ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের ব্যাংক হিসাব তলব করেছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)। ১৫ জুলাই তার ও পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয় ব্যাংকগুলোতে।
গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেয়। কিন্তু এক বছর না পেরোতেই বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে বিএফআইইউ এ উদ্যোগ নেয়। এরপর থেকেই ওবায়েদ উল্লাহ বিভিন্ন মহলে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন।
এরই অংশ হিসেবে বুধবার (১৬ জুলাই) তিনি বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ে গিয়ে গভর্নরের সঙ্গে দেখা করতে চেষ্টা করেন। নিচতলায় দীর্ঘসময় অপেক্ষা করেও তিনি গভর্নরের সাক্ষাৎ পাননি। পরে এক ডেপুটি গভর্নরের সঙ্গে দেখা করে ফিরে যান।
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ডেপুটি গভর্নর আমাকে বলেছেন, স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে ব্যাংক চেয়ারম্যানদের হিসাব তলব করা হচ্ছে। এটা কেবল আমার নয়, ধাপে ধাপে সব ব্যাংকের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে। ব্যাংকখাতে সংস্কারের অংশ হিসেবে আমি এই পদক্ষেপকে ইতিবাচকভাবে দেখি।
আরও পড়ুন
ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ওবায়েদ উল্লাহর ব্যাংক হিসাব তলবওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদ বিগত সরকারের আমলে সোনালী ও রূপালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। ২০২৩ সালের ৫ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংক তাকে ইসলামী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে পাঁচ সদস্যের একটি নতুন পর্ষদ গঠন করে। এর ধারাবাহিকতায় এখন পর্যন্ত ১৪টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করেছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সম্প্রতি ইসলামী ব্যাংকে নতুন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক অধ্যাপক জোবায়দুর রহমানকে স্বতন্ত্র পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তাকে ব্যাংকের পরবর্তী চেয়ারম্যান করা হতে পারে—এমন আলোচনা চলছে। এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে ওবায়েদ উল্লাহকে মৌখিকভাবে ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে।
এরই মধ্যে গত সপ্তাহে জোবায়দুর রহমানের পদত্যাগ দাবিতে ইসলামী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ হয়। ‘শেয়ারহোল্ডার ও আমানতকারীদের’ ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচির পেছনে বর্তমান চেয়ারম্যানের ঘনিষ্ঠদের ভূমিকা রয়েছে বলে জানা গেছে।
এমন প্রেক্ষাপটে ওবায়েদ উল্লাহ আল মাসুদের ব্যাংক হিসাব তলব করলো বিএফআইইউ। ব্যাংকগুলোতে পাঠানো চিঠিতে তার স্ত্রী মারজিনা বেগম (মুনমুন মাসুদ), দুই ছেলে—জুন্নুন সাফওয়ান ও জুনায়েন জুলকার নায়েন তিয়ান এবং মেয়ে তাসমিয়া তারান্নুম নাওমির ব্যাংক হিসাব সম্পর্কিত বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়েছে।
তাদের নামে পরিচালিত অথবা স্বার্থ সংশ্লিষ্ট অন্য নামে থাকা হিসাব, সঞ্চয়পত্র, বন্ড, লকার, স্টুডেন্ট ফাইল, ক্রেডিট বা প্রিপেইড কার্ড, গিফট কার্ড—এবং পাঁচ লাখ টাকা বা তদূর্ধ্ব অঙ্কের লেনদেন সংক্রান্ত তথ্যও চেয়েছে বিএফআইইউ। ১৫ জুলাইয়ের মধ্যে এসব তথ্য জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এমনকি আগে পরিচালিত হয়ে এখন বন্ধ হয়ে যাওয়া কোনো হিসাব থাকলেও তা জানাতে বলা হয়েছে।
ইএআর/ইএ