ্ণতায়।
রাগ, দুঃখ, কষ্ট, হাসি, কান্না, আনন্দ, বেদনা—
সবই আসে যায়,
কিন্তু ‘সময়’কে ধরা যায় না।
‘সময়’ শুধু ফসকে চলে যায়,
ফুরসৎ দেয় না, কিছুতেই।
ছুটছে তো ছুটছেই…
যদি একটু ধরা যেতো সময়!
ধরে নিয়ে যেতাম পুকুর পাড়ে,
পাশে বসিয়ে রেখে ঢিল ছুড়তাম পানিতে।
ছুড়তাম আর ছুড়তাম, ছুড়তেই থাকতাম।
কিছু বললে বলতাম,
‘চুপচাপ বসো তো,
তোমার এত তাড়া কিসের?
তোমার জ্বালায় তো আমি কিছুই করতে পারছি না।’
অস্থায়ী এ জীবনে কেউ চিরস্থায়ী নয়,
সবাই চলে যাবে,
একটু রয়ে সয়ে যাও।
বড্ড তাড়াহুড়ো তোমার!
দিন তো দূর,
মাসও ঠিকঠাক বোঝা যায় না,
শুরু না হতেই শেষ—
এখন তো বছরও গড়িয়ে যাচ্ছে।
একটু স্থিরতা না দিলে,
অনুভূতিগুলো যে হারিয়ে যায়।
একটু বলি, শোনো…
মাঝে মাঝে কচ্ছপের গতি ধরো।
তাহলে সমুচাগুলো এয়ারফ্রায়ারে না দিয়ে
ডুবো তেলে ভাজতে পারতাম, বেশ মুচমুচে হতো।
আর কড়া জালে চা বানিয়ে,
আয়েশ করে চুমুক বসানো যেত।
একটু বসো, ‘এআই’কে না বলে,
তোমার কাছে জানতে চাই পুরনো দিনের খোঁজখবর—
‘লিওনার্দো দা ভিঞ্চি’র লিসা আসলে কেমন ছিলো?
‘ক্লিওপেট্রা’র মতো বুদ্ধিমতী কি এখন কেউ নেই?
‘জুলকারনাইন’ কি সত্যিই কেউ ছিলেন?
কোথায় থাকতেন তিনি?
আরও কত প্রশ্ন…
তুমি ছাড়া আর কে জানে পুরনো সবকিছু!
ধ্যাৎ, কিছুই করা হয় না।
কত্তদিন ছিপ ফেলে মাছ ধরা হয় না,
সমুদ্রের জলে শুয়ে আকাশ দেখা হয় না,
জাহাজের ডেকে দাঁড়িয়ে তারা গোনা হয় না,
পাহাড়ের চূড়ায় উঠে মেঘ ছোঁয়া হয় না,
মুষল ধারায় বৃষ্টিতে ভেজা হয় না।
জগতে একই সময়ে কত কিছুই ঘটে…
কিন্তু কিছুই না ভেবে তুমি শুধু দৌড়াও,
দৌড়াও…
ভোরের স্নিগ্ধ, নরম আলো দেখো না,
শিশির ভেজা সবুজ ঘাসের ঠান্ডা স্পর্শ জানো না,
সূর্যাস্তে আকাশে সাত রঙের মুহূর্ত দেখো না,
জোস্নার নরম আলোয় জোয়ার-ভাটার রূপ জানো না।
তুমি শুধু জানো,
ছুটে চলতে…
আর আমি ছুটে চলি,
তোমার পিছে পিছে...!!
এমআরএম/জিকেএস