কুড়িগ্রামে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ
কুড়িগ্রামের রাজারহাটে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির (ওএমএস) ডিলার নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি দিয়েছে বঞ্চিতরা। রোববার (৩ আগস্ট) দুপুরে উপজেলা পরিষদ গেটে মানববন্ধন করেন ভুক্তভোগী আবেদনকারীরা। মানববন্ধন শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) মাধ্যমে জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেন তারা।
এ সময় বঞ্চিত আবেদনকারীদের দাবি, অবৈধ লেনদেন ও অনিয়মের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করে যোগ্য প্রার্থীদের বাদ দিয়ে পছন্দের লোকদের ডিলার হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে পুনরায় লটারি অনুষ্ঠানের দাবি করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, নির্দিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের বাদ দিয়ে বহিরাগতদের ডিলার হিসেবে নির্বাচিত করা হয়েছে। আবেদনের পর একটি তদন্ত কমিটি গঠন হলেও তা কার্যকরভাবে কাজ করেনি। উল্টো সেই কমিটি অনিয়মের মাধ্যমে যাচাই-বাছাই করেছে। ফলে অনেক যোগ্য প্রার্থী বঞ্চিত হয়েছেন।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন, আবদুল মোত্তালেব, আজিজুল ইসলাম, ফখরুল ইসলাম, রাজু ইসলাম, আহসান, সহিদুল ইসলাম, রোকেয়া বেগম, দৌলত হোসেন, আবদুল লতিফ, সেকেন্দার আলী লিমন, হান্নান মিয়া ও আবদুল লতিফ বাবলু মিয়া।
ভুক্তভোগী আবেদনকারী মাইদুল ইসলাম বলেন, উপজেলার উমরমজিদ ইউনিয়নে চারজন ডিলার পদের জন্য আবেদন করেছিলাম। পরে উপজেলা থেকে তদন্ত কমিটি এসে সরেজমিনে তদন্ত করে উমরমজিদ চার নম্বর ওয়ার্ড সদস্য নজরুল ইসলামের স্ত্রী মানসুরা বেগমের নাম বাদ দেয়। কিন্তু যখন ডিলার নিয়োগ শেষ হলো তখন দেখলাম কোনো এক অদৃশ্য কারণে মানসুরা বেগম নিয়োগ পেয়েছেন। অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে এ নিয়োগ হয়েছে। মানসুরা বর্তমান ইউনিয়ন সদস্যের স্ত্রী। তিনি কীভাবে যাচাই বাছাই এ বাতিল হওয়ার পরেও লটারিতে সুযোগ পেলেন।
বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের ডাঙরারহাট এলাকার ডিলার আবেদনকারী আজিজুল ইসলাম বলেন, ডিলারের জন্য ১০ আবেদন করেছিলাম। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে ছয়জন টিকেছিল। এরমধ্যে নুর আলম নামে আবেদনকারীর নাম ছিল না। কিন্তু চূড়ান্ত নিয়োগের দিন নুর আলমের নাম ওঠে। টাকা পয়সার লেনদেনের মাধ্যমে নুর আলমকে ডিলার নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। সেনাবাহিনী দিয়ে এ ডিলার নিয়োগের পুনরায় তদন্ত করলে তার নাম বাদ পড়বে।
উপজেলা পরিসংখ্যান কর্মকর্তা ও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ডিলার নিয়োগের তদন্ত কমিটি সদস্য এটিএম রিয়াসাদ বলেন, ডিলার নিয়োগে কোনো স্বজনপ্রীতি ও অর্থের লেনদেন হয়নি। বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের নুর আলম ও উমর মজিদ ইউনিয়নের মানসুরা বেগমের কাগজপত্র প্রাথমিক যাচাই বাছাই এ ত্রুটি দেখা দিলেও পরবর্তী সময়ে তারা সকল কাগজপত্র দেখাতে সক্ষম হয়।
কুড়িগ্রাম জেলা প্রসাসক নুসরাত সুলতানা বলেন, ডিলার নিয়োগের অভিযোগ এখনো পাইনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রোকনুজ্জামান মানু/আরএইচ/জিকেএস