ইমোজি যেভাবে ভাষার অংশ হয়ে উঠলো

ইমোজি, জাপানি ভাষা ই অর্থ ছবি এবং মোজি অর্থ অক্ষর, ছবিযুক্ত অক্ষর। ফেসবুক, হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা ইনস্টাগ্রামে অনেক সময় এমন হয় যে দীর্ঘ শব্দ বা লাইন না লিখে একটি ইমোজি দিয়েই ভাব প্রকাশ করি আমরা। বর্তমানে ইউনিকোড স্ট্যান্ডার্ডে ৩ হাজার ৭৯০টিরও বেশি ইমোজি রয়েছে। এই ইমোজোগুলো বিভিন্ন আবেগ, বস্তু, স্থান, প্রাণি এবং আরও অনেক কিছু প্রকাশ করার জন্য ব্যবহৃত করে থাকেন।
প্রতি দিন প্রায় ১০ বিলিয়ন ইমোজি পাঠানো হয়। যার মধ্যে ফেসবুকে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ইমোজি। হোয়াটসঅ্যাপে প্রায় ৯০ শতাংশ মেসেজে ইমোজি থাকে। তবে কখনো ভেবেছেন কি, কীভাবে এই ছোট্ট ছোট্ট মুখায়বগুলো ভাষা প্রকাশের মাধ্যম হয়ে গেলো?
ইমোজির যাত্রা শুরু হয় ১৯৯৯ সালে জাপানে। শিগেতাকা কুরিতা নামের এক ডিজাইনার এনটিটি ডুকুমু মোবাইল প্ল্যাটফর্মের জন্য তৈরি করেছিলেন প্রথম ১৭৬টি ইমোজি। উদ্দেশ্য ছিল টেক্সট ম্যাসেজকে একটু বেশি মানবিক ও অনুভূতিপূর্ণ করে তোলা। এই ইমোজিগুলোর আকৃতি ছিল ১২×১২ পিক্সেল এবং তাতে হাসি, কান্না, সূর্য বা বৃষ্টি দেখানো হতো।
২০০০ সালের দিকে ইমোজি ধীরে ধীরে জনপ্রিয়তা পেতে থাকে, তবে সীমিত ছিল জাপানেই। বিশ্বমঞ্চে এর প্রবেশ ঘটে ২০১০ সালে, যখন ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম ইমোজিকে নিজেদের স্ট্যান্ডার্ড কোডে যুক্ত করে। ফলে অ্যাপল, গুগল, মাইক্রোসফটের মতো বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান ইমোজি সাপোর্ট দেওয়া শুরু করে।
ভাষাবিদদের মতে, ইমোজি নিজে পূর্ণাঙ্গ ভাষা নয়, কিন্তু এটি ভাষার একটি প্যারাল্যাঙ্গুয়েজ। অর্থাৎ টেক্সটের মধ্যে মুখাবয়ব, অভিব্যক্তি বা টোন বোঝাতে ব্যবহৃত সহায়ক মাধ্যম। আজ ইমোজি কেবল অনুভব প্রকাশ নয়, বরং সামাজিক-রাজনৈতিক বার্তার মাধ্যমও।
তবে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইমোজি ব্যবহারে কঠোর বিধিনিষেধও রয়েছে। অনেক দেশেই অনেক ইমোজি ব্যবহার করা আইনত দণ্ডণীয় অপরাধ। বিশেষ করে যৌন ও সমকামিতা বোঝায়। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রে পিস্তলসহ ফেসবুকে লাল ত্রিভুজ ইমোজি ব্যবহার করাও নিষিদ্ধ।
কেএসকে/এএসএম