চট্টগ্রামে রিং রোড নির্মাণের নামে উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিক্ষোভ
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) কর্তৃক আউটার রিং রোড় ও শিল্পজোন নিমার্ণের নামে উচ্ছেদের প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে উপকূলীয় এলাকায় বসবাসকারী হাজার হাজার জনতা। যথাযত পুনর্বাসন ও ক্ষতিপূরণ ছাড়া উচ্ছেদ করা হলে জীবন দিয়ে তা প্রতিহিত করা হবে বলেও হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হালিশহর আনন্দপাড়া এলাকায় মানববন্ধন শেষে হাজার হাজার জনতা এক বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদী অনশন পালন করেছে।
জানা গেছে, দক্ষিণ হালিশহরস্থ মৎস্যজীবী ও জেলে সম্প্রদায় যুগযুগ ধরে বাপ দাদার বসত বাড়িতে বসবাস করে আসলেও সম্প্রতি পূর্ব কোনো নোটিশ বা ঘোষণা ছাড়াই বুধবার থেকে তাদের উচ্ছেদ শুরু করেছে সিডিএ ও গণপূর্ত বিভাগ।
এলাকার মৎস্যজীবী সুনিল চন্দ্র জলদাশ (৬০) জানান, দীর্ঘ ৪৫ বছর যাবত কয়েক দফা উচ্ছেদ হয়ে বেড়ীবাধের নিচে আশ্রয় দিলে পরিবার পরিজন নিয়ে সমূদ্রের মাছ ধরে এবং দিন মজুরী করে কোনো মতে দিনযাপন করে আসছি।
এবারও উচ্ছেদ শুরু করেছে। আমাদের ক্ষতিপূরণ এবং সরকারি জায়গায় পুনর্বাসনের আশ্বাস দিলেও তার কোনো সাড়া নেই।
পারুল দাশ, শিবনাথ দাশ, আলা দাশ, সুভাস ডুলি জলদাশসহ অনেকেই বলেন, সিডিএর চেয়ারম্যান আমাদের বারবার প্রতিশ্রুতি দিয়ে বলেছেন, ‘আপনাদের পুনর্বাসন ছাড়া আমরা কাজ করবো না। কিন্তু এই প্রতিশ্রুতি সিডিএর চেয়ারম্যান রাখতে পারেননি। তাই আমরাও ঘোষণা দিচ্ছি জীবন দিয়ে হলেও অবৈধ উচ্ছেদ প্রতিরোধ করবো। অস্থায়ী বসবাসরত বাসিন্দা ওমর ফারুক ও নুর উদ্দিন বলেন, জাইকা সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ক্ষতিগ্রস্থদের পুনর্বাসনসহ ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় সাড়ে ৫ হাজার কোটি টাকা দিলেও একটি টাকাও আমরা পায়নি।’
এ ব্যাপারে পতেঙ্গা-ইপিজেড পূজা-জন্মাষ্টমী পরিষদের সভাপতি কৃষ্ণপদ দাশ বলেন, জাইকা সিটি আউটার রিং রোড প্রকল্প বাস্তবায়নের অনেক আগে ৩৯, ৪০, ৪১, ৩৭, ৩৮ এবং ২৬ নম্বর উত্তর হালিশহর (ওয়ার্ডের আংশিক) এলাকায় মতবিনিময় সভা করে ঘোষণা দিয়ে ছিলেন যে, পুনর্বাসন ছাড়া কোনো প্রকল্পই তারা কাজ করবেন না। কিন্তু এটির সঙ্গে সিডিএ, গণপূর্ত বিভাগের উন্নয়ন কাজে বিস্তর অনিয়ম ও অসৎ পরিলক্ষিত হচ্ছে বলে আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
কয়েকদিন আগে সিডিএ থেকে ক্ষতিপূরণের টোকেন/চেক দিয়েছেন সেগুলোতেও অনিয়ম আর কর্তন করার অভিযোগ রয়েছে। সুনীল পাথর দাশ এবং শিরিন আকতার নামে দুইজন পরিচয় (টোকেন) নং (১২২/০৪৫৮) জানান, তাদের দেয়া টোকেনে ক্ষতিপূরণের পাশাপাশি পুনর্বাসনের কথা উল্লেখ্য থাকলেও তারা এখনো কিছুই পাননি।
জীবন মুছা/একে/পিআর