‘কাজ নেই, দেশে যাওয়ার টাকাও নেই’
‘এখানে কাজ নেই, দেশে যাওয়ার টাকাও নেই। আমার মতো শতশত প্রবাসী খুব বিপদে দিন কাটাচ্ছে। দেখার যেন কেউ নেই। অনেকের দেশে যাওয়ার মতো বৈধতাও নেই। নানা কারণে অবৈধ হয়ে পড়া ওমানপ্রবাসীদের যেন দুর্ভোগের শেষ নেই’।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ওমান প্রবাসী এভাবেই বলছিলেন। মহামারি করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে অর্থনৈতিক মন্দায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মহীন হয়ে পড়েছে লাখো বাংলাদেশি। প্রবাসীদের স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ সংকট চলছে বলে মনে করছে অনেকে।
করোনায় ওলটপালট করে দিয়েছে অসংখ্য প্রবাসীর স্বপ্ন। প্রবাসে কাজ হারিয়ে অনেকেই টিকে থাকতে পারছে না। এমনকি যারা রয়েছেন, বেকার হয়ে অর্থাভাবে বিষাদময় এক একটি দিন কাটাচ্ছেন। অনেকে মহামারি শুরুর আগেই দেশে এসে এখন ফেরার পথে অকূল পাথার।
সংকটকে সম্ভাবনায় পরিণত করতে দক্ষ কর্মী পাঠানোর লক্ষ্যে উন্নত দেশগুলোর সঙ্গে চুক্তি করে দেশে টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন, ফেরত আসা প্রবাসীদের দক্ষ হিসেবে ধরে নিয়ে ডাটাবেজ তৈরি এবং অবৈধভাবে লোক পাঠানো রোধ করতে আদম দালালদের প্রতিহত করার চেষ্টা অব্যাহত রাখার ওপর গুরুত্বারোপ করেন বিশেষজ্ঞরা।
রামরুর সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ড. মোহাম্মদ জালাল উদ্দিন সিকদার বলেন, ‘বাজার ঠিক আগের মতো চালু হবে না। শ্রমবাজারে লোকের দরকার পড়লে চাকরিদাতারা করোনায় কম ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর দিকে ঝুঁকবে; ঝুঁকি কমোনোর জন্য। এক্ষেত্রে তাদের নজর থাকতে পারে নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং ভিয়েতনামের দিকে’।
তিনি বলেন, ‘করোনার আঘাত সামলে উঠার জন্য এখন ব্যবসায়ীরা তাদের বিনিয়োগের পরিমাণ আরও বাড়াবেন। এক্ষেত্রে খাদ্যের যোগান নিশ্চিতের জন্য কৃষিখাত সবচেয়ে বেশি প্রধান্য পাবে। স্বাস্থ্যখাতের গুরুত্ব যে কতটা অপরিসীম তাতো আবারো সবাই অনুধাবন করতে পেরেছে’।
বিনিয়োগ বাড়বে এখাতেও। এখন আমাদের দরকার বিশাল অংকের বিনিয়োগ হতে পারে এমন সম্ভাবনাময় খাতগুলোকে টার্গেট করা। দক্ষ জনবল তৈরির পাশাপাশি বাজার খুঁজতে থাকা। প্রশ্ন হলো সে বাজার ধরার জন্য আমরা কতটুকু প্রস্তুত?
এদিকে করোনায় দেশে এসে আটকেপড়া প্রবাসীদের পুনরায় নিজ নিজ দেশে পাঠানো এবং নতুন করে চাহিদামাফিক জনশক্তি পাঠানোর সবরকম প্রচেষ্টা চালাচ্ছে সরকার এমন কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন।
স্বল্প সময়ের মধ্যে আমেরিকা, ইউরোপ ও আফ্রিকায় বাজার তৈরির চেষ্টা চলছে। এতে কয়েক লাখ নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে। ইতোমধ্যেই কৃষিখাতে সম্ভাবনা আছে এমন কিছু স্থান পাওয়া গেছে বলেও জানান মন্ত্রী।
এমআরএম/এমকেএইচ