হাদিস থেকে শিক্ষা

ইসলামে মানুষের জন্য ক্ষতিকর বিধান নেই

ওমর ফারুক ফেরদৌস
ওমর ফারুক ফেরদৌস ওমর ফারুক ফেরদৌস , আলেম ও লেখক
প্রকাশিত: ০৮:৪৭ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২৩

আবু সাঈদ সাদ ইবনে মালেক ইবনে সিনান খুদরি (রা.) বলেন, রাসুল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, কারো ক্ষতি করা বা ক্ষতির শিকার হওয়া কোনোটিই বৈধ নয়। (মুসনাদে আহমদ, সুনানে ইবনে মাজা)

এ হাদিস থেকে যে শিক্ষাগুলো আমরা পাই

১. আল্লাহর পক্ষ থেকে অবতীর্ণ ইসলামি শরিয়ত মানুষের ক্ষতি চায় না। ইসলামি শরিয়তে মানুষের জন্য ক্ষতিকর কোনো বিধান নেই। কোনো বিশেষ প্রেক্ষাপটে ইসলামের কোনো বিধান ক্ষতিকর হলে ইসলাম বিকল্প অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়, নিজের ক্ষতি করার অনুমতি দেয় না। ইসলামে বিভিন্ন বিধান এসেছে মানুষকে বিপদ ও ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে। যেমন অর্থনৈতিক ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে জুয়া হারাম করা হয়েছে, সামাজিক অনাচার ও শারীরিক ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে মদ ও অন্যান্য নেশাকর দ্রব্য হারাম করা হয়েছে।

২. ইসলামে কারো ক্ষতি করা বৈধ নয়। কোনো অজুহাতেই অন্যের ক্ষতি করা বৈধ হয় না। যেমন কোরআনে স্বামীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্ত্রীর ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে তাকে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ না রাখতে। আল্লাহ বলেন,
وَ اِذَا طَلَّقۡتُمُ النِّسَآءَ فَبَلَغۡنَ اَجَلَهُنَّ فَاَمۡسِکُوۡهُنَّ بِمَعۡرُوۡفٍ اَوۡ سَرِّحُوۡهُنَّ بِمَعۡرُوۡفٍ ۪ وَ لَا تُمۡسِکُوۡهُنَّ ضِرَارًا لِّتَعۡتَدُوۡا
যখন তোমরা স্ত্রীদেরকে তালাক দাও এবং তাদের ইদ্দত পূর্ণ হয়ে আসে, তখন হয় তাদেরকে ভালোভাবে গ্রহণ করে রেখে দাও, নইলে ভালোভাবে বিদায় দাও, বাড়াবাড়ি করে তাদের ক্ষতি করার উদ্দেশে আটকে রেখো না। (সুরা বাকারা: ২৩১)

সন্তানের কারণে বাবা-মায়ের ক্ষতিও ইসলাম অনুমোদন করে না। সন্তানকে দুধ পান করানো মায়ের জন্য ক্ষতিকর হলে ইসলাম বিকল্প অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়। কোরআনে সন্তানকে মায়ের দুধ খাওয়ানো প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন,
لَا تُکَلَّفُ نَفۡسٌ اِلَّا وُسۡعَهَا لَا تُضَآرَّ وَالِدَۃٌۢ بِوَلَدِهَا وَ لَا مَوۡلُوۡدٌ لَّهٗ بِوَلَدِهٖ

কারো ওপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া যাবেনা, সন্তানের কারণে মাকে ক্ষতিগ্রস্ত করা চলবেনা, বাবারও ক্ষতি করা যাবে না। (সুরা বাকারা: ২৩৩)

৩. ইসলামি শরিয়ত বড় ক্ষতির জন্য ছোট ক্ষতি মেনে নেওয়া অনুমোদন করে। যদি কখনও এমন হয় যে, একটি ছোট ক্ষতিকর কাজ না করলে বড় কোনো ক্ষতি হয়ে যাবে, তাহলে ছোট ক্ষতি মেনে নেওয়া বৈধ হয়। যেমন কোনো পরিস্থিতিতে আরোগ্য বা প্রাণ রক্ষার জন্য যদি মদ বা শরিয়তে হারাম কিছু খাওয়া অপরিহার্য হয়ে পড়ে, তাহলে ইসলাম তা খাওয়ার অনুমতি দেয়। হাত-পায়ের কোনো ব্যাধি শরীরে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকলে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শে হাত বা পা কেটে ফেলা বৈধ হয়।

ওএফএফ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।