সুন্দরবনে বন্দুকযুদ্ধে ৪ বনদস্যু নিহত
বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালী দরজার খাল এলাকায় র্যাব ও কোস্টগার্ডের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে বনদস্যু নয়ন বাহিনীর প্রধান মনিরুল ইসলাম ও তার ৩ সহযোগী নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল ৭টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় বনদস্যুদের ব্যবহৃত ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র এবং ৪০০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। নিহত অপর বনদস্যুরা হলেন- উপপ্রধান এনামুল, গিয়াস ও হাসান।
র্যাব-৮ এর কমান্ডার ফরিদুল আলম ও কোস্টগার্ডের পশ্চিম জোন কমান্ডার মেহেদী মাসুদ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, সুন্দরবনের কচিখালী এলাকায় যৌথ টহলের সময় জেলেদের অপহরণের খবর পেয়ে টহল জোরদার করা হয়। গত কয়েক দিন আগে বরগুনার ১৯ জেলেকে মুক্তিপণের দাবিতে নয়ন বাহিনীর প্রধান মনিরুল ইসলাম তাদের অপহরণ করে। এ অবস্থায় সুন্দরবনের ওই এলাকায় র্যাব ও কোস্টগার্ড যৌথ অভিযান শুরু করে।
বৃহস্পতিবার সকালে সুন্দরবনের গহীনে দরজার খালে র্যাব ও কোস্টগার্ডের সদস্যদের অভিযান চলাকালে বনদস্যুরা যৌথ বাহিনীর উপস্থিতি টের পেয়ে গুলি বর্ষণ শুরু করে। এ সময় র্যাব ও কোস্টগার্ডের সদস্যারও পাল্টা গুলি বর্ষণ করে। উভয় পক্ষের মধ্যে প্রায় ৪০ মিনিট গুলি বিনিময়ের পর বনদস্যুরা পালিয়ে যায়। এ সময় র্যাব ও কোস্টগার্ড ওই এলাকায় অভিযান শুরু করলে ৪ বনদস্যুর গুলিবিদ্ধ মরদেহ উদ্ধার করে। এ সময় বনের ভিতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ১৮টি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারকৃত আগ্নেয়াস্ত্রের মধ্যে রয়েছে- ২টি দোনলা বিদেশি বন্দুক, ৪টি একনলা কাটাবন্দুক, ৪টি একনলা বিদেশি বন্দুক, ৪টি এলজি, ২টি এয়ার রাইফেল (বিদেশি), ২টি ওয়ান শুটার গান, ৪১টি বন্দুকের তাজা কার্তুজ, ১৩৫ রাউন্ড ও ২২ বোর রাইফেলের গুলি, ৪০৬টি এয়ার রাইফেলের গুলি, ৭টি দেশীয় তৈরি ধারালো অস্ত্র, ৪ টি গুলি রাখার বান্ডুলিয়ার, ৩টি টর্চলাইট, নগদ এক হাজার দুইশ আশি টাকা ,মোবাইল সেট ৩টি ও সিম কার্ড ৭টি।
বনদস্যু নয়ন বাহিনীর প্রধান মনিরুল ইসলাম ও তার সহযোগীরা দীর্ঘ দিন ধরে সুন্দরবনের জেলেদের অপহরণ করে মুক্তিপণ আদায়সহ দস্যুতা চালিয়ে আসছিল। নিহত মনিরুলের বিরুদ্ধে শরণখোলা থানায় অসংখ্য মামলা রয়েছে।
শরণখোলা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ আলম মিয়া বলেন, মনিরুলের বাড়ি বরগুনার পাথারঘাটা এলাকায়।
এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের চরাপুটির খাল এলাকায় র্যাব-৮ এর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জলদস্যু মশিউর রহমান (৩৫) নিহত হয়েছিল। সে সময় জলস্যুদের ব্যবহৃত ১১টি দেশি বিদেশি আগ্নেয়ান্ত্র ও ৪৫০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়।
এছাড়া গত ২৮ ডিসেম্বর সকালে সুন্দরবনের তাম্বলবুনিয়া এলাকায় র্যাবের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে জলদস্যু কাশেম বাহিনীর প্রধান কাশেম ওরফে আকাশ ও তার সেকেন্ড ইন কমান্ড ফরিদ ম্যাইজা নিহত হয়। ওই সময় র্যাব বনদস্যুদের ব্যবহৃত ১৭টি আগ্নেয়ান্ত্র ও ৪৫০ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করেছিল।
শওকত আলী বাবু/এসএস/আরআইপি