বগুড়ায় গুলিবিদ্ধ যুবলীগ নেতা গ্রেফতার


প্রকাশিত: ১০:৪৪ এএম, ০৮ মার্চ ২০১৬

বগুড়ার শাজাহানপুরে হত্যা মামলায় গ্রেফতারকৃত আসামি যুবলীগ নেতা সাজেদুল ইসলাম লিটনকে (৩০) ছিনিয়ে নেয়ার সময় সহযোগীদের ককটেল হামলায় চার পুলিশ আহত হয়েছেন। এসময় পালাতে গিয়ে লিটনও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। মঙ্গলবার ভোরে উপজেলার দুবলাগাড়ি বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

গুলিবিদ্ধ লিটন শাজাহানপুর উপজেলার আমরুল ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক। পুলিশ প্রহরায় তাকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

শাজাহানপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি রাতে দুর্বৃত্তরা করতোয়া নদীর তীরে গ্রামীণফোন ফাস্ট ডিস্ট্রিবিউশন অফিসের বিক্রয় কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মানিককে (৩০) শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। এরপর তার কাছে থেকে নগদ টাকাও ছিনিয়ে নেয়া হয়।

পরদিন সকালে নদীর ধার থেকে তার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এই ঘটনায় গ্রেফতারকৃত দুই আসামি আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তি দিয়েছে। তারা স্বীকারোক্তিতে জানায়, গ্রেফতার হওয়া লিটন নিজে বুকের উপর উঠে মানিককে শ্বাসরোধে হত্যা করে।

থানা সূত্র জানায়, সোমবার ভোরে গোপনে সংবাদের ভিত্তিতে খবর পেয়ে প্রথমে ডেমাজানি গ্রামে বাড়ির কাছ থেকে চাঁন মিয়ার ছেলে ও আমরুল ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাজেদুল ইসলাম লিটনকে গ্রেফতার করা হয়। সেখানে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি অস্ত্র থাকার কথা স্বীকার করেন। এরপর তাকে নিয়ে পুলিশ দুবলাগাড়ি বাজার এলাকায় অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান শুরু করে পুলিশ। এসময় তাকে (লিটন) ছিনিয়ে নিতে সহযোগীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ৪/৫টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়।

ককটেলের আঘাতে অভিযানে অংশ নেয়া এক কর্মকর্তাসহ চার পুলিশ আহত হয়েছে। এ সুযোগে লিটন পালানোর চেষ্টা করলে পুলিশ তাকে লক্ষ্য করে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলিবর্ষণ করে। এতে লিটন ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। পরে তাকে পুলিশ প্রহরায় শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

এ ঘটনার পর পুলিশ আশেপাশের এলাকায় তল্লাশি চালিয়ে চারটি ককটেল, তিনটি রামদা ও একটি ছুরি উদ্ধার করে।

ককটেলের আঘাতে আহতরা হলেন, শাজাহানপুর থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই কালাচাঁদ ঘোষ, কনস্টেবল আব্দুল হামিদ, কনস্টেবল মেহের আলী ও কনস্টেবল সবুজ মিয়া। আহতরা বগুড়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।

শাজাহানপুর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন জানান, লিটন সুস্থ হবার পর তাকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। কারণ এই ঘটনা ছাড়াও তিনি এলাকার মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। আর হামলার ব্যাপারে এসআই কালাচাঁদ ঘোষ শাজাহানপুর থানায় তার বিরুদ্ধে অস্ত্র ও বিস্ফোরক এবং পুলিশের উপর হামলার ঘটনায় পৃথক দুইটি মামলা দায়ের করেছেন।

ঘটনা সম্পর্কে গুলিবিদ্ধ লিটনের স্ত্রী শাহানা বেগম জানান, পুলিশ শত্রুতা করে ঘুম থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে তার স্বামীর পায়ে গুলি করেছে। তার বিরুদ্ধে এলাকায় কোনো অভিযোগ নেই। রাজনীতি করার কারণে ২০১১ সালে তার বিরুদ্ধে একটি মারামারি মামলা হয়। এছাড়া অন্য কোনো মামলা নেই তার বিরুদ্ধে। আর হত্যা ঘটনার সঙ্গে তিনি কোনো ভাবেই জড়িত নয়।

এ ব্যাপারে আমরুল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান বলেন, লিটন একটু উ-শৃঙ্খল টাইপের ছেলে। তবে এলাকার মাদক ব্যবসার সঙ্গে সে জড়িত ছিলো এমন কোনো তথ্য তার জানা নেই।

উল্লেখ্য, গত ১৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টার দিকে দুবলাগাড়ি বাজারের অদূরে করতোয়া নদী থেকে শাজাহানপুর থানা পুলিশ গ্রামীণ ফাস্ট ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির বিক্রয় কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মানিকের (৩০) বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করেছিল।

এআরএ/আরআইপি

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।