নীলা মার্কেটে একদিন

ভ্রমণ ডেস্ক
ভ্রমণ ডেস্ক ভ্রমণ ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০৪ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০২৫
বালু নদীর তীরে অবস্থিত নতুন খাদ্য পর্যটনকেন্দ্র

মো. বিল্লাল হোসেন

সাম্প্রতিক সময়ে গ্যাস্ট্রোনমি ট্যুরিজম বা খাদ্য পর্যটনের পরিসর সম্প্রসারিত হচ্ছে দারুণভাবে। এর ধারাবাহিকতায় দেশের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বাহারি সব পদের খাবার খাওয়ার উদ্দেশ্যে মানুষ নানা জায়গায় গমন করছে প্রতিনিয়ত।

তেমনই একটি গ্যাস্ট্রোনোমি ট্যুরিজম সাইট হলো পূর্বাচল ৩০০ ফিটে অবস্থিত নীলা মার্কেট। সম্প্রতি নীলা মার্কেটে ঘুরে এসেছি। দেখে এসেছি দারুণ সব খাবারের সমাহার। সবকিছুর আদ্যোপান্ত থাকছে এই ফিচারে-

নীলা মার্কেটে একদিন

কোথায় অবস্থিত?

এটি নতুন ঢাকা নামে পরিচিত পূর্বাচল ৩০০ ফিট রোডের একদম নিকটেই অবস্থিত। বালু নদীর তীরে অবস্থিত একটি নতুন খাদ্য পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে দারুণ সমাদৃত হয়েছে সাম্প্রতিক সময়ে এই জায়গাটি। নীলা মার্কেটের পাশেই আছে প্রস্তাবিত পূর্বাচল স্টেডিয়াম। কুড়িল বিশ্বরোড থেকে ১৫ মিনিটের মতো সময় লাগে এখানে পৌঁছাতে।

কোন সময় খাবার সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়?

মূলত বিকেল তিনটার পর থেকে এখানে শুরু হয় খাবারের আয়োজন। বিকেলের সূর্য গড়িয়ে সন্ধ্যা নামতে নামতেই মানুষের আনাগোণা বাড়তে থাকে আর খাবারের পসরা সাজিয়ে বসেন দোকানিরা। অনেক রাত পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। দূর দুরান্ত থেকে মানুষজন আসে তাদের পরিবার-পরিজন নিয়ে।

আরও পড়ুন

কি কি পাওয়া যায়?

নীলা মার্কেট আসলে ভোজন রসিকদের জন্য দারুণ একটি জায়গা। এখানে যেমন আছে বিলাসবহুল রেস্তোরাঁ ও ক্যাফে। ঠিক তেমনভাবে আছে সাদাসিধে অনেক খাবারের দোকান। এসব দোকানে মূলত বিক্রি হয় হাঁসের মাংস ও চালের রুটি। এছাড়া আছে নানা ধরনের বাহারি পিঠা।

নীলা মার্কেটে একদিন

হতে পারে সেটি চিতই পিঠা বা ভাপা পিঠা। এছাড়া আছে গরুর কালা ভুনা ও দেশি মুরগির মাংস। তবে এখানে মূলত মানুষজন আসে হাঁসের মাংস ও চালের রুটি খাওয়ার জন্য। লাইভ কিচেনে মাটির পাতিলে রান্না করে বিভিন্ন ধরনের মাংস পরিবেশন করা হয় এখানে আর এজন্য মানুষের আকর্ষণ ও বেশি।

সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো, বেশ কয়েকটি দোকানের সামনে দেখা গেল মোরগ আটকে রাখা হয়েছে। সেদিকে চোখ যেতেই ভাবলাম মোরগগুলো কেন বাধা? একটু পর বুঝতে পারলাম কাস্টমারের চাহিদা অনুযায়ী এই মোরগগুলো জবাই করে রান্নার ব্যবস্থাও এখানে আছে। ব্যাপারটি আসলেই ইন্টারেস্টিং!

এ মার্কেটের আরও একটি প্রধান আকর্ষণ হলো মাটির ভাঁড়ে চমকপ্রদক চা পাওয়া যায় এখানে। অত্যন্ত সুসজ্জিত এই চা পান করতে দারুণ মজা। বিকালের আলতো রোদে চা পান করতে করতে হারিয়ে যেতে পারেন আপনার কৈশোরের সেই দিনগুলোতে।

এখানে আপনি আরও পাবেন সামুদ্রিক নানা ধরনের মাছের বারবিকিউ। আর হ্যাঁ, আপনি ৩০০ ফিট এর মূল রাস্তা থেকে যখন নীলা মার্কেটের দিকে হাঁটতে থাকবেন, তখন রাস্তায় দু’পাশে দেখবেন অসংখ্য মিষ্টির দোকান। আপনি চাইলেই খেতে পারবেন একদম গরম গরম মিষ্টি।

নীলা মার্কেটে একদিন

এছাড়া এখানে আছে শিশুদের জন্য নানা ধরনের রাইডের ব্যবস্থা ও শিশুদের খেলনা। আছে আড্ডা দেওয়ার মতো বেশ বড়সড় জায়গা। বিশেষ করে নদীর কূল ঘেঁষে তাল গাছের নিচ দিয়ে ছোট্ট ছোট্ট ঘরের মধ্যে বসে খাওয়ার যে ব্যবস্থা সেটি আসলেই অসাধারণ।

এছাড়া জায়গাটি ততটা জনবহুল না হয় খুব সহজেই মোটরসাইকেল, কার কিংবা অন্য যে কোন বড় যান বহন খুব সহজেই পার্কিং করা যায়। আপনি যদি সত্যিকারের ভোজন রসিক হয়ে থাকেন, তাহলে ঘুরে আসতে পারেন পূর্বাচলের নীলা মার্কেট।

কীভাবে যাবেন?

ঢাকার যেকোন প্রান্ত থেকে প্রথমে কুড়িল বিশ্বরোডে আসবেন। এরপর কুড়িল বিশ্বরোড থেকে বিআরটিসি বাস কিংবা সিএনজিতে করে নীলা মার্কেটে যাওয়া যাবে। বিআরটিসি বাসে ভাড়া পড়বে ৩০-৪০ টাকা। আর সিএনজিতে আসলে ভাড়া একটু বেশি পড়তে পারে। এছাড়া বাইক ও মাঝে মাঝে মাইক্রোবাস ও দেখা যায়। আপনি চাইলে এগুলোর মাধ্যমে আসতে পারবেন খুব সহজে।

লেখক: প্রভাষক, খাদ্য প্রকৌশল ও পুষ্টি বিজ্ঞান বিভাগ, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব বাংলাদেশ

জেএমএস/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।