আইনুল ছিলেন রক্ষণভাগে লড়াকু ফুটবলার

অবশেষে ক্যান্সারের কাছে হারতে হলো লড়াকু ফুটবলার শেখ মোহাম্মদ আইনুল হককে। ৬৯ বছর বয়সে সোমবার রাতে চলে গেছেন না ফেরার দেশে। মোহামেডান ও স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্য আইনুল ছিলেন রক্ষণভাগের লড়াকু ফুটবলার। তাকে পরাস্ত করা কঠিন ছিল প্রতিপক্ষের জন্য।
১৯৭১ সালের স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। দীর্ঘদিন খেলেছেন ঐতিহ্যবাহী মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের অধিনায়ক ছিলেন জাকারিয়া পিন্টু। তবে আইনুল হক কয়েকটি ম্যাচে অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেছেন।
আইনুল হক ছিলেন একজন ফুটবলযোদ্ধা। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলে খেলে তহবিল সংগ্রহ করেছেন মুক্তিযোদ্ধাদের সহযোগিতার জন্য। অথচ নিজের অসুস্থতার সময় সহযোগিতা পাননি তেমন কারো কাছ থেকে। ক্যান্সারে আক্রান্ত থাকাকালীন সাবেক সতীর্থ, ক্লাব, ফুটবল ফেডারেশনের কাউকে পাশে পাননি আইনুল হক। ফুটবল ছাডার পর স্ত্রী ও একমাত্র কন্যাকে নিয়ে সংসার চালাতে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সামান্য বেতনে চাকুরি করেছেন অনেক দিন।
১৯৬৩ সালে বাংলাদেশ পুলিশের হয়ে ঢাকার ফুটবলে অভিষেক হয়েছিল আইনুল হকের। ১৯৬৯ থেকে ১৯৭৬ পর্যন্ত খেলেছেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবে। মোহামেডান ছাড়ার পর এক মৌসুম খেলেছেন পিডব্লিউডিতে। জাকারিয়া পিন্টু, প্রতাপ শংকর হাজরা, কায়কোবাদ, কাজী সালাউদ্দিনের মতো নামকরা ফুটবলাররা ছিলেন তার সতীর্থ।
মঙ্গলবার বাদ যোহর ঝিগাতলা নতুন রাস্তা সংলগ্ন গাবতলা জামে মসজিদে নামাজে জানাজা শেষে বসিলা কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। সাবেক ফুটবলার আইনুল হকের মৃত্যুতে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন এবং মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব লিমিটেড গভীর শোক ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেনা প্রকাশ করেছে।
আইনুল হকের স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কবি, ক্রীড়াবিশ্লেষক সানাউল হক খান বলেন, ‘আইনুল হক ছিলেন মাঠের লড়াকু খেলোয়াড়। বিশেষ করে রক্ষণভাগে তাকে পরাস্ত করে প্রতিপক্ষ খুব কমই গোলের সুযোগ তৈরি করতে পেরেছে। তবে মাঠে তাকে যতটা আক্রমণাত্মক মনে হতো, বাইরে ততটা ছিলেন না। আইনুল মুক্তিযোদ্ধা ফুটবল দলকে প্রতিনিধিত্ব করেছেন এটা কম গৌরবের নয়। তবে আমরা তার এ গৌরবের যথাযথ মূল্যায়ন করিনি। অসুস্থ অবস্থায়ও তিনি লোকচক্ষুর অন্তরালে থেকে গেছেন।’
আরআই/আইএইচএস/এমএস