কেন শাবান মাসে বেশি রোজা রাখবেন?

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:০৭ পিএম, ০৫ মার্চ ২০২৩

রমজানের আগের মাস শাবান। মাসটি রমজানের আগমনী বার্তা নিয়ে আসে। শাবান মাসের শেষেই রমজানের একফালি চাঁদ দেখা যায় আকাশের সুদূর দিগন্তে। বিশ্বজুড়ে বইতে শুরু করে প্রতীক্ষার মহা পবিত্র মাহে রমজান। মাসজুড়ে রোজা রাখা হয রমজানে। এর বাইরে সপ্তাহে, মাসে এবং বছরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ দিনে নফল রোজা রাখার কথা হাদিসে বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু সর্বাধিক নফল রোজা রাখা হয় শাবান মাসে। কিন্তু কেন?

শাবান মাসে নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বেশি রোজা রাখতেন। রমজানের ব্যাপারে আগ্রহ, গুরুত্ব ও সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আল্লাহর রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম শাবান মাস থেকেই বেশি বেশি রোজা রাখতেন। তিনি এ মাসের বেশির ভাগ দিন রোজা রাখতেন। হাদিসে পাকে এসেছে-
হজরত উসামা বিন জায়েদ রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, ‘আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাসা করেছি, হে আল্লাহর রাসুল! শাবান মাসে আপনি যেভাবে রোজা রাখেন, সেভাবে অন্য কোনো মাসে রোজা রাখতে আমি আপনাকে দেখিনি।’

রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘রমজান ও রজবের মধ্যবর্তী এ মাসের ব্যাপারে মানুষ উদাসীন থাকে। এটা এমন মাস, যে মাসে বান্দার আমল আল্লাহর কাছে পেশ করা হয়। আমি চাই, আল্লাহর কাছে আমার আমল এমন অবস্থায় পেশ করা হোক, যখন আমি রোজাদার।’ (নাসাঈ ২১৭৯)

হজরত উম্মে সালামা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কখনো একাধারে দুই মাস রোজা পালন করতে দেখিনি। তবে হ্যাঁ, তিনি শাবান মাসকে রমজান মাসের সাথে মিলাতেন (রোজা পালনসহ) অর্থাৎ তিনি একাধারে শাবান ও রমজান মাসের রোজা পালন করতেন।' (নাসাঈ)

হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বর্ণনা করেছেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একাধারে (এত অধিক) রোজা পালন করতেন যে আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর রোজা পরিত্যাগ করবেন না। (আবার কখনো এত বেশি) রোজা পালন না করা অবস্থায় একাধারে সময় কাটাতেন যে আমরা বলাবলি করতাম, তিনি আর (নফল) রোজা পালন করবেন না। আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রমজান ছাড়া কোনো পুরো মাসের রোজা পালন করতে দেখিনি এবং শাবান মাসের চেয়ে কোনো মাসে অধিক (নফল) রোজা পালন করতে দেখিনি।’ (বুখারি ১৯৬৯)

নবিজি শাবান মাসে যেভাবে রোজা রাখতেন

শাবান মাসে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সর্বাধিক রোজা রাখার কথা সব হাদিসের কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। হজরত আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বলেন, ‘রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কখনো কখনো ধারাবাহিকভাবে রোজা রাখতেন। আমরা বলতাম, তিনি মনে হয় আর কখনো রোজা ছাড়বেন না। আবার কখনো এভাবে রোজা রাখা ছেড়ে দিতেন যে আমরা বলাবলি করতাম, তিনি মনে হয় আর কখনো রোজা রাখবেন না। রমজান ছাড়া অন্য কোনো মাসে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পুরো মাস রোজা রাখতে দেখিনি। শাবান মাসের মতো অন্য কোনো মাসে এত বেশি রোজা রাখতে আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখিনি।’ (মুসলিম ১১৫৬)

শাবান মাস এখন চলছে। এই মাসে ভালোভাবে রমজানের রোজা পালনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়া জরুরি। শাবানের প্রস্তুতি ভালো হলে রমজান বেশ ফলপ্রসূ ও আমলমুখর হবে ইনশাআল্লাহ। ফলে সারাটা বছর রমজানের প্রভাব ও প্রতিক্রিয়া ব্যক্তির জীবনে ও যাপনে পরিলক্ষিত হবে।

আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে শাবান মাসজুড়ে রোজা ও আমলে অতিবাহিত করার তাওফিক দান করুন। রমজানের প্রস্তুতি গ্রহণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

এমএমএস/জিকেএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।