ঢল-বৃষ্টিতে বিপৎসীমায় তিস্তার পানি, বন্যার শঙ্কা

জেলা প্রতিনিধি
জেলা প্রতিনিধি জেলা প্রতিনিধি লালমনিরহাট
প্রকাশিত: ১১:০৯ এএম, ০৩ আগস্ট ২০২৫

উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিতে তিস্তা নদীর পানি আবারও বৃদ্ধি পেয়েছে। রোববার (৩ আগস্ট) সকালে তিস্তার পানি বিপৎসীমার বরাবর প্রবাহিত হয়েছে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড। এতে করে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী এলাকায় নতুন করে বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। খুলে দেওয়া আছে তিস্তা ব্যারেজের ৪৪টি জল কপাট।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, রোববার সকাল ৯টায় হাতীবান্ধার ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি রেকর্ড করা হয় ৫২.১৫ মিটার, যা বিপৎসীমার সমান। অপরদিকে, কাউনিয়া পয়েন্টে পানির উচ্চতা ছিল ২৮.৬০ মিটার (বিপৎসীমা ২৯.৩০ মিটার), যা বিপৎসীমার ৭০ সেন্টিমিটার নিচে। ধরলা নদীর শিমুলবাড়ি পয়েন্টে পানি ছিল ২৮.৯০ মিটার, বিপৎসীমার চেয়ে ১.৯৭ মিটার নিচে।

সূত্র মতে, শনিবার (২ আগস্ট) সন্ধ্যা ৬টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি ছিল বিপৎসীমার ২৩ সেন্টিমিটার নিচে। ১৮ ঘণ্টার ব্যবধানে সেখানে পানি উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

ঢল-বৃষ্টিতে বিপৎসীমায় তিস্তার পানি, বন্যার শঙ্কা

তিস্তার পানি বৃদ্ধির ফলে লালমনিরহাট জেলার পাটগ্রাম, হাতীবান্ধা, কালীগঞ্জ, আদিতমারী ও সদর উপজেলার বেশ কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি ঢুকে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে পাটগ্রামের দহগ্রাম, গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজান, সিঙ্গামারী, সিন্দুর্না, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জের ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, আদিতমারীর মহিষখোচা, গোবর্ধন, কালমাটি, বাহাদুরপাড়া, পলাশী এবং সদর উপজেলার ফলিমারী, খুনিয়াগাছ, কুলাঘাট, মোগলহাট, রাজপুর, বড়বাড়ী ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের নিচু এলাকা ঝুঁকিতে রয়েছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের পাকারমাতা গ্রামের বাসিন্দা সাইফুল ইসলাম বলেন, হঠাৎ করেই সকাল থেকে পানি ঢুকতে শুরু করেছে। সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয় না। কয়েকদিন আগে পানি ঢুকে চলে গিয়েছিল, আবার শুরু হলো। সেই সঙ্গে টানা বৃষ্টি পরিস্থিতিকে আরও খারাপ করে তুলছে।

আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের গোবর্ধন গ্রামের বাসিন্দা খাদিজা বেগম বলেন, দুইদিন আগে পানি নেমে গিয়েছিল। আবার আজ থেকে পানি বাড়ছে। এমন চলতে থাকলে আমাদের বাঁচা কঠিন হয়ে যাবে। সরকার যদি দ্রুত তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে, তবে হয়ত আমাদের এই দুর্ভোগ থেকে মুক্তি মিলবে।

এ বিষয়ে লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সুনীল কুমার রায় বলেন, দুপুর ১২টার দিকে পানি আরও কিছুটা বাড়তে পারে এবং সন্ধ্যার পর তা কমতে শুরু করতে পারে। ইতোমধ্যে কিছু নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে। আমরা অবস্থা পর্যবেক্ষণ করছি। সন্ধ্যার দিকে পানি কতটুকু রাড়বে এবং কমবে তা এখনই নির্দিষ্ট করে বলা সম্ভব নয়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পক্ষ থেকে নদীতীরবর্তী এলাকার মানুষদের সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

মহসীন ইসলাম শাওন/এমএন/এমএস

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, ধর্ম, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।