সাতক্ষীরায় শামুক-ঝিনুক ভর্তি নৌকা জব্দ
সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে শামুক ও ঝিনুক ভর্তি নৌকা জব্দ করেছে পুলিশ। শনিবার (২ আগস্ট) দুপুরে ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির সদস্যরা নৌকাটি জব্দ করে।
স্থানীয়রা জানায়, একটি সংঘবদ্ধ চক্র দীর্ঘদিন ধরে সুন্দরবনের বিভিন্ন নদী ও খাল থেকে অবৈধভাবে শামুক ও ঝিনুক সংগ্রহ করে স্থানীয়ভাবে মজুদ করে। এরপর সীমান্ত পথে এসব জলজ প্রাণী ভারতে পাচার করা হয়। পাচারের উদ্দেশ্যে শামুক-ঝিনুক সংগ্রহের এ ধারা শুধু বনসম্পদ নয়, দেশের সামগ্রিক পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের জন্যও গুরুতর হুমকির সৃষ্টি করছে।
অভিযান প্রসঙ্গে মুন্সীগঞ্জ ফরেস্ট টহল ফাঁড়ির ইনচার্জ বলেন, ‘বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখছি। শামুক ও ঝিনুক সংগ্রহ ও পাচার সরাসরি নদী সংরক্ষণ আইন ও পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের লঙ্ঘন। অভিযুক্তদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
তিনি আরও জানান, এ ধরণের অপরাধ দমন করতে স্থানীয়দের সহযোগিতাও প্রয়োজন। পাচার চক্রকে চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য বন বিভাগ কাজ করছে।
পরিবেশবীদদের মতে, নদী ও খালের ইকোসিস্টেম রক্ষায় শামুক-ঝিনুকের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এরা পানির গুণগত মান বজায় রাখতে সহায়ক এবং নদীর তলদেশের ভারসাম্য রক্ষায় ভূমিকা রাখে। কিন্তু ব্যাপক হারে এদের নিধন নদী জীববৈচিত্র্যের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলতে পারে।
দেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী নদী, খাল ও প্রাকৃতিক জলাশয় থেকে শামুক ও ঝিনুক কুড়িয়ে নেওয়া বা পরিবহন করা নিষিদ্ধ। এসব প্রাণী পরিবেশ সংরক্ষণ আইন ১৯৯৫ (সংশোধিত ২০১০) ও জলজ সম্পদ সংরক্ষণ আইন ১৯৫০ এর আওতায় দণ্ডনীয় অপরাধ হিসেবে বিবেচিত।
স্থানীয়রা বন বিভাগের এ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। তবে তারা চান, নিয়মিত নজরদারি এবং সীমান্তবর্তী নদীপথে কঠোর তল্লাশি জোরদার করা হোক।
শ্যামনগর উপজেলার পরিবেশকর্মী গাজী আল ইমরান বলেন, ‘শুধু অভিযান চালিয়ে নৌকা জব্দ করলেই হবে না। এ চক্রের মূল হোতারা কোথা থেকে পরিচালনা করছে তা খুঁজে বের করতে হবে। সুন্দরবন ও উপকূল রক্ষা করতে হলে আইন প্রয়োগের পাশাপাশি জনসচেতনতাও বাড়াতে হবে।’
আহসানুর রহমান রাজীব/আরএইচ/জেআইএম