মোহর ছাড়া বিয়ে শুদ্ধ হবে?

ইসলামে বিয়ে শুদ্ধ হওয়ার জন্য মোহর নির্ধারণ করা জরুরি নয়। মোহর নির্ধারণ করা ছাড়া দুই জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে মেয়ের সম্মতিতে ইজাব ও বরের পক্ষ থেকে কবুল করা হলে বিয়ে হয়ে যাবে।
তবে মোহর স্ত্রীর জন্য আল্লাহ কর্তৃক নির্ধারিত একটি স্বতন্ত্র অধিকার। স্ত্রীর পরিবার থেকেও কেউ মোহর বাতিল করতে পারে না। বিয়ের সময় মোহর নির্ধারণ না করলেও মোহরে মিসিল বা স্ত্রীর সমান সামাজিক মর্যাদার অন্য নারীদের স্বাভাবিক মোহর তাকে দেওয়া ওয়াজিব হয়ে যায়। বিয়ের মোহর পরিশোধ করা স্বামীর ওপর ফরজ। কোরআনে আল্লাহ বলেছেন,
وَ اٰتُوا النِّسَآءَ صَدُقٰتِهِنَّ نِحۡلَۃً فَاِنۡ طِبۡنَ لَکُمۡ عَنۡ شَیۡءٍ مِّنۡهُ نَفۡسًا فَکُلُوۡهُ هَنِیۡٓــًٔا مَّرِیۡٓــًٔا
আর তোমরা নারীদেরকে উপহার হিসেবে তাদের মোহর দিয়ে দাও, তারপর যদি তারা তোমাদের জন্য তা থেকে খুশি হয়ে কিছু ছাড় দেয়, তাহলে তোমরা তা সানন্দে তৃপ্তিসহকারে খেতে পার। (সুরা নিসা: ৪)
মোহর স্ত্রীর পাওনা যা সে চাইলে পুরোপুরি বা আংশিক ক্ষমা করে দিতে পারে।
বিয়ের আকদের সময় যে মোহর নির্ধারণ করা হয়, আকদের পর স্বামী-স্ত্রী উভয়ে চাইলে তা বৃদ্ধি করতে পারে। স্ত্রী যদি মোহর বৃদ্ধির অনুরোধ করে এবং স্বামী স্বতস্ফূর্তভাবে তাতে রাজি হয়, তাহলে ওই বর্ধিত অংকও মোহরের সাথে যুক্ত হয়ে যায় এবং তা আদায় করাও ওয়াজিব হয়ে যায়।
যেমন বিয়ের আকদের সময় মোহর হিসেবে যদি চার লক্ষ টাকা নির্ধারণ করা হয়, বিয়ের পর স্ত্রী মোহর বাড়ানোর দাবি করলে স্বামী তাতে সম্মত হয়ে ছয় লক্ষ টাকা নির্ধারণ করে, তাহলে মোহর হিসেবে ছয় লক্ষ টাকাই আদায় করতে হবে।
মোহর নারীর মূল্য নয় বরং একটি উপহার যা স্বামীর আগ্রহের প্রমাণ বহন করে। কোরআনের আয়াতেও উপহার বলে স্পষ্ট করা হয়েছে যে এটা নারীর মূল্য বা বিনিময় নয়। একইসাথে কোরআনে মোহর স্ত্রীকে দেওয়ার নির্দেশ দিয়ে বোঝানো হয়েছে মোহরের মালিক হবে স্ত্রী, তার পরিবার বা অভিভাবকরা নয়। স্ত্রীর ইচ্ছে হলে মোহরে ছাড়ও দিতে পারে।
ওএফএফ/জিকেএস