ভিডিও কলে অনুশীলন, দেরি করলেই জরিমানা
করোনাভাইরাসের কারণে স্থবিরতা বিশ্ব ক্রীড়াঙ্গনে। মাঠে নেই খেলা, হচ্ছে না অনুশীলনও। কিন্তু তাই বলে ভবিষ্যতের কথা না ভাবলে কি হয়? করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে তো ফের নামতে হবে মাঠে, সে চিন্তা থেকেই অভিনব এক ব্যবস্থাই নিয়েছে ইংলিশ ফুটবল ক্লাব লিভারপুল।
ক্লাবটির ম্যানেজার ইয়ুর্গেন ক্লপের মতে, সেলফ আইসোলেশনে থেকে সেরা বিষয় হলো ইন্টারনেটের মাধ্যমে খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখা যাচ্ছে। একইসঙ্গে এটিও জানিয়েছেন, কেউ যদি ভিডিও কল ধরতে দেরি করে, তাহলে তার জন্য জরিমানার ব্যবস্থাও করা হয়েছে।
জনপ্রিয় অনলাইন কনফারেন্স সফটওয়্যার জুমের মাধ্যমে দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ক্লপ। অনলাইন ভিডিও কনফারেন্সকে অন্যান্য স্বাভাবিক ট্রেনিং সেশনের মতোই গুরুত্ব দিচ্ছেন তিনি। যে কারণে কেউ এতে দেরি করলেই দিতে হবে জরিমানা।
করোনার কারণে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে নিশ্চিত শিরোপার দিকে এগুচ্ছিল লিভারপুল। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে তাদের পয়েন্টের পার্থক্য ছিল ২২, আর মাত্র ২টি জয় হলেই আনুষ্ঠানিকভাবে শিরোপা নিশ্চিত হয়ে যেত ক্লপের শিষ্যদের।
তা হয়নি। উল্টো সবাই এখন বন্দী যার যার ঘরে। এই সংকটময় পরিস্থিতি দূর হলে যেন সবাই স্বাভাবিকরুপে মাঠে ফিরতে পারে, এজন্যই মূলত অনলাইন ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করেছেন ক্লপ। এ ব্যাপারে অনেকে নেতিবাচক মন্তব্য করলেও, বেশ উপভোগই করছেন এ জার্মান কোচ।
দলের খেলোয়াড়দের সঙ্গে নিয়মিত অনলাইন বৈঠকের ব্যাপারে ক্লপ বলেন, ‘অনেকেই হয়তো বলতে পারেন, এটা অন্য স্বাভাবিক আলোচনার মতোই, যেমনটা হয়ে থাকে। কিন্তু বিষয়টা আসলে এমন নয়। আমি এটাও উপভোগ করি।’
লিভারপুলের এই অনলাইন সেশন সাধারণত শুরু হয় সকাল ১০টা থেকে। তার আগে সাড়ে ৯টা থেকেই চ্যাট ওপেন করে দেয়া হয় সবার জন্য। ত্রিশ মিনিটের মধ্যে সবাই যোগ দিলে শুরু হয় আলোচনা। আর কেউ দেরি করলেই তার জন্য রয়েছে জরিমানা।
পুরো প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে ধারণা দিয়ে ক্লপ বলেন, ‘আমরা যখন ১০টায় শুরু করি, তখন সাড়ে ৯টা বাজেই চ্যাট ওপেন করে দেয়া হয়। যাতে সবাই চলে আসতে পারে। যারা শুরুতে আসে, তাদের আড্ডায় পুরো ব্যাপারটা উপভোগ্য হয়ে ওঠে। এখন সবাই জানে কীভাবে কী কাজ করে। ফলে যারা পরে আসে, তারাও সময়মতো চলে আসে।’
তিনি আরও বলেন, ‘না এসেও উপায় নেই! কারণ আমরা জরিমানার ব্যবস্থাও রেখেছি। একটা জুম সেশনে বেশি দেরি করা মানে তোমাকে জরিমানা দিতে হবে। ২০২০ সালে এই অবস্থার ভাল দিক এটাই যে, আমরা টেকনিক্যাল সুযোগটা পাচ্ছি। কল্পনা করুন যে আশির দশকে এমন হয়েছে! তখন পুরো বিষয়টাই গোলমেলে হয়ে যেত। শুধু ফুটবল না, সব বিষয়ের কথাই বলছি।’
নিজের শিষ্যদের সঙ্গে এই ভিডিও সেশন উপভোগ করার কথা জানিয়ে লিভারপুল কোচ আরও বলেন, ‘এটা সত্যিই অসাধারণ। এতা একদম ভিন্ন। সবকিছু এখন অন্যরকম। আমরা করিও সব নতুন নতুন জিনিস। এমন ট্রেনিং সেশন করার আগে কখনও ভাবিনি যে এত উপভোগ্য হবে। আমি ছেলেদের দেখতে পাই, যতক্ষণ সেশন চলতে থাকে। সবাই দারুণ অবস্থায় আছে। তবে আপনি এদের মিস করবেনই। কারণ এই গ্রুপটা অসাধারণ। আপনি এদের সঙ্গে সবসময় থাকতে চাইবেন।’
এসএএস/পিআর