যশোরে ৬২ রাইস মিলের লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু

যশোরে সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের চুক্তি না করায় ৬২টি রাইস মিলের লাইসেন্স বাতিলের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আমন মৌসুমে চাল সরবরাহের চুক্তি না করায় এরইমধ্যে এসব মিলের মালিকদেরকে শোকজ করা হয়েছে। কেন চুক্তি করেনি তার সন্তোষজনক জবাব দিতে ব্যর্থ হলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে বলে জানিয়েছেন জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সেফাউর রহমান।
এছাড়া চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ না করায় অনেক মিল মালিকের জামানতও কর্তন করা হয়েছে।
যশোর জেলা খাদ্য বিভাগ সূত্র জানিয়েছে, গেল আমন মৌসুমে যশোর জেলায় সরকারি খাদ্যগুদামে চাল সরবরাহের জন্য ১৬৩টির মধ্যে ১০১টি রাইস মিল চুক্তি করেছিল। কিন্তু বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও বাকি ৬২টি মিল চুক্তি করেনি। লাইসেন্সপ্রাপ্ত মিলগুলোর জন্য চুক্তি বাধ্যতামূলক হলেও এসব মিলমালিক চুক্তি না করায় তাদেরকে শোকজ করা হয়েছে। একইসঙ্গে কেন তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে না, তার জবাব দিতে বলা হয়েছে। শোকজের জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হবে। বাতিলের প্রক্রিয়ায় থাকা ৬২টি রাইস মিলের মধ্যে ১০টি অটো রাইস মিল ও ৫২টি হাস্কিং রাইস মিল রয়েছে। এছাড়া চুক্তি অনুযায়ী চাল সরবরাহ না করায় অনেক মিলারের জামানত কর্তন করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র আরও জানিয়েছে, গেল আমন মৌসুমে যশোর জেলায় ১৪ হাজার ২৪৭ টন সিদ্ধ চাল ও ৮০১ টন আতপ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে মিল মালিকদের অসহযোগিতার কারণে মাত্র ৭ হাজার ৩৭০ টন চাল সংগ্রহ সম্ভব হয়েছে। এর ফলে আমন মৌসুমের চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি।
এদিকে চুক্তিবদ্ধ কয়েকজন মিল মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সরকার ৪৭ টাকা কেজি দরে চাল কিনছে, অথচ বাজারে চালের দাম অনেক বেশি। এজন্য তারা বারবার চালের সরকারি সংগ্রহমূল্য বাড়ানোর দাবি জানিয়েছিলেন। কিন্তু সরকার সে দাবি আমলে নেয়নি। ফলে নির্ধারিত মূল্যে চাল সরবরাহ করলে তাদের পুঁজির ক্ষতি হচ্ছিলো।
জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক সেফাউর রহমান জানান, চাল সরবরাহের চুক্তি না করায় ৬২টি মিলের লাইসেন্স বাতিলের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মিল মালিকদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হলে তাদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে ‘অত্যাবশ্যকীয় খাদ্যশস্য সংগ্রহ, ব্যবস্থাপনা ও নিয়ন্ত্রণ আদেশ, ২০২২’এর ৭ ও ৮ নম্বর বিধান অনুযায়ী এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
মিলন রহমান/এমএন/এমএস