খাল নেই তবুও সেতু, ‘অযথা খরচ’ আড়াই কোটি টাকা

উপজেলা প্রতিনিধি উপজেলা প্রতিনিধি সিদ্ধিরগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ)
প্রকাশিত: ০৬:২৯ পিএম, ০২ জুন ২০২৫
জায়গাটিতে এখন খালের অস্তিত্ব নেই। তবুও নির্মাণ করা হচ্ছে সেতু/ছবি-জাগো নিউজ

একসময় খাল থাকলেও এখন তার অস্তিত্ব নেই। বেদখল হয়ে গেছে। বালু দিয়ে ভরাট করায় জায়গাটি এখন প্রায় সমতল। অথচ সেই জায়গায় নির্মাণ করা হচ্ছে সেতু। এতে ব্যয় হচ্ছে আড়াই কোটিরও বেশি টাকা। এটাকে ‘অপচয়’ বলছেন স্থানীয়রা।

নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) উদ্যোগে দুটি সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। এরইমধ্যে একটির কাজ সম্পূর্ণ হয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়েছে। উপজেলা পৌর এলাকায় অবস্থিত বাংলাদেশ লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশন (জাদুঘর) সংলগ্ন মিউজিয়াম সড়কের ওপর ও বৈদ্যারবাজার ইউনিয়নের লিংক সড়কের সাহাপুর এলাকায় দুই কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু দুটি নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

সম্প্রতি সরেজমিনে দেখা গেছে, যে খাল দুটির ওপর সেতু নির্মাণের কাজ চলছে, তার পানি শুকিয়ে ভরাট হয়ে আছে। অথচ শুধু মাটি ও বালু ফেলেই জনগণের যাতায়াতের সুবিধার্থে সংযোগ সড়ক করা সম্ভব ছিল এখানে।

খাল নেই তবুও সেতু, ‘অযথা খরচ’ আড়াই কোটি টাকা

সড়ক ও জনপথ বিভাগের তথ্যমতে, সেতু দুটি নির্মাণের জন্য দরপত্র আহ্বান করে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগ। কাজটি করার দায়িত্ব পায় হাসমত অ্যান্ড ব্রাদার্স নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। বৈদ্যারবাজার লিংক সড়কের ওপর এক কোটি ৭৭ লাখ এবং জাদুঘরের মিউজিয়াম অংশে ৯৭ লাখ টাকা ব্যয়ে সেতু দুটি নির্মাণের কার্যাদেশ দেওয়া হয়। এরপরই নির্মাণকাজ শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি। এরইমধ্যে লোক ও কারুশিল্প ফাউন্ডেশনের সামনের মিউজিয়াম এলাকায় সেতু নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। বর্তমানে বৈদ্যারবাজারের সাহাপুর এলাকায় সেতুটির নির্মাণকাজ চলছে।

জাদুঘর এলাকার বাসিন্দা রহিম মিয়া। তিনি জাগো নিউজকে বলেন, ‌‘সাহাপুর ও দিঘিরপাড় এলাকায় একসময় খাল থাকলেও এখান তা বেদখল হয়ে আছে। বর্তমানে খালের কোনো অস্তিত্ব নেই। ফলে যেখানে খালই নেই, সেখানে সরকারের কোটি টাকা খরচ করা অযৌক্তিক। মাটি কিংবা বালু ফেলে সড়ক নির্মাণ করেও জনসাধারণের চলার সুবিধা করা যেতো।’

খাল নেই তবুও সেতু, ‘অযথা খরচ’ আড়াই কোটি টাকা

সাহাপুর গ্রামের শাহপরান বলেন, ‘সাহাপুর এলাকায় যেখানে সেতু নির্মাণ হচ্ছে, সেখানে সেতুর দরকার নেই। দুপাশ বালু দিয়ে ভরাট করে খাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। খালটি উদ্ধার করে সেতু করলে এলাকাবাসীর উপকার হতো।’

এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রহিম বলেন, উপজেলার মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে সেতু দুটি নির্মাণ করা হচ্ছে। এখানে খাল থাকার বিষয়টি বিবেচনা করা হয়েছে।

মো.আকাশ/এসআর/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।