হজের ৫ দিন যেসব কাজ করতে হয়

ইসলাম ডেস্ক
ইসলাম ডেস্ক ইসলাম ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৭:২৩ পিএম, ৩০ মে ২০২৩

হজের মাস জিলহজ। এ মাসে নির্ধারিত ৫ দিন পবিত্র নগরী মক্কার ৫ ঐতিহাসিক স্থানে অবস্থান করে সুনির্দিষ্ট কয়েকটি কাজ সম্পাদনের মাধ্যমে পবিত্র হজ সম্পন্ন করতে হয়। হজের এসব নিধারিত সময়, স্থান ও কাজগুলো কী?

হজের নির্ধারিত সময়
জিলহজ মাসের ৮ তারিখ মিনায় যাওয়ার মাধ্যমে হজের কাজ শুরু হয়। আবার ১২ তারিখ সন্ধ্যার আগে মিনা থেকে পবিত্র নগরী মক্কার কাবা শরিফে ফিরে আসার মাধ্যমে পাঁচদিন অতিবাহিত হয়। হজের নির্ধারিত সময় হলো ৮, ৯, ১০, ১১ ও ১২ জিলহজ।

হজের নির্ধারিত স্থান
হজ সম্পন্ন করার জন্য পবিত্র নগরী মক্কার পাঁচটি স্থানে অবস্থান করতে হয়। তাহলো-
১. মিনায় অবস্থান
মিকাত থেকে হজের ইহরাম বেঁধে ৮ জিলহজ মিনায় উপস্থিত হতে হয়।
২. আরাফাতের ময়দানে অবস্থান
জিলহজে ৯ তারিখ সকালে মিনা থেকে আরাফায় উপস্থিত হতে হয়। সন্ধ্যা পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করে দোয়া ও তওবা-ইসতেগফারে দিনটি অতিবাহিত করতে হয়।
৩. মুজদালিফায় রাতযাপন
জিলহজের ৯ তারিখ দিবাগত রাতটি মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে অতিবাহিত করতে হয়।
৪. জামারাতে পাথর নিক্ষেপ
মিনায় অবস্থিত জামারাতের নির্ধারিত স্থানে শয়তানকে পাথর নিক্ষেপ করতে হয়।
৫. বাইতুল্লায় তওয়াফে জিয়ারত
জামারাতে পাথর নিক্ষেপ করে কোরবানি (দমে শোকর) আদায় করে মাথামুণ্ডন করে ইহরাম থেকে বের হয়ে পবিত্র কাবা শরিফে এসে তওয়াফে জিয়ারত সম্পন্ন করা। তবে এ তওয়াফ ১০ জিলহজ মাথামুণ্ডনের পর থেকে ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে সম্পন্ন করতে হবে।

যেসব কাজে সম্পন্ন হবে হজ
হজ পালনে রয়েছে ফরজ ও ওয়াজিব কাজ। হজের কোনো ফরজ বাদ পড়লে বা নষ্ট হয়ে গেলে; পরের বছর তা পুনরায় সম্পন্ন করতে হবে। যার কোনো কাফফারা নেই। হজের ফরজগুলো হলো-
১. ইহরাম বাঁধা
ইহরাম বাঁধা অর্থাৎ হজের নিয়তে মিকাত (নির্দিষ্ট স্থান) থেকে পুরুষদের সেলাইবিহীন দুই টুকরো সাদা কাপড় পরা। নারীরা তাদের নিজ নিজ পোশাক পরবে।

২. আরাফাতের ময়দানে সমবেত হওয়া
হাদিসের পরিভাষায় ‘আলহাজ্জু আরাফাহ’ আরাফাতের ময়দানে উপস্থিত হওয়াই হজ। জিলহজের ৯ তারিখে সূর্যাস্তের আগের এক মুহূর্তের জন্য হলেও আরাফার ময়দানে অবস্থান করা। সূর্যাস্তের পর আরাফার ময়দান ত্যাগ করা।

৩. তাওয়াফে জিয়ারাহ করা
১০ জিলহজ কোরবানি ও মাথা মুণ্ডনের পর থেকে ১২ই জিলহজ সূর্যাস্তের আগ পর্যন্ত যে কোনো সময়ে পবিত্র কাবা শরিফ তাওয়াফ করাই হলো তাওয়াফে জিয়ারাহ। এটি ফরজ।

হজের ওয়াজিব কাজ
হজ পালনে অনেকগুলো কাজ করা ওয়াজিব বা আবশ্যক। যার কোনোটি বাদ পড়লে দম বা কোরবানি দিতে হয়। হজের আবশ্যক কাজগুলো হলো-
১. মিকাত থেকে ইহরাম বাঁধা
হজের উদ্দেশ্যে মিকাত (ইহরামের নির্দিষ্ট স্থান) ত্যাগ করার আগেই ইহরাম বাঁধা।

২. আরাফার ময়দানে সূর্যাস্ত পর্যন্ত অবস্থান
সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফাতেরর ময়দানে অবস্থান (ওকুফ) করা।

৩. কোরবানি করা
ক্বিরান বা তামাত্তু হজ আদায়কারীর জন্য কোরবানি আদায় করা এবং তা কংকর নিক্ষেপ ও মাথা মুণ্ডন করার মর্ধ্যবর্তী সময়ের মধ্যে সম্পাদন করা।

৪. সাঈ করা
সাফা ও মারওয়া পাহাড়ে সাঈ করা। সাফা পাহাড় থেকে সাঈ শুরু করা।

৫. মুজদালিফায় খোলা আকাশের নিচে অবস্থান (ওকুফ) করা।
৬. তাওয়াফে জিয়ারাত আইয়্যামে নহরের (দিনের বেলায়) মধ্যে সম্পাদন করা।
৭. জামরায় শয়তানকে কংকর নিক্ষেপ করা।
৮. মাথা মুণ্ডন বা চুল ছাঁটা। তবে মাথা মুণ্ডনের আগে কংকর নিক্ষেপ করা।
৯. মিকাতের বাইরের লোকদের জন্য তাওয়াফে সদর বা বিদায়ী তাওয়াফ করা।

মূল কথা হলো
জিলহজ মাসের ৮ তারিখ থেকে ৫ দিনে হজের নির্ধারিত স্থানে সুনির্দিষ্ট কাজগুলো সম্পাদন করার মাধ্যমে হজ সম্পন্ন করতে হয়। উল্লেখিত সিরিয়াল মতো কাজগুলো ঠিকঠাক পালনে পরিপূর্ণ হজ পালন সম্পন্ন হবে। ইনশাআল্লাহ।

আল্লাহ তাআলা সব হাজিকে হজের নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত জায়গায় নির্ধারিত কাজগুলো আদায় করার মাধ্যমে হজ সম্পাদন কার তাওফিক দান করুন। সব হাজির হজ কবুল করুন। আমিন।

এমএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।