দেশে করোনার প্রথম ভ্যাকসিন নিচ্ছেন কে?
ভারত সরকারের দেয়া উপহারসহ ইতোমধ্যে মোট ৭০ লাখ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন দেশে এসে পৌঁছেছে। আগামী ২৭ জানুয়ারি থেকে ঢাকার পাঁচটি হাসপাতাল ও ৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সারাদেশে ৭ হাজার ৩৪৪টি হাসপাতাল কেন্দ্রে করোনা ভ্যাকসিন দেয়া হবে। তবে এখন অনেকের মনে প্রশ্ন, প্রথমে কে নেবেন করোনা ভ্যাকসিন?
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকা ব্যক্তিদের প্রথম দফায় করোনা ভ্যাকসিন নেয়া ও না নেয়া, ভারত থেকে উপহার হিসেবে পাওয়া ও বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে কেনা ভ্যাকসিনের মান নিয়ে প্রতিদিনই সরকার ও বিরোধীদলীয় রাজনৈতিক নেতাদের মধ্যে বাকযুদ্ধ চলছে।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আব্দুল মান্নান গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে প্রথম দিন সুশীল সমাজের ২০-২৫ জন প্রতিনিধি করোনা ভ্যাকসিন নেবেন বলে জানান। পরবর্তীতে এ সিদ্ধান্তের পরিবর্তন হয়।
শেষ পর্যন্ত জানানো হয়, রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ২৭ জানুয়ারি প্রথম করোনা ভ্যাকসিন নিয়ে দেশের ইতিহাসে নাম লেখাবেন একজন নার্স। ইতোমধ্যে কুর্মিটোলা হাসপাতালের শীর্ষ কর্মকর্তারা ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য তিনজন নার্সের নাম চূড়ান্ত করেন। তাদের মধ্যে শারীরিকভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ যিনি থাকবেন তাকেই প্রথম ভ্যাকসিন দেয়া হবে। তালিকাভুক্ত তিনজন নার্স কারা সে সম্পর্কে কঠোর গোপনীয়তা রক্ষা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ দিন ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন। কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের দায়িত্বশীল সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
সূত্র জানায়, আজ সোমবার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে প্রথম করোনা ভ্যাকসিন দেয়ার জন্য তিনজন নার্সের নাম চূড়ান্ত করে হাসপাতাল পরিচালকের কাছে জমা দেয়া হয়েছে। তাদের মধ্যে যেকোনো একজন হবেন দেশের প্রথম করোনা ভ্যাকসিনগ্রহীতা নার্স।
ভারত সরকারের উপহার হিসেবে দেয়া ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন গত ২১ জানুয়ারি ঢাকায় পৌঁছায়
সূত্র আরও জানায়, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে ভ্যাকসিন প্রদানের জন্য রোববার (২৪ জানুয়ারি) দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসরণ করে কীভাবে করোনা ভ্যাকসিন প্রদান করা হবে, সে সম্পর্কে ১০ জন নার্স, ৮-১০ জন চিকিৎসক এবং কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতালের দুজন প্রশিক্ষণ নেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নার্স জানান, কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভ্যাকসিনেটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন দুজন নার্স। তাদের সঙ্গে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে থাকবেন একটি বেসরকারি সংস্থার চারজন স্বেচ্ছাসেবক।
আগামী ২৭ জানুয়ারি করোনা ভ্যাকসিন কর্মসূচির উদ্বোধন উপলক্ষে বর্তমানে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, তথা স্বাস্থ্য অধিদফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ব্যস্ত সময় পার করছেন। দেশে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট উৎপাদিত অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার ৭০ লাখ করোনা ভ্যাকসিন মজুত রয়েছে।
গত ২১ জানুয়ারি ভারত সরকারের উপহার হিসেবে দেয়া ২০ লাখ ডোজ করোনা ভ্যাকসিন দেশে পৌঁছায়। এরপর আজ সোমবার সকালে ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে বাংলাদেশের জন্য বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের মাধ্যমে কেনা ৫০ লাখ ভ্যাকসিন ঢাকায় পৌঁছেছে।
২৭ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর ভ্যাকসিন কর্মসূচি উদ্বোধনের পর দিন থেকে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, কুয়েত-বাংলাদেশ মৈত্রী হাসপাতাল, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও মুগদা জেনারেল হাসপাতালে তিন হাজারেরও বেশি মানুষকে ভ্যাকসিন দেয়া হবে। তাদের এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণে রেখে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কি-না তা দেখা হবে।
এমইউ/এমএসএইচ/জিকেএস