এবার ভাঙচুর করে বহিষ্কার হলেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সেই কাব্য
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) চিকিৎসাকেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় সাময়িক বহিষ্কার হয়েছেন আইন বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য ও তার দুই সহযোগী।
শনিবার (১৫ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের ২০২ নম্বর কক্ষে অনুষ্ঠিত ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির মিটিংয়ে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: মধ্যরাতে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চিকিৎসা কেন্দ্রে ভাঙচুর
ইবির প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, চিকিৎসাকেন্দ্রে ভাঙচুরের ঘটনায় কাব্য ও তার সহযোগীদের সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়া তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। উপাচার্য তদন্ত কমিটি গঠন করবেন।
ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সভায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আব্দুস সালামের সভাপতিত্বে উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাহবুবুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আলমগীর হোসেন ভুঁইয়া, ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসানসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
জানা যায়, গত ১০ জুলাই রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর চালান কাব্য এবং তার দুই সহযোগী একই বিভাগের ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের সালমান আজিজ ও আতিক আরমান।
আরও পড়ুন: গাঁজা না পেয়ে ছিনতাই করলেন দুই ইবি শিক্ষার্থী
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাত ১০টার দিকে বুকে ব্যথার চিকিৎসা নিতে রেজওয়ান সিদ্দিকী কাব্য বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসাকেন্দ্রে আসেন। পরে সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. ওয়াহিদুল হাসান তাকে ব্যথার ইনজেকশন দিলে কাব্য চলে যান। কিন্তু এর ঠিক আধা ঘণ্টা পর আবারও কাব্য ও তার সহযোগীরা চিকিৎসাকেন্দ্রে আসেন এবং কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স চান। পরে চিকিৎসক তাকে কুষ্টিয়া পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিলেও অ্যাম্বুলেন্স দিতে কিছুটা দেরি হয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে চিকিৎসাকেন্দ্রের জরুরি বিভাগে ভাঙচুর করেন কাব্য। পরে তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্সে কুষ্টিয়া পাঠানো হয়।
এদিকে, অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যাওয়ার সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর ড. শফিকুল ইসলাম ও প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুস সালাম সেলিম প্রশাসন ভবনের সামনে তাকে বাধা দেওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় তাদের সঙ্গেও কাব্য অসৌজন্যমূলক আচরণ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা। একপর্যায়ে রাত ১২টার দিকে অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: ইবির সেই অস্ত্রধারী শিক্ষার্থী বহিষ্কার
এর আগে গত বছরের ১৮ জুলাই রাতে কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ মহাসড়কে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটান এই কাব্য। ড্রাইভারকে ছুরি দেখিয়ে ১০ হাজার টাকা দাবি করেন তিনি। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ড্রাইভার ও তার সহকারীকে মারধর করে মানিব্যাগ থেকে পাঁচ হাজার টাকা নিয়ে নেন তারা।
এই ঘটনার প্রতিবেদন প্রকাশিত হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেস কর্নারের সামনে দেশীয় অস্ত্রসহ মহড়া দেন কাব্য। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাময়িক বহিষ্কার হন তিনি। তবে পরে অবশ্য তার বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
রুমি নোমান/এমআরআর/জেআইএম