লন্ডনে করোনার সঙ্গে যুদ্ধ করে ১৭০ দিন পর ঘরে ফিরলেন বাংলাদেশি

ফিরোজ আহম্মেদ বিপুল
ফিরোজ আহম্মেদ বিপুল ফিরোজ আহম্মেদ বিপুল
প্রকাশিত: ০৩:৩০ পিএম, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০

লন্ডনে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে ১৭০ দিন হাসপাতালে থাকার পর ১৮ সেপ্টেম্বর সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন প্রবাসী বাংলাদেশি দিলোয়ার হোসেন (৫৯)।

জানা গেছে, দিলোয়ার হোসেন পেশায় একজন মিনিক্যাব ট্যাক্সি ড্রাইভার। দেশের বাড়ি সিলেটে। তিনি বাংলাদেশি অধ্যুষিত পূর্ব লন্ডনের স্টেপনি গ্রিনে তার স্ত্রী, তিনকন্যা এবং এক ছেলে নিয়ে বসবাস করেন।

করোনা মহামারির শুরুতেই গত এপ্রিলে তিনি প্রচণ্ড বমি ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে পূর্ব লন্ডনের রয়েল লন্ডন হাসপাতালে ভর্তি হয়ে ১৭০ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। এর মধ্যে তিনি ১১৫ দিনই অজ্ঞান অবস্থায় নিবিড় পর্যবেক্ষণ ইন্টেনসিভ কেয়ারে ছিলেন।

দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমি এ বছরের প্রথম দিকে করোনায় আক্রান্তের কিছুদিন পূর্বে উমরাহ করে এসেছি। এছাড়া আমি একজন মিনিক্যাব ট্যাক্সি ড্রাইভার। লকডাউনে খুব বেশি কাজ করতে পারিনি। তবে কীভাবে আক্রান্ত হলাম বলতে পারছি না’।

তিনি বলেন, ‘বাসায় বেশ কয়েকবার বমি হয়েছে, জ্বর অনুভব করেছি। বমিই আমাকে বেশি অস্থির করেছিল। যখন আর কষ্ট সহ্য হচ্ছিল না তখন আমাকে দ্য রয়েল লন্ডন হাসপাতালে নিয়ে আসে সেই থেকে প্রায় ৫ মাস ২০ দিন আছি এখানে’।

করোনা আক্রান্ত সবচেয়ে বেশি সময় ধরে চিকিৎসাধীন ছিল দিলোয়ার তাই হাসপাতাল থেকে তার ছাড়পত্র ছিল এক ঐতিহাসিক মুহূর্ত। পুশিং চেয়ার থেকে হাতের লাঠি ছাড়াই একা উঠে দাঁড়িয়ে করিডোর দিয়ে হেঁটে হেঁটে গেট পর্যন্ত যান। এ সময় হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা কর্মচারীসহ সবাই আনন্দ উল্লাসে হাততালির মাধ্যমে দিলোয়ার হোসেনকে বিদায় জানান।

উপস্থিত দিলোয়ার হোসেনের মেয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে বলেন, ‘বাবাকে সুস্থভাবে বাসায় নিতে পারছি এটাই আমাদের সবচেয়ে বড় আনন্দ’।

হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, ‘দিলোয়ার আমাদের কাছে এক মিরাকল। আমরা আমাদের মতো করে সেবা করেছি। এ পর্যন্ত কত জনকেইতো সেবা দিয়েছি কিন্তু অনেককেই বাঁচাতে পারিনি। দিলোয়ারকে পেরেছি এটাই আমাদের আনন্দ’।

মৃত্যুর কাছ থেকে থেকে ফিরে আসা দিলোয়ার হোসেন হাসপাতালের চিকিৎসক নার্সদের প্রতি যেমন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন তেমনি ডাক্তার নার্সরাও এ বাংলাদেশির প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করেন।

এমআরএম/এমকেএইচ

প্রবাস জীবনের অভিজ্ঞতা, ভ্রমণ, গল্প-আড্ডা, আনন্দ-বেদনা, অনুভূতি, স্বদেশের স্মৃতিচারণ, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক লেখা পাঠাতে পারেন। ছবিসহ লেখা পাঠানোর ঠিকানা - [email protected]