আসুন, আল্লাহর নিরাপত্তা গ্রহণ করি 

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:১৬ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫
ছবি: পিক্সাবে

মুফতি মোহাম্মদ আদনান

যখন চারপাশের পরিবেশ দেখে নিজেকে ভীষণ অনিরাপদ মনে হয়, তখন আল্লাহর নিরাপত্তা গ্রহণ করুন। তিনি একমাত্র নিরাপত্তা দানকারী। তিনি যাকে নিরাপত্তা দেবেন, পৃথিবীর সবাই মিলেও তার ক্ষতি করতে পারবে না।

আল্লাহর নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার খাদেম হজরত আনাসকে (রা.) বলেন, জেনে রেখো, সমগ্র মানবজাতি যদি তোমাকে কোন উপকার করতে একত্রিত হয় তবে ততটুকুই পারবে যা আল্লাহ তাআলা তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। আর যদি সবাই মিলে তোমার কোন ক্ষতি করতে চায় তাহলেও কেবল ততটুকুই ক্ষতি করতে পারবে যা আল্লাহ তাআলা তোমার জন্য লিখে রেখেছেন। (মুসনাদে আহমদ: ২৬৬৯)

সব ধরনের ক্ষতি থেকে নিরাপদ থাকার আমল

যদি আপনি আশঙ্কা করেন পথে ঘাটে ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারেন তাহলে আল্লাহর নিরাপত্তা গ্রহণ করতে এই দোয়াটি পড়ুন:

بِسْمِ اللهِ الَّذِي لَا يَضُرُّ مَعَ اسْمِهِ شَيْءٌ فِي الْأَرْضِ وَلَا فِي السَّمَاءِ وَهُوَ السَّمِيعُ الْعَلِيمُ

বাংলা উচ্চারণ: বিসমিল্লাহিল্লাযী লা ইয়াদুররু মা‘আ ইসমিহী শাইউন ফিল আরদ্বি ওয়ালা ফিস সামাই, ওয়া হুয়াস সামীউল আলীম।

অর্থ: ওই আল্লাহর নামের সাহায্যে আশ্রয় প্রার্থনা করছি আসমান ও জমিনে যার নামের সাথে কোন কিছুই ক্ষতি করতে পারে না। তিনি সবকিছু শোনেন ও জানেন। (সুনানে তিরমিজি)

চতুর্মুখী বিপদ থেকে নিরাপদ থাকার আমল

যদি চতুর্মুখী বিপদের মধ্যে থাকেন, তাহলে আল্লাহর নিরাপত্তার ছায়াতলে আশ্রয় নিতে এ দোয়াটি পড়ুন; নিশ্চয়ই তিনি সব দিক থেকে আপনার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন:

اَللّٰهُمَّ احْفَظْنَا مِنْ بَيْنِ أَيْدِيْنَا وَمِنْ خَلْفِنَا وَعَنْ أَيْمَانِنَا وَعَنْ شَمَائِلِنَا وَمِنْ فَوْقِنَا، وَنَعُوْذُ بِعَظَمَتِكَ أَنْ نُغْتَالَ مِنْ تَحْتِنَا

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা ইহফাযনা মিন বাইনা আইদীনাওয়া মিন খলফিনা, ওয়া আন আইমানিনা ওয়া আন শামাইলিনা ওয়া মিন ফাওকিনা ওয়া নাউযু বি‘আযামাতিকা আন নুগতালা মিন তাহতিনা।

অর্থ: হে আল্লাহ! আপনি আমাদেরকে সামনে, পেছনে, ডানে, বামে ও ওপর থেকে হেফাজত করুন। আর আপনার মহিমার আশ্রয় চাই—যেন আমরা নিচ থেকে ধ্বংস না হই। (সুনানে আবু দাউদ)

রিজিকের নিরাপত্তার জন্য যে আমল করবেন

যদি রিজিকের ব্যাপারে শঙ্কিত হন তাহলে স্বচ্ছলতার জন্য ঘরে ঢোকার সময় সালাম দিন। নবীজি (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সাহাবি আনাসকে (রা.) বলেছেন, হে বৎস! যখন তুমি ঘরে প্রবেশ করবে, তখন তোমার পরিবারকে সালাম দাও! তোমাকে বরকত দান করা হবে। (সুনানে তিরমিজি) 

আনাস (রা.) বলেন, আমি জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বরকত পেয়েছি। আমার সন্তান, সম্পদ, নেক হায়াত ও এলেমের মধ্যে এতো অত্যাধিক বরকত পেয়েছি যে, কোনটির সঠিক সংখ্যা আমার জানা নেই।

আখেরাতের নিরাপত্তা যেভাবে গ্রহণ করবেন

মুমিনের জীবনের সবচেয়ে দামী সম্পদ হলো ইমানের সম্পদ। যার ইমানের সাথে মৃত্যু হলো সে সফল হয়ে গেল। ইমানের সঙ্গে মৃত্যুর সৌভাগ্য অর্জনের জন্য সকালে ও সন্ধ্যায় সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পাঠ করুন। নবীজি (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি সকালে সাইয়্যেদুল ইস্তেগফার পাঠ করবে, সন্ধ্যার পূর্ব পর্যন্ত সে যদি মারা যায় তাহলে জান্নাতে যাবে। আর যদি সন্ধ্যায় পাঠ করে, তাহলে সকালের পূর্ব পর্যন্ত মারা গেলে জান্নাতে যাবে।

সাইয়েদুল ইস্তিগফার হলো:

اللَّهُمَّ أَنْتَ رَبِّي لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ خَلَقْتَنِي وَأَنَا عَبْدُكَ وَأَنَا عَلَى عَهْدِكَ وَوَعْدِكَ مَا اسْتَطَعْتُ أَعُوذُ بِكَ مِنْ شَرِّ مَا صَنَعْتُ أَبُوءُ لَكَ بِنِعْمَتِكَ عَلَيَّ وَأَبُوءُ لَكَ بِذَنْبِي فَاغْفِرْ لِي فَإِنَّهُ لَا يَغْفِرُ الذُّنُوبَ إِلَّا أَنْتَ

বাংলা উচ্চারণ: আল্লাহুম্মা আনতা রাব্বি লা ইলাহা ইল্লা আনতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আবদুকা ওয়া আনা আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বিনি’মাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউলাকা বিজাম্বি ফাগফিরলি ফা-ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আনতা।

অর্থ: হে আল্লাহ! তুমি আমার রব। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমি আমাকে সৃষ্টি করেছ এবং আমি তোমার বান্দা। আমি যথাসাধ্য তোমার সঙ্গে প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফল থেকে তোমার কাছে আশ্রয় চাই। তুমি আমাকে যে নেয়ামত দিয়েছ তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গোনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারন তুমি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারবে না। (সহিহ বুখারি)

লেখক: খতিব, মকিম বাজার জামে মসজিদ, বংশাল, ঢাকা

ওএফএফ

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।