মিশরে মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন

নীলনদ আর পিরামিডের দেশ মিশরে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ও প্রবাসীদের নিয়ে দুই দিনব্যাপী যথাযোগ্য মর্যাদায় ৫২তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করেছে কায়রোস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস।
রোববার (২৬ মার্চ) মিশরে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মো. মনিরুল ইসলাম দূতাবাসের কর্মকর্তা কর্মচারী এবং প্রবাসীদের নিয়ে সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিবসের কর্মসূচি শুরু করেন।
পরে দূতাবাস হল রুমে এক আলোচনা সভায় কোরআন তেলওয়াত এবং মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে পাঠানো রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাণী পাঠ করে শোনানো হয়। এরপর দিবসটির তাৎপর্যের ওপর আলোচনা এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
অন্যদিকে পবিত্র রমজান মাস আগমনের প্রাক্কালে দূতাবাস থেকে ২০ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের আনুষ্ঠানিক সংবর্ধনা ও নৈশভোজের আয়োজন করা হয় রাজধানী কায়রোর নীলনদ উপত্যকায় অবস্থিত স্থানীয় ৫-তারকা হোটেল হলিডে ইন-এ।
অনুষ্ঠানে দুই শতের ও বেশি আমন্ত্রিত অতিথিদের মধ্যে প্রবাসী বাংলাদেশি, মিশরের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, ঊর্ধ্বতন সরকারি ও আধা-সরকারি কর্মকর্তা, ব্যবসায়ী ও রাজনৈতিক নেতা, বিভিন্ন দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত, কূটনৈতিক, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার প্রধান ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে আনন্দ ও উৎসবমুখর পরিবেশে অংশ নেন।
মিশরের বেসামরিক বিমান পরিবহনমন্ত্রী মো. আব্বাস হেলমি, প্রধান অতিধি (প্রাক্তন) প্রধানমন্ত্রী ড. এসাম শরাফ এবং সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমর মুসা ছিলেন গেস্ট অব অনার। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে মিশর সরকারের বিশেষ প্রতিনিধি হিসেবে সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মান কামেল বক্তব্য দেন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু এবং স্বাধীনতা সংগ্রামে সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। দু’দেশের জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের পর রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম তার স্বাগত বক্তব্যে ৫২তম মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের ওপর বক্তব্য দেন।
শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের গৌরবোজ্জ্বল স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তিনি তার বক্তব্যে জাতির পিতার আদর্শের চেতনায় উজ্জীবিত হয়ে একটি সুখী সমৃদ্ধ উন্নত দেশ হিসাবে বাংলাদেশকে গড়ার কাজে প্রত্যেককে তার নিজ নিজ অবস্থান থেকে সর্বাত্মক আত্মনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ ও মিশরের ঐতিহাসিক এবং বর্তমান সুসম্পর্কের ওপর আলোচনা করেন রাষ্ট্রদূত। তিনি বলেন, বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ জাতিতে উন্নীত করতে বদ্ধপরিকর। এরই মধ্যে বাংলাদেশের অর্জিত সাফল্য এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার বিষয়ে তিনি একটি সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেন। এ বছর মিশর-বাংলাদেশ কূটনৈতিক-সম্পর্ক স্থাপনের সুবর্ণজয়ন্তী পালনের বিষয়ে ঘোষণা দেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিশরের সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আয়মন কামেল মিশর-বাংলাদেশ সম্পর্ককে নতুন পর্যায়ে উন্নীত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মনিরুল ইসলাম, অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়া মিশরের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, আরব লীগের মহাসচিব, পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের নিয়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের কেক কাটেন।
এমআরএম