স্কুল মাঠে হাট : শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত

মাঠ দখল করে হাট বসায় জামালপুরের সরিষাবাড়ী পৌর এলাকার বাউসী বাঙ্গালী স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। দখলদারদের হাত থেকে স্কুল মাঠ রক্ষার উদ্যোগ নেয়ায় উল্টো প্রতিষ্ঠান প্রধানকেই প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে প্রতিষ্ঠান ছাড়া করেছে প্রভাবশালী ইজারাদার ও তার সহযোগী আ.লীগ নেতারা।

সরজমিনে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী পৌর এলাকায় ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাউসি বাঙ্গালী হাইস্কুল। পরবর্তীতে ২০১২ সালে এটি স্কুল অ্যান্ড কলেজে উন্নীত করা হয়। এই স্কুলের ক্যাম্পাসে একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ও রয়েছে। সব মিলিয়ে এখানে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় ১৭০০।  

এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির বাউন্ডারির দেয়ালের ভেতর প্রতি সপ্তাহে দু’দিন রোব ও বুধবার বাউসী হাট বসে। এই দু’দিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত হাটুরে মানুষের তুমুল কোলাহলে শিক্ষার্থীদের পাঠে মনোযোগ বিঘ্নিত হয়। পাঠদানের অনুকূল পরিবেশ না থাকায় শিক্ষকরাও অসহায় হয়ে পড়েন। হাটের ভিড়ে গ্রামের ছাত্রীরা এ দু’দিন স্কুল-কলেজে আসতে-যেতে বিব্রতকর অবস্থায় পড়ে। চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশু শিক্ষার্থীরা।



এ অবস্থায় স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম শিক্ষার সুষ্ঠু পরবেশ ফিরিয়ে আনতে হাটের ইজারাদার বাবু তালুকদারকে হাট স্থানান্তরের নোটিশ দেয় চলতি বছরের ৪ এপ্রিল। কিন্তু ইজারাদার নোটিশ গ্রহণ না করলে অধ্যক্ষ বিষয়টি শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে জানান।

মন্ত্রণালয় বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে গত ২৫ এপ্রিল অবিলম্বে স্কুলের মাঠ থেকে হাট সরিয়ে নিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জামালপুরের জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেন। মন্ত্রণালয়ের এই নির্দেশ জারির খবর পেয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে হাটের ইজারাদার।

অধ্যক্ষ শফিকুল ইসলাম জানান, ইজাদারাদার প্রভাবশালী আ.লীগ নেতা বাবু তালুকদারের নেতৃত্বে গত ২ মে রামদা, চাইনিজ কুড়ালসহ দেশীয় অস্ত্রসহ একদল লোক তার অফিস কক্ষে চড়াও হয়ে জোরপূর্বক নন জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পের মধ্যে একটি অঙ্গীকার নামায় স্বাক্ষর নিয়ে কলেজ থেকে বের করে দেয়। এ ঘটনায় অধ্যক্ষ বাদী হয়ে বাবু তালুকদারসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে জামালপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন।



অধ্যক্ষ জানিয়েছেন, এরপর থেকে ইজারাদারের প্রাণনাশের হুমকির মুখে তিনি আর কলেজে যেতে পারছেন না।

এ ব্যাপারে ইজারাদার বাবু তালুকদারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, হাটটি দীর্ঘদিন থেকেই বসছে। এটা নতুন কিছু না। তবে তিনি অধ্যক্ষকে হুমকির বিষয় অস্বীকার করেন।

জামালপুরের জেলা প্রশাসক মো. শাহাবুদ্দিন খান বলেছেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে কথা বলে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে।

শুভ্র মেহেদী/এসএস/এমএস