ঠাকুরগাঁওয়ে খরা

বর্ষা মৌসুমেও আমন ধান রোপণে বিপাকে কৃষক

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি ঠাকুরগাঁও
প্রকাশিত: ১২:২৯ পিএম, ৩০ জুলাই ২০২৩

ঠাকুরগাঁওয়ে ভরা বর্ষা মৌসুমে শ্রাবণের ১৪ তারিখ পেরিয়ে গেলেও দেখা মেলেনি পর্যাপ্ত বৃষ্টির। অন্য বছর এ সময় মাঠ-ঘাটে বৃষ্টির পানিতে স্রোত বয়ে গেলেও এবার খরায় মাঠ-ঘাট এখনো শুকনো। এতে আমন ধান রোপণে বিপাকে পড়েছেন জেলার কৃষকেরা।

জানা যায়, অন্য জেলা থেকে ঠাকুরগাঁও কিছুটা উঁচু জায়গায় অবস্থিত। ফলে বৃষ্টির পানি দীর্ঘদিন জমে না। কিছুটা থাকলেও শুধু বর্ষা মৌসুমে ফসলি জমিগুলোয় পানি জমে। এবার বৈশাখ, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ় ও শ্রাবণ মাসের মাঝামাঝি সময়েও তেমন বৃষ্টিপাত না হওয়ায় ফসলি জমির পানি শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে। তারপরও থেমে নেই কৃষকরা। বৃষ্টি হওয়ার আশায় শ্যালো মেশিনের মাধ্যমে সেচ দিয়ে আমন ধান রোপণ শুরু করেছেন তারা। কৃষকেরা পানি ধরে রাখার জন্য জমির আইল সংস্কার, জমিতে চাষ, সেচ ও ধানের চারা রোপণ এবং ক্ষেতের পরিচর্যায় ব্যস্ত।

বর্ষা মৌসুমেও আমন ধান রোপণে বিপাকে কৃষক

সদর উপজেলার মালিগাঁও গ্রামের কৃষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, ‘এবার রাসায়নিক সার ও কীটনাশকসহ মজুরির দাম বৃদ্ধি এবং বৃষ্টি না হওয়ায় মেশিনের সেচ দিয়ে ধান রোপণের খরচ দ্বিগুণ হচ্ছে। তাছাড়া বিদ্যুতের অসহনীয় লোডশেডিংয়ে সেচ ব্যবস্থা চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এবার আমান ধান উৎপাদন ও ফলনে অনিশ্চয়তায় ভুগছি।’

আরও পড়ুন: লবণাক্ত মাটিতে কেনাফ চাষে সফলতার আশা

বিশ্বাসপুর গ্রামের কৃষক নজরুল ইসলাম বলেন, ‘পানি নাই। তাই সময়মতো ধান রোপণ করতে পারছি না। যদিও মেশিনে সেচ দিয়ে কিছু ধান লাগিয়েছি। তা-ও শুকিয়ে ধানের গাছ লালচে হয়ে যাচ্ছে। মেশিনে এক বিঘা জমিতে সেচ দিতে প্রায় ১ হাজার টাকা খরচ হচ্ছে। এবার চাষ, সেচ ও দিনমজুরের খরচ অনেক বেশি। তাই এবার ধান উৎপাদনে খরচ অনেক বেশি হয়েছে।’

পীরগঞ্জ উপজেলার বনবাড়ি গ্রামের কৃষক মাঘু রাম বলেন, ‘চলতি মৌসুমে বৃষ্টির দেখা নাই। যদিও একটু বৃষ্টি হয়, সেই বৃষ্টিতে মাটিই ভেজে না। এখন শ্যালো মেশিনের পানি দিয়ে ধান লাগানো শুরু করেছি। এছাড়া তাপদাহের কারণে মাটি শুকিয়ে রোপণ করা ধানের গাছ মরে যাচ্ছে।’

বর্ষা মৌসুমেও আমন ধান রোপণে বিপাকে কৃষক

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, আমন ধান উৎপাদনের জন্য জেলায় ১ লাখ ৩৭ হাজার ১০০ হেক্টর জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৩০ মেট্রিক টন। সেচের জন্য এখন পর্যন্ত গভীর নলকূপ ১ হাজর ৯০টি ও অগভীর নলকূপ ১৬ হাজার ৭৫টি, এলএলপি ৪২টি এবং সোলার সেচ পাম্প ৬২টি চালু হয়েছে।

আরও পড়ুন: সোনালি আঁশকে ঘিরে স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম জাগো নিউজকে বলেন, ‘এবার বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকায় বিএডিসি ও বরেন্দ্রকে বন্ধ থাকা সেচযন্ত্র দ্রুত চালু করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া কৃষকদের আমন চাষে সব ধরনের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।’

তানভীর হাসান তানু/এসইউ/জেআইএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।