মামলায় আসামি করায় ‌‘হৃদরোগে’ মৃত্যু, মরদেহ নিয়ে বিক্ষোভ

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি নীলফামারী
প্রকাশিত: ০৪:৪৪ পিএম, ১৫ জুন ২০২৫

নীলফামারীর সৈয়দপুরে মামলায় আসামি করায় হৃদরোগে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। এ ঘটনায় মরদেহ সামনে রেখে সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ করেছেন মৃতের পরিবার ও স্থানীয়রা।

শনিবার (১৪ জুন) বিকেলে উপজেলার বাঙালীপুর ইউনিয়নের আমজাদের মোড়ে এ কর্মসূচি পালন করা হয়।

মারা যাওয়া ব্যক্তির নাম মোসলেম সরদার (৬০)। তার পরিবারের অভিযোগ, জমি নিয়ে বিরোধে প্রতিপক্ষের বসতবাড়িতে নিজেরাই আগুন লাগিয়ে মোসলেম সরদারের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছেন। এ কারণে মানসিকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। এর বিচার দাবি করেন তারা।

অন্যদিকে মামলার বাদীর আবদুল আজিজ জোতদারের ভাষ্য, মোসলেম সরদারের স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে। এটিকে ‘হত্যাকাণ্ড’ বলে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। উল্টো বসতঘর পুড়ে সর্বস্ব হারিয়ে তারা এখন নিঃস্ব।

সংবাদ সম্মেলন ও বিক্ষোভ কর্মসূচিতে বক্তব্য দেন সৈয়দপুর জেলা বিএনপির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক শাহিদুল হক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা আবদুল্লাহ আল মামুন, ওয়ার্ড বিএনপির সহসভাপতি আলমগীর হোসেন, নিহত ব্যক্তির ছোট ভাই তসলিম সরদার, ভাতিজা বাবলু সরদার, নাতি মেহেদী হাসান, গৃহবধূ মৌসুমী ও স্থানীয় জহুরুল শেখ।

বক্তারা বলেন, দীর্ঘদিন ধরে এলাকার মোসলেম সরদারের পরিবার ও বাছান জোতদার পরিবারের মধ্যে জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। গত ১৪ ও ১৫ মে এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি, জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতারা বিষয়টি নিয়ে মীমাংসায় বসেন। উভয় পক্ষের কাগজপত্র দেখে একটা সমাধানে আসেন তারা। কিন্তু ১৮ মে মৃত বাছান জোতদারের ছেলে আবদুল আজিজ ও তার ভাইয়ের বসতবাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় আবদুল আজিজ বাদী হয়ে মোসলেম সরদারসহ তার পরিবারের ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতপরিচয় আরও সাতজনকে আসামি করে থানায় অভিযোগ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ অভিযোগটি তদন্ত করে মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। এতে মোসলেম সরদার মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। এ অবস্থায় তিনি তিনদিন আগে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন এবং শনিবার সকালে মারা যান।

মৃতের ছোট ভাই তসলিম সরদারের দাবি, তার ভাইয়ের আগে কোনো রোগ ছিল না। মিথ্যা মামলায় আসামি করায় তিনি খুবই কষ্ট পেয়েছেন এবং দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। সে কারণে হৃদরোগে তার মৃত্যু হয়েছে।

মামলার বাদী আব্দুল আজিজ জোতদার বলেন, মামলা সত্য না মিথ্যা তা আদালতে প্রমাণ হবে। একটি স্বাভাবিক মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলা হচ্ছে। অথচ তাদের লাগানো অগ্নিকাণ্ডে আমাদের পরিবার এখন নিঃস্ব।

এ বিষয়ে সৈয়দপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফইম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তিনি শুনেছেন। তবে এ ঘটনায় মৃতের পরিবারের পক্ষে কেউ লিখিত অভিযোগ করেনি। অভিযোগ করলে আইনগত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এসআর/এএসএম

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।