মানুষের সেবায় এদেশে জীবন পার করলেন মার্গারেট রোজ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি মেহেরপুর
প্রকাশিত: ১২:৫১ পিএম, ০৮ মার্চ ২০১৮

দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন। সেবার জন্য দেশ ছেড়েছেন, ছেড়েছেন পরিবার। এমনকি গড়েননি সংসারও। সেবার মধ্যেই মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে চান ব্রিটিশ নাগরিক জিলিয়ান মার্গারেট রোজ। দীর্ঘ ৩৬ বছর ধরে নিভৃতে নীরবে সেবা দিয়ে যাচ্ছেন মেহেরপুর মুজিবনগরের একটি মিশনারি হাসপাতালে। সেবাই যেন জীবন তার। বাকিটা জীবন মানুষের সেবা দিয়ে এ দেশেই মরতে চান। নাগরিকত্ব পেলে নিজেকে ধন্য মনে করবেন তিনি।

ব্রিটিশ নাগরিক জিলিয়ান মার্গারেট রোজ জানান, রোগীরাই স্বজন, হাসপাতালই সংসার। সেবার ব্রত নিয়েই জীবনের ৭৬টি বছর পার করেছেন ব্রিটিশ নাগরিক জিলিয়ান মার্গারেট। বাকি জীবনটাও কাটাতে চান তাদের মাঝে। একটি অসুস্থ মানুষকে সুস্থ্য করার মাঝেই সুখ খুঁজে ফেরেন তিনি।

তিনি আরও জানান, মানুষের সেবার লক্ষ্যে এদেশে আসেন জিলিয়ান মার্গারেট রোজ। ১৯৮১ সালে নার্স হিসেবে মুজিবনগরের নিভৃত পল্লী বল্লভপুর মিশনারি হাসপাতালে যোগদান করেন। মানুষের সেবায় নিজেকে উৎসর্গ করে পা রাখতে পারেননি সংসার জীবনে। ধর্ম, বর্ণ নয় সেবাই যেন তার মূল লক্ষ্য। শুধুমাত্র ব্রিটিশ সরকারের পেনশনে চলে তার জীবন। হাসপাতাল থেকে নেন না কোনো অর্থ।

jagonews24

বল্লভপুর মিশনারি হাসপাতালের অন্য সেবিকারা জানান, শুধু এই এলাকার মানুষই নয়। দেশে বিভিন্ন অঞ্চলের হত দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের এখানে নার্সিং ট্রেনিং দিচ্ছেন। তাদের কাছে জিলিয়ার মার্গারেট রোজ একটি আদর্শ। তাই দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে প্রতি বছর এখানে নার্সিং ট্রেনিং নেওয়ার জন্য ভিড় করেন অনেকে।

হাসপাতালে সেবা নিতে আসা রোগী ও স্থানীয়রা জানালেন, দেশের বিভিন্ন জেলার অবহেলিত মানুষের চিকিৎসার জন্য খুলেছেন একটি বৃদ্ধাশ্রম। এতে এখন বাস করছেন, ১৫ অসহায় বৃদ্ধ-বৃদ্ধা। সেখানে তাদের খাওয়া পরার ব্যবস্থাও করেছেন তিনি। রাত কিংবা দিন সব সময় তার কাছে চিকিৎসা সেবা পেয়ে খুশি তারা।

মেহেরপুরের জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ জানান, সে যে সেবা দিচ্ছে তা এলাকার জন্য বিশাল একটা অবদান। তার স্বাভাবিক কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা করা হবে। নাগরিকত্ব তার পাওয়া উচিৎ। এজন্য সব ধরনের সহযোগিতা জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে করা হবে।

আসিফ ইকবাল/এফএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।